Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
tmc

তৃণমূলে লড়াই, গুলিতে জখম ২

ঘটনার জেরে গ্রাম এখনও উত্তপ্ত।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
তেহট্ট শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:১৩
Share: Save:

গ্রামের জমি বিবাদকে কেন্দ্র করে প্রকট হল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, এবং সেই বিবাদে গুলিতে জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেন দু’জন।

সব মিলিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে পলাশিপাড়া থানার বাগাগড়িয়া গ্রামের ঘটনা অস্বস্তিতে ফেলেছে তৃণমূলকে। যদিও দলের স্থানীয় নেতারা ক্রমাগত দাবি করছেন, এটা নিছকই গ্রাম্য বিবাদ। এর সঙ্গে রাজনীতি বা গোষ্ঠী কোন্দলের কোনও যোগ নেই। পুলিশও বলছে, প্রাথমিক তদন্তে নিছক জমি সংক্রান্ত বিবাদের কথাই উঠে এসেছে। কিন্তু স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের একাংশই এই ঘটনার সঙ্গে দলের অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীবিবাদের যোগ থাকার কথা জানাচ্ছেন।

এ ক্ষেত্রে যে দুই বিবাদমান তৃণমূল নেতার নাম উঠে এসেছে তাঁরা হলেন, পলাশিপাড়ার বিধায়ক তাপস সাহা এবং তৃণমূলের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি তরুণ ঘোষ চৌধুরী। এই দুই নেতার অনুগামীদের মধ্যে সম্প্রতি মতপার্থক্য তীব্র হয়েছে বলে অভিযোগ। এক পক্ষের লোকেরা এ দিন অন্য পক্ষের লোকেদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে দলের অন্দরে বিরোধের কথা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন তাপস সাহা। বলেছেন, ‘‘এটা গ্রাম্য জমি বিবাদ।’’

কিন্তু তরুণ ঘোষ মন্তব্য করেছেন, ‘‘যারা গুলি চালিয়েছে সেই এরশাদ শেখ ও আজমীর হালসানা সমাজবিরোধী। আমাকে সরিয়ে ওদের এলাকার দায়িত্ব দিয়েছিলেন বিধায়ক। আজ ওদের জন্য আমাদের দুই নিরীহ কর্মী গুলিবিদ্ধ হলেন। পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তি দিক।’’

আবার গুলিবিদ্ধ দু’জনের আত্মীয় বিল্লাল মোল্লা বলেন, ‘‘এরশাদ ও আজমীর অল্প কিছু দিন হল অন্য দল থেকে তৃণমূলে এসেছে। আমরা দলের পুরনো কর্মী। কিন্তু ওরা অল্প দিনেই এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেছে ও প্রোমোটিং-এর ব্যবসায় জড়িয়েছে। দলের এতে বদনাম হচ্ছে জানিয়ে আমরা এর প্রতিবাদ করি। সেই রাগে আমাদের পক্ষের দুই সদস্যকে ওরা গুলি করে।’’

ঘটনার জেরে গ্রাম এখনও উত্তপ্ত। তেহট্টের মহকুমা পুলিস আধিকারিক শান্তনু সেন ও পলাশিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক প্রদ্যুৎ চক্রবর্তী বিশাল পুলিস বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে অবস্থা আয়ত্ত্বে আনেন।

স্থানীয় সূত্রের খবর, জলিলা বেওয়া নামে এক বাসিন্দার একটি জমি রয়েছে। সেই জমির উপর দিয়ে ইউনিস মোল্লা নামে এক জন রাস্তা করবেন বলে দাবি করেন। জলিলা রাজি হননি। এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ ইউনিসের হয়ে গণ্ডগোল করতে আসে আজমীর হালসানা ও এরশাদ শেখ। অভিযোগ, বচসা চলাকালীন জলিলা বেওয়ার কয়েক জন আত্মীয়কে মারধর করে এরশাদ ও আজমীর। তার পর পিস্তল বের করে ভয় দেখানো শুরু করে। এই সময় বাজার থেকে জলিলা বেওয়ার এক আত্মীয় ঝন্টু মোল্লা ফিরছিলেন। আচমকা তাঁর দিকে তাক করে গুলি চালিয়ে দেয় আজমীর। ঝন্টুর পিঠে গুলি লাগে। তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে পলাশিপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয় কিছু মানুষ। সেখান থেকে রেফার করা হয় শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে।

জলিলার আর এক পরিচিত শুকলালের বাড়ি এর পর চড়াও হয় এরশাদ শেখ। শুকলালের হাতে গুলি লাগে। পলাশিপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়।। তাঁকেও শক্তিনগরে রেফার করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে আজমীর ও এরশাদ গা ঢাকা দিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE