Advertisement
E-Paper

দলেই বিভীষণ, বলছেন অভিমানী তৃণমূল প্রার্থী

নির্বাচন ঘোষণার আগেই নিজের কেন্দ্র সাগরদিঘিতে স্বচ্ছন্দ ছিলেন না তিনি। এলাকায় গিয়ে, কখনও তাঁকে পড়তে হয়েছে দলীয় কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে, কখনও বা সুব্রত আসছেন শুনে সাগরদিঘির রাস্তায় দীর্ঘ মিছিল বের করেছেন তাঁর বিরোধীরা।

বিমান হাজরা

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৬ ০১:৫৭

নির্বাচন ঘোষণার আগেই নিজের কেন্দ্র সাগরদিঘিতে স্বচ্ছন্দ ছিলেন না তিনি। এলাকায় গিয়ে, কখনও তাঁকে পড়তে হয়েছে দলীয় কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে, কখনও বা সুব্রত আসছেন শুনে সাগরদিঘির রাস্তায় দীর্ঘ মিছিল বের করেছেন তাঁর বিরোধীরা।

কংগ্রেসের গড় মুর্শিদাবাদ থেকে গত বিধানসভায় শাসক দলের একমাত্র প্রতিনিধির নির্বাচনে লড়াই তাই নিছকই নিয়মরক্ষার হয়ে দাঁড়িয়েছিল বলে মনে করছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্বই। এ বার সেই তালিকায় জুড়ে গেল আরও এক দলীয় প্রার্থীর নাম। ঘটনাচক্রে সে কেন্দ্রও মুর্শিদাদে এবং সাগরদিঘির একেবারেই লাগোয়া— ফরাক্কা। ফল বেরনোর মুখে, সেখানে দলের আকচাআকচি সামনে এনে ফেলছেন খোদ ফরাক্কার তৃণমূল প্রার্থী মহম্মদ মোস্তাফা।

দলের স্থানীয় নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে সরাসরি ‘দলবিরোধী কাজে’র অভিযোগ তুলে বিষয়টা তিনি মুর্শিদাবাদের দলীয় পর্যবেক্ষক এবং রাজ্য নেতৃত্বকে ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন। তবে বিষন্ন গলায় মোস্তাফা বলছেন, ‘‘তেমন সাড়া তো কেউ দিচ্ছেন না। দলীয় পর্যবেক্ষক শুভেন্দুবাবু জানিয়েছেন, ভোট নিয়ে তিনি খুব ব্যস্ত। অন্যরাও প্রায় একই সুরে দায় এড়াচ্ছেন।’’

মোস্তাফার অভিযোগ, দল ‘বিভীষণে’ ভরে গিয়েছে। দলের যুব সংগঠনের ব্লক সভাপতি আব্দুল কাদের। তাঁকে সরিয়ে বরুণ ঘোষকে নিয়োগ করার জন্যও দলের যুব নেতাদের কাছে সুপারিশ করেছেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘‘ফরাক্কায় তৃণমূল সংগঠনকে বাঁচাতে গেলে সোমেন পান্ডে, সুনীল চৌধুরী, সাহাজাদ হোসেনের মতো নেতাদের দল থেকে সরিয়ে দিতে হবে। এ বারের বিধানসভা নির্বাচনে সরাসরি দলীয় প্রার্থীর বিরোধীতা করে কংগ্রেস ও সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করেছেন।’’

কিন্তু নির্বাচনের আগে সে অভিযোগ করেননি কেন, কেনই বা ভোট পর্ব মিটে যাওয়ার প্রায় তিন সপ্তাহ পরে (২১ এপ্রিল নির্বাচন হয়েছিল ফরাক্কায়) মোস্তাফার এই অভিযোগ?

মোস্তফা বলছেন, ‘‘কাকে বলব, ভোটের আগে অন্তর্ঘাতের সম্ভাবনা নিয়ে যার কাছেই গিয়েছি, শুনতে হয়েছে, আগে নির্বাচনটা মিটুক!’’ তিনি জানান, এ ভাবে চলতে থাকায় ‘মনটাই ভেঙে’ গিয়েছিল তাঁর।

নির্বাচনের আগে প্রচারে বহরমপুরে এসেছিলেন দলের পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী। তিনি সমস্ত দলীয় প্রার্থী ও ব্লক সভাপতিদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। দলবিরোধী নেতাদের কার্যকলাপের ব্যাপারে প্রার্থীদের কাছে লিখিত রিপোর্টও চেয়েছিলেন। দলীয় সূত্রে ‌জানা গিয়েছে, সে কথা তখন খোলসা করেননি মোস্তাফা।

ফরাক্কার সেই সব অভিযুক্ত প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন দলের জেলা সহ-সভাপতি সোমেন পান্ডে। সোমেন বলেন, “আমাকে ফরাক্কায় নির্বাচনের কোনো কমিটিতে রাখাই হয়নি। কোথাও ডাকা হয়নি। ঘরে শুয়ে বসে সময় কাটিয়েছি। এখন হঠাৎ আমি টার্গেট!’’

ফরাক্কায় দলের জয়হিন্দ বাহিনীর জেলা সভাপতি সুনীলবাবুর কথায়, ‘‘ফরাক্কায় আমরা অনাহূত। প্রার্থী নিজের মতো করে ভোট করেছেন। ডাকেননি দলের পুরোনো কোনও নেতা, কর্মীকে। গিয়ে অপমানিত হব কেন, তাই যাইনি।’’ অভিমানী সুনীল-সোমেনের মতো আরও অনেক আদি তৃণমূল রয়েছেন যাঁরা মনে করছেন ‘দলটাকে ডোবাচ্ছে এই নব্য দলে ভেরা সদস্যেরা।’

TMC candidate conspiracy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy