Advertisement
E-Paper

বন্ধ মিড-ডে মিল, তালাবন্দি শিক্ষকেরা

প্রধান শিক্ষক ছুটিতে। কী ভাবে স্কুল চলবে, জানেন না অন্য শিক্ষকরা। ফলে মাঝে মধ্যেই ধাক্কা খাচ্ছে মিড ডে মিল। তার ফলে ক্ষোভ জমছিল ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাববক—এমনকী মিড ডে মিলের রাঁধুনীরাও। ফল যা হওয়ার তাই হল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৬ ০৭:৩৬
তখনও ঘরবন্দি শিক্ষকেরা। —নিজস্ব চিত্র।

তখনও ঘরবন্দি শিক্ষকেরা। —নিজস্ব চিত্র।

প্রধান শিক্ষক ছুটিতে। কী ভাবে স্কুল চলবে, জানেন না অন্য শিক্ষকরা। ফলে মাঝে মধ্যেই ধাক্কা খাচ্ছে মিড ডে মিল। তার ফলে ক্ষোভ জমছিল ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাববক—এমনকী মিড ডে মিলের রাঁধুনীরাও। ফল যা হওয়ার তাই হল।

বৃহস্পতিবার সকালে বহরমপুরের কোদলা বিজয়কৃষ্ণ আদর্শ বিদ্যামন্দিরের শিক্ষকদের দীর্ঘক্ষণ তালাবন্দি করে রাখলেন মিড ডে মিল রান্নার দায়িত্বে থাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা। শেষে প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্রদের উদ্যোগে দুপুরের দিকে শিক্ষকদের বন্দিদশা ঘোচে।

স্কুলের বর্ষীয়ান শিক্ষক মুক্তিমোহন মণ্ডল জানান, স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুভাষচন্দ্র সিমলান্দি শিক্ষকদের কিছু না জানিয়ে গত ৩০ এপ্রিল থেকে ছুটিতে রয়েছেন। বরাবর প্রধান শিক্ষক ও স্কুলের অস্থায়ী চতুর্থ শ্রেণির কর্মী রবি মণ্ডল দু’জনে মিলে মিড-ডে মিলের বিষয়টি দেখতেন। বাজারের দায়িত্ব রবিবাবুর।

প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতে মিড ডে মিল সংক্রান্ত বিষয়ে প্রতি মাসে যে ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ জমা দেওয়ার কথা, জমা পড়েনি তাও। এমনকী মিড ডে মিলের জন্য যে ‘রিকুইজিশন’ জমা দেওয়ার কথা, দেওয়া হয়নি তাও।

যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই সুভাষচন্দ্র সিমলান্দী বলেন, ‘‘শারীরিক অসুস্থতার কারণে স্কুল যেতে পারছি না। আমার অসুস্থতার কথা জানিয়ে স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি অসীমকুমার মণ্ডলের কাছে আমি ছুটির আবেদনপত্র জমা দিয়ে এসেছি। ছুটিতে থাকাকালীন এ বিষয়ে মন্তব্য করব না।’’

স্কুলের শিক্ষকদের অভিযোগ, তাঁর অনুপস্থিতিতে স্কুলের প্রশাসনিক কাজকর্ম কে দেখভাল করবে, তা ঠিক করে যাননি। এমনকী ফোনেও কারওর সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন না তিনি। দীর্ঘ ছুটি নিতে হলে নিয়ম অনুযায়ী জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শককে জানানো উচিত। কিন্তু তিনি তাও জানাননি। কেন জানাননি, তার কোনও উত্তর মেলেনি। সাত দিন অন্তর বিদ্যালয় পরিচালন সমিতির সভাপতির কাছে একটি করে দরখাস্ত পাঠিয়ে ছুটি বাড়িয়েই চলেছেন।

মুক্তিমোহনবাবু বলেন, ‘‘গত ১৮ জুন মিড-ডে মিল রান্না হয়নি। মিড ডে মিল বন্ধ-সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ২০ জুন জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শককে চিঠি পাঠান শিক্ষকেরা। তার পরেই মাঝে দু’দিন রান্না হলেও বুধবার রান্না বন্ধ ছিল। কারণ রবিবাবু বাজার করেননি। বৃহস্পতিবারও রাধুঁনিরা দেখেন বাজার করা হয়নি। তখনই তাঁরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারপরেই তাঁরা শিক্ষকদের একটি ঘরে ঢুকিয়ে তালা দিয়ে দেন। তাঁদের সঙ্গে বিক্ষোভে সামিল হন পরিচালন সমিতির সভাপতি অসীমকুমার মণ্ডলও। মঙ্গলবার নির্মল বাংলা মিশনের অধীনে রাজ্য গ্রামোন্নয়ন দফতরের প্রতিনিধিরা মিড ডে মিলের বিষয়ে তথ্যচিত্র তুলতে স্কুলে এসেছিলেন। অভিযোগ, ‘শারীরিক অসুস্থতা’ ভুলে গিয়ে তিনি স্কুলে এসেছিলেন। পর দিন থেকে ফের যে কে সেই।

স্কুলের শিক্ষক পীযুষ আচার্য বলেন, ‘‘কারও সঙ্গে কথা না বলেই, স্কুলের স্টাফ রুমে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা লাগিয়ে দেন প্রধান শিক্ষক। তাতে আমাদের আপত্তি ছিল। আমরা অন্য ঘরে বসার সিদ্ধান্ত নিই।’’ শিক্ষকরা জানিয়েছেন, যাতে তাঁরা সিসি ক্যামেরা বসানো ঘরে বসতে বাধ্য হন, সেই জন্য অন্য ঘরটিতে তালা দিয়ে চাবি নিয়ে বাড়ি চলে যান প্রধান শিক্ষক। তার পর থেকেই তিনি টানা অনুপস্থিত।

সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা আধিকারিক তানিয়া পারভিন বলেন, ‘‘গোটা ঘটনা জেনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক পূরবী দে বিশ্বাস এ দিন সন্ধ্যায় স্কুলের শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। আগামী দিন সুষ্ঠু ভাবে স্কুল চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দেন তিনি।

Mid-day meal teachers students
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy