Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বাড়তি ছুটির বিরুদ্ধে সরব শিক্ষক সংগঠন

ছুটি ও বন্‌ধের দাবিতে বহু মিছিল দেখেছে নবাবের জেলা। এ বার সরকারি ঘোষিত ‘বাড়তি’ ছুটি বাতিলের দাবিতে আজ, সোমবার বিকেলে পথে নামছে নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতি। 

বিমান হাজরা
রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৯ ০০:০০
Share: Save:

ছুটি ও বন্‌ধের দাবিতে বহু মিছিল দেখেছে নবাবের জেলা। এ বার সরকারি ঘোষিত ‘বাড়তি’ ছুটি বাতিলের দাবিতে আজ, সোমবার বিকেলে পথে নামছে নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতি।

শাসক দল তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠন পথে না নামলেও তারাও রাজ্যের সরকারি ও আধা সরকারি স্কুলগুলিতে দীর্ঘ দু’মাসের ছুটি নিয়ে প্রশ্ন তুলে গ্রীষ্মাবকাশের পরে স্কুল খোলার দাবি জানিয়েছে ।

জেলার এবিটিএ’র সম্পাদক দুলাল দত্তের অভিযোগ, যে সরকার রাজ্যে এক দিন বন্‌ধ হলেও তাকে রুখতে চেষ্টার কসুর করে না, তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে এ ভাবে বাড়তি ছুটি ঘোষণা করে কোন আক্কেলে? কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলে তাতে নিরাপত্তার কারণে স্কুল বন্ধ রাখা যেতেই পারে। কিন্তু ২২ মে গ্রীষ্মাবকাশের পরে যে তাপপ্রবাহ বাড়বে তা ধারণা করে নিয়ে নির্দিষ্ট ছুটিকে ৩০ জুন পর্যন্ত বর্ধিত করা হল কিসের ভিত্তিতে? এর ফলে পঠন-পাঠন চরম ভাবে ব্যাহত হবে। তাই সোমবার জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক ও জেলাশাসকের কাছে ঘোষিত বর্ধিত ছুটি প্রত্যাহারের দাবি জানাব।

তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের জেলা সভাপতি শুভজিৎ সিংহ বলেন, “অতীতে এই ধরনের দীর্ঘ ছুটির নজির নেই। তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে আমাদের সংগঠনের মধ্যেও। জুনে সাধারণ ভাবে বর্ষা এসে যায়। কাজেই তখন এমন অসহ্য তাপমাত্রা থাকে না যাতে স্কুল করা যায় না। দরকার হলে সকালে ক্লাস করা যেতেই পারে। অতীতে এমনটাও তো হয়েছে। আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে শিক্ষা দফতরকে জানিয়েছি গ্রীষ্মাবকাশ পর্যন্ত ছুটি জারি রেখে পরবর্তী সমস্ত ছুটি বাতিল করা হোক। তারা তা বিবেচনার আশ্বাসও দিয়েছেন। ”

তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি শেখ ফুরকান বলেন, “এত দিন স্কুল বন্ধ থাকলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র ছাত্রীরা ভীষণ সমস্যায় পড়বে। স্কুল বন্ধ থাকলে বহু ছাত্র ছাত্রী মিড ডে মিল থেকেও বঞ্চিত হবে। সমস্ত বিষয় নিয়েই শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে সাংগঠনিক পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। গ্রীষ্মাবকাশের পর তাপপ্রবাহ কী অবস্থায় থাকে তা দেখে ফের ক্লাস শুরুর বিজ্ঞপ্তি জারি করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। আশা করছি বাড়তি ছুটি কমে যাবে।”

সাগরদিঘি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক তামিজুদ্দিন মল্লিক বলছেন, “সরকারি সব স্কুল বন্ধ। অথচ বেসরকারি সব স্কুল খোলা। তাদের কি তাপপ্রবাহ ভোগ করতে হচ্ছে না? এতে সরকারি স্কুলগুলির প্রতি আস্থা হারাবেন অভিভাবকেরা। তারা বেসরকারি স্কুলের দিকে ঝুঁকবেন। এই ছুটি ঘোষণায় অভিভাবকেরাও বিরক্ত। আমাদের স্কুলে যেখানে সিলেবাস শেষ হয় না বলে বাড়তি ক্লাস নিতে হয়, সেখানে এই অকারণ ছুটি ক্ষতি করবে ছাত্রদের। এই দীর্ঘ ছুটির নির্দেশিকা তাই শিক্ষার স্বার্থেই প্রত্যাহার করা উচিত। ”

সুতির এক প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক তথা তৃণমূল নেতা ওবাইদুর রহমান বলছেন, “বিড়ি শ্রমিক অধ্যুষিত এলাকা সুতি। একেই শ্রমিকদের ঘরের ছেলে মেয়েদের স্কুলমুখী করাতে হিমশিম খেতে হয়। তার উপরে এই বাড়তি ছুটি গ্রামের স্কুলগুলিকে আরও অচল করে দেবে। এ নিয়ে গ্রামে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হচ্ছে। তাছাড়া সুতির বিড়ি শ্রমিক পরিবারের ছেলে মেয়েরা অনেকেই মিডডে মিলের উপর নির্ভর করে।সমস্যায় পড়বে তারা।” সুতির গোঠা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আশিস তেওয়ারি বলছেন, “অষ্টম শ্রেণি থেকে ছাত্রের সংখ্যা বিভিন্ন ক্লাসে কমতে শুরু করে। স্কুল এ ভাবে ছুটি থাকলে ছাত্র সংখ্যা আরও কমতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Summer Vacation Teacher's Association Education
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE