E-Paper

নির্দেশ ছাড়াই বিদ্যালয় বন্ধে বিতর্ক

এ দিন ক্রীড়া প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে সরকারি নির্দেশ ছাড়াই রানাঘাট-১ চক্রের অধিকাংশ বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়। ফলে বেশিরভাগ পড়ুয়াদের এদিন মিড-ডে মিল থেকে বঞ্চিত হতে হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:৩৫
জেলা বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উপলক্ষে বন্ধ রানাঘাট-১চক্রের একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়। বুধবার।

জেলা বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উপলক্ষে বন্ধ রানাঘাট-১চক্রের একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়। বুধবার। ছবি: সুদেব দাস।

বুধবার প্রাথমিকের জেলা বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে 'অঘোষিত ছুটি' পালিত হল রানাঘাট-১ চক্রের অধীনে থাকা একাধিক স্কুলে। ক্রীড়া প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে পিছু ছাড়ল না বিতর্ক। বিচারকের নিরপেক্ষতা নিয়েও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন শিক্ষকদের একাংশ।

গত মঙ্গলবার রানাঘাট-২ বিডিওর নাম করে শিক্ষকদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে মিথ্যা বার্তা দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এ দিন ক্রীড়া প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে সরকারি নির্দেশ ছাড়াই রানাঘাট-১ চক্রের অধিকাংশ বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়। ফলে বেশিরভাগ পড়ুয়াদের এদিন মিড-ডে মিল থেকে বঞ্চিত হতে হয়েছে। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতরের নির্দেশিকা ছাড়াই একযোগে কেন স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত? এই প্রশ্ন বিভিন্ন মহলে উঠতে শুরু করেছে।

"জেলা বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার দিন স্কুলের মিড-ডে মিল বন্ধ রাখতে হবে এবং সেই খরচ অন্যান্য খাতে দেখাতে হবে।" রানাঘাট-২ ব্লকের বিডিও নাম করে শিবু দাস নামের এক শিক্ষকের এই বার্তা মঙ্গলবার শিক্ষকদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ঘুরেছে। বিষয়টি সামনে আসতেই বিডিও ওই শিক্ষককে ডেকে ওই দিনই শো-কজ করেন। পরে অবশ্য 'ভুল বার্তা দেওয়া হয়েছে' বলে ওই গ্রুপে ক্ষমা চেয়ে পাল্টা বার্তা দিয়েছিলেন শিবু। ঘটনাচক্রে বুধবার সকাল থেকে রানাঘাট-১ চক্রের অধীনে থাকা একাধিক বিদ্যালয়ে তালা ঝুলতে দেখা গিয়েছে। যে সকল বিদ্যালয় বন্ধ ছিল, সেখানকার পড়ুয়ারা যে ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে, তাও নয়। আঁইশমালি অঞ্চলের ১৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৩টি এদিন বন্ধ ছিল। ধানতলা, কুটিরপাড়া, মাটিকুমরা, নিউ সিআরই, কীর্তি নগর ইত্যাদি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়। কেন বন্ধ বিদ্যালয়? প্রতিযোগিতার আয়োজক কমিটির ক্রীড়া সম্পাদক সঞ্জীব রায়ে যুক্তি, "যেহেতু রানাঘাট-১ চক্রকে প্রতিযোগিতার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেই দায়িত্ব সামলাতে শিক্ষক-শিক্ষিকারা মাঠে ছিলেন। তাই স্কুল বন্ধ রাখা হয়।" যদিও জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক সুকুমার পসারি বলেন, "নির্দেশিকা ছাড়া এ ভাবে স্কুল বন্ধ রাখা যায় না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।" শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, এমন অনেক পিছিয়ে পড়া পরিবারের ছেলেমেয়েরা রয়েছে, যারা মিড ডে মিলের জন্যই বিদ্যালয়ে আসে। তারা এদিন মিড- ডে মিল থেকে বঞ্চিত হয়েছে। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছরের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার জন্য রানাঘাট-১ চক্রকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। প্রতিযোগিতা নিয়ে সরকারি ভাবে পাঁচ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হওয়ার পরেও, কখনও শিক্ষকদের কাছ থেকে চাঁদা চাওয়া, কখনও আবার মিড ডে মিলের টাকা অন্য খাতে দেখাতে বলার বার্তা দেওয়ার মতো বিতর্কের সঙ্গে প্রতিযোগিতার দিন নতুন করে যুক্ত হয়েছে 'বিচারক বিতর্ক'।

কৃষ্ণনগর-১ চক্রের চক দিগনগর জিএসএফপি বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিধানচন্দ্র বিশ্বাস বলেন, "প্রতিযোগিতায় নিরপেক্ষ বিচার হয়নি। রানাঘাট-১ চক্র যেহেতু আয়োজক কমিটিতে রয়েছে। তাই অন্য চক্রের প্রতিযোগীদের সঙ্গে অবিচার করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ জানাতে চাইলেও, ওই কমিটি অভিযোগ নিতে
অস্বীকার করেছে।"

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Ranaghat

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy