Advertisement
E-Paper

বড়ঞায় অস্ত্র-সহ ধৃত তৃণমূল নেতা

শিক্ষাক্ষেত্রে দাপাদাপি কিংবা সিন্ডিকেট-যোগ নৈব নৈব চ।দলীয় কর্মীদের গুন্ডামি, তোলাবাজি কিংবা অসামাজিক কাজকর্মের সঙ্গে যোগসাজশ রয়েছে জানলে, পুলিশকেও দরাজ ছাড়পত্র দিয়েছিলেন— ‘দলের রং না দেখেই ধরবেন’।সেই তালিকায় নাম ওঠায় ইতিমধ্যেই দলের তিন বিধায়ক-সাংসদকে ডেকে স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ‘‘এ সব চলবে না। হয় দলে থাকবে না হয়, সিন্ডিকেট করবে।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৬ ০০:৫০
সৌমিক হোসেনের সঙ্গে আফাজ (সবুজ শার্ট)।— ফাইল চিত্র

সৌমিক হোসেনের সঙ্গে আফাজ (সবুজ শার্ট)।— ফাইল চিত্র

শিক্ষাক্ষেত্রে দাপাদাপি কিংবা সিন্ডিকেট-যোগ নৈব নৈব চ।

দলীয় কর্মীদের গুন্ডামি, তোলাবাজি কিংবা অসামাজিক কাজকর্মের সঙ্গে যোগসাজশ রয়েছে জানলে, পুলিশকেও দরাজ ছাড়পত্র দিয়েছিলেন— ‘দলের রং না দেখেই ধরবেন’।সেই তালিকায় নাম ওঠায় ইতিমধ্যেই দলের তিন বিধায়ক-সাংসদকে ডেকে স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ‘‘এ সব চলবে না। হয় দলে থাকবে না হয়, সিন্ডিকেট করবে।’’ তোলাবাজির অভিযোগ পেয়ে মঙ্গলবারই সল্টলেকের এক কাউন্সিলরকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।

শুদ্ধিকরনের সেই চেষ্টায় এ বার অস্ত্র-সহ ধরা পড়লেন মুর্শিদাবাদের এক ব্লক তৃণমূল সভাপতি। এলাকায় তাঁর দাপটে এ যাবত সাধারনের সঙ্গেই তঠস্থ থাকত পুলিশও। তবে, মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা হলেও আদতে সে বীরভূমের নেতা অনুব্রত মন্ডলের ঘনিষ্ট বলে পরিচিত।মঙ্গলবার দুপুরে, কান্দির কালীবাড়ি রোড থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে মহম্মদ জালালুদ্দিন নামে ওই নেতাকে। এলাকা যাকে আফাজ বলেই জানে। দক্ষিণ বড়ঞা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি আফাজ বড়ঞার একঘড়িয়ার বাসিন্দা। তাঁর মা কোহিনূর বিবি, সাটিতারা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান।

এ দিন জালালুদ্দিন গাড়িতে কালীবাড়ি রোড ধরে যাচ্ছিলেন। সেই সময় পুলিশ কালীবাড়ি রোডে নাকা করছিল। গাড়িটি আটকে পুলিশ একটি নাইন এমএম পিস্তল ও একটি ছোট পিস্তল-সহ ছ’টা গুলি উদ্ধার করে। ওই নেতার গাড়ির চালক বুরহান শেখকেও পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

জেলার পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “পুলিশ কালীবাড়ি রোডে নাকা বা চেকিং করার সময় অস্ত্র-সহ ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে। সে কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মী কিনা আমাদের জানা নেই।”

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছরখানেক আগে ২০১৫ সালের ৩১ আগস্ট বড়ঞা থানা এলাকায় সাটিতারা গ্রামের বাসিন্দা তৃণমূল নেতা মনসুর শেখের বাড়িতে বোমা ছোড়ার অভিযুক্ত ছিল সে। ওই ঘটনায় ষষ্ট শ্রেণির এক ছাত্র সাইমুদ্দিন শেখ –সহ পাঁচ জন গুরুতর জখম হয়। মনসুর শেখ ও তার জামাই মিনারুল শেখ গুরুত্বর জখম হয়েছে। মিনারুল পরে মারাও যান।

এটা অবশ্য নিছকই একটা বিচ্ছিন্ন উদাহরণ। আফাজের কীর্তিকলাপের আরও বেশ কিছু নজির রয়েছে পুলিশের কাছে বলে জানা গিয়েছে। তার মধ্য়ে, খুনের চেষ্টা থেকে তোলাবাজি— একাধিক অভিযোগই রয়েছে।

তৃণমূল সূত্রে খবর, গত বিধানসভা ভোট থেকে জেলা তৃণমূলের নেতৃত্বের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় প্রার্থী দেওয়াকে কেন্দ্র করে। বড়ঞা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী চেয়ে জেলা তৃণমূলের কাছে বড়ঞা ব্লক যুব তৃণমূলের সভাপতি জীবন সাহার নাম প্রস্তাব করেছিল জালালুদ্দিন। কিন্তু সেখানে জীবনবাবুকে প্রার্থী না করে সষ্ঠী মালকে প্রার্থী করে। সেটা নিয়ে ওই ভোটে প্রচার থেকে দলের কাজেও তেমনভাবে দেখা যায়নি তাকে।

সোমবার জেলা তৃণমূলের বৈঠকে জেলার পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারি সরাসরি বলেন, “জালালুদ্দিনকে সভাপতি পদ থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।” তবে ওই ব্লকে নতুন কোন সভাপতির নাম ঘোষণা করেননি শুভেন্দুবাবু। দলের মধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে শুভেন্দুবাবুর এমন মন্তব্যের পরই পুলিশ ‘অতিসক্রিয়’ হয়ে পরের দিন জালালুদ্দিনকে গ্রেফতার করল। যদিও পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “এমনটা ভাবার কোন কারণ নেই। ও বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিলই।”

জালালুদ্দিনের গ্রাফতার পর থেকেই জেলা তৃণমূলের সভাপতি মান্নান হোসেনের মোবাইল বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা যায়নি। জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারি বলেন, “জালালুদ্দিন বড়ঞার ব্লক তৃণমূলের সভাপতি পদে নেই। এমনকী ও তৃণমূলেও নেই। ভোটের সময় থেকে গত ১৭এপ্রিল থেকেই অধীর চৌধুরীর সঙ্গে কংগ্রেস করছে। ওর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।”

যদিও বহরমপুরের সাংসদ তথা প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, “ওই যুবক কোন দলের সদস্য তা স্থানীয় বাসিন্দারা জানেন। দলের কেউ ধরা পড়লেই ওরা বলে, কংগ্রেসের লোক। এটাই তৃণমূলের সংস্কৃতি।”

TMC Arrest police Arms
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy