২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর। করিমপুর বিধানসভা উপ নির্বাচনে বিজেপি-র প্রার্থী ছিলেন জয়প্রকাশ। ভোট কেমন হচ্ছে সরেজমিনে দেখতে বেরিয়েছিলেন তিনি। আচমকা হইচই, গন্ডগোল। বেমক্কা একটা লাথির জেরে জয়প্রকাশ ছিটকে পড়লেন কচুবনে।
জয়প্রকাশ মজুমদারের উপর সে দিনের হামলা। —ফাইল চিত্র।
ছিলেন কমল-কাননে। ভোটে দাঁড়িয়েই বেমক্কা ছিটকে পড়লেন কচুবনে। বছর আড়াই বাদে তিনি জানান দিলেন, তৃণই ‘মূল’। অতএব, সেই ‘সূত্র’ ধরেই যেন তৃণমূলে যোগদান। চকিতে এটাই জয়প্রকাশ মজুমদারের রাজনৈতিক ঝটকা।
করিমপুর বিধানভার বাসিন্দাদের একাংশ জানাচ্ছেন, ঝটকা যাই হোক, খটকাটা লেগেছিল আগেই। আবার আর এক দলের মত, কচুবন দর্শনের পরে জয়প্রকাশ মজুমদার যে এত তাড়াতাড়ি রং বদলে ফেলবেন তা বোঝা যায়নি!
মঙ্গলবার দলবদলের পরেই রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে প্রচারের আলোয় চলে এসেছেন জয়প্রকাশ। আবার বুধবার সকাল থেকে দেখা গেল জয়প্রকাশকে খানিকটা পিছনে ফেলে ‘তারকা’ হয়ে উঠেছে সেই কচুবনও।
নদিয়ার ঘিয়াঘাটপাড়ার এক বাসিন্দা তো বলেই ফেললেন, ‘‘এ তো মহা ফ্যাসাদ! সেই কচুও নেই। নেই সেই বনও। তবুও লোকজন এসে জানতে চাইছে, জয়প্রকাশকে ঠিক কোন জায়গায় লাথি মেরে ফেলে দিয়েছিল?’’
স্থানীয় এক যুবক হাসতে হাসতে বলছেন, ‘‘একটা লাথি এবং দলবদলের জেরে কুলশীলহীন কচুবনও যে এমন পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠবে কে জানত!’’
পাশ থেকে খেই ধরলেন এক প্রৌঢ়, ‘‘অবস্থা যা দাঁড়িয়েছে, তাতে এখানে বেশ কয়েকটি খাবারের দোকান বসে গেলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। আর গাইডেরও অভাব হবে না। কারণ সে দিনের প্রত্যক্ষদর্শীর সংখ্যাও নেহাত কম ছিল না।’’
২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর। করিমপুর বিধানসভা উপ নির্বাচনে বিজেপি-র প্রার্থী ছিলেন জয়প্রকাশ। ভোট কেমন হচ্ছে সরেজমিনে দেখতে বেরিয়েছিলেন তিনি। আচমকা হইচই, গন্ডগোল। বেমক্কা একটা লাথির জেরে জয়প্রকাশ ছিটকে পড়লেন কচুবনে।
সেই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছিল তৃণমূলের দিকে। লাথিকাণ্ডের জল গড়িয়েছিল থানা-পুলিশ এমনকি আদালত পর্যন্তও। এর মাঝে কেটে গিয়েছে কয়েকটি বছর। জলঙ্গির বুক দিয়ে জলও গড়িয়েছে ঢের। করিমপুরের জমিতে লকলক করছে ‘ঘাসফুল’। আবার সে দিনের সেই কচুবন এখন বলে গিয়েছে কংক্রিটের জঙ্গলে।
তবে বার্তাটা রটে গেল মঙ্গলবারের বারবেলায়। গেরুয়া শিবিরে নাম মুছে দিয়ে সবুজ সফর শুরু করেছেন জয়প্রকাশ। তাঁর অনুগামীদের যুক্তি, বিজেপি-তে তো দাদা মানসম্মান পাচ্ছিলেন না। সেই কারণেই তিনি তৃণমূলে গেলেন। ঘটনাচক্রে তৃণমূলে নতুন ইনিংস শুরু করার সঙ্গে সঙ্গেই জয়প্রকাশ ‘মান’ এবং ‘পদ’ দুইই পেয়েছেন। এ রাজ্যে তৃণমূলের সহ-সভাপতি তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy