Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Jangipur

ধর্মঘটে বন্ধ স্কুলের তালা ভাঙলেন নেতা

বৃহস্পতিবার থেকে স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া শুরু হয়েছে। এ দিন তা নিতে নিস্তা গ্রাম থেকে স্কুলে এসেছিলেন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী বুদ্ধদেব মণ্ডল।

ভাঙা হচ্ছে স্কুলের তালা। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়

ভাঙা হচ্ছে স্কুলের তালা। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৩ ১০:১৬
Share: Save:

তালা বন্ধ হাই স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে গোটা ৪০ ছাত্র ছাত্রী। স্কুলের শিক্ষকেরা দাঁড়িয়ে রাজ্য সড়কের পাশে। খবর পেয়ে রঘুনাথগঞ্জের শ্রীকান্তবাটী হাইস্কুলে ছুটে এলেন তৃণমূলের বুথ সভাপতি ভানু ঘোষের নেতৃত্বে একদল তৃণমূল কর্মী-সমর্থক। আনা হল হাতুড়ি। ভাঙা হল তালা। ছাত্রছাত্রীদের ঢুকিয়ে দেওয়া হল স্কুলের ক্যাম্পাসের মধ্যে। স্কুলে ঢোকানো হল মিডডে মিলের রাঁধুনিদেরও। কিন্তু স্কুলে পড়াবেনটা কে? এক জন শিক্ষকও স্কুলে আসেননি এদিন ডিএ নিয়ে যৌথ মঞ্চের ডাকা ধর্মঘটে সাড়া দিয়ে। তাই স্কুলের সব ঘর তালা বন্ধ দেখে স্কুল ছেড়ে বেরিয়ে এল ছাত্রছাত্রীরা। রাঁধুনিরাও। বন্ধ রইল মিডডে মিল।

বৃহস্পতিবার থেকে স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া শুরু হয়েছে। এ দিন তা নিতে নিস্তা গ্রাম থেকে স্কুলে এসেছিলেন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী বুদ্ধদেব মণ্ডল। তিনি বললেন, “অফিস ও সমস্ত ঘর বন্ধ। এক জন শিক্ষকও আসেননি। সামনেই রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষকদের জিজ্ঞাসা করলে ওরা বললেন আজ ধর্মঘট। শনিবার এস। তাই ফিরে যাচ্ছি।”

অ্যাডমিট কার্ড নিতে স্কুলে এসেছিলেন সোনাটিকুরির প্রিয়া ঘোষ। বললেন, “স্কুলের সব ঘরে তালা মারা। কোনও শিক্ষক নেই। ১৪ মার্চ থেকে পরীক্ষা শুরু উচ্চ মাধ্যমিক। দেখি শনিবার আসব অ্যাডমিট কার্ড নিতে।”

তৃণমূল নেতা ভানু ঘোষ বলেন, “স্কুলের কিছু দুষ্টু লোক, এ ছাড়া কী বা বলব, দুষ্টু দলগুলো আমাদের রাজ্য সরকারের নামে বদনাম করে স্কুলে তালা মেরে দিয়েছিল। তালা ভেঙে স্কুল খুলে সব ছাত্র ও রাঁধুনিদের স্কুলে ঢোকালাম।”

স্কুলে তালা ভাঙাভাঙি ও গোলমালের খবর পেয়ে ততক্ষণে রঘুনাথগঞ্জ থানা থেকে দু’গাড়ি ভর্তি পুলিশ চলে এসেছে স্কুলের সামনেই। শিক্ষকেরাও ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেন তাঁদের পাশেই।

তাঁরা পুলিশের কাছ থেকে কোনও সাহায্য চাননি। এ দিনের ধর্মঘট নিয়ে কোনও কথা বলতেও অস্বীকার করেন তাঁরা। বরং স্কুলের সামনেই শিক্ষকেরা দাঁড়িয়ে থাকার ছবি তুলতেই রে রে করে চিত্র সাংবাদিকদের দিকে তেড়ে আসেন তাঁরা। ছবি তুলতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন।

এবিটিএ’র জেলা সভাপতি জুলফিকার আলি বললেন, “শ্রীকান্তবাটী হাইস্কুলের শিক্ষকেরা ডিএ-র দাবিতে ধর্মঘটে সামিল হয়েছেন। কিন্তু স্কুলের আশেপাশে শিক্ষকদের না যাওয়ার সিদ্ধান্তই ঘোষণা করা হয়েছিল ধর্মঘটী যৌথ মঞ্চের পক্ষ থেকে। তাই তারা স্কুলের সামনে গিয়ে অযথা বিতর্কে জড়িয়ে ঠিক করেননি।”তিনি জানান, এদিনের ধর্মঘটে জঙ্গিপুর মহকুমা জুড়ে বেশির ভাগ স্কুল বন্ধ ছিল।

পুলিশ অবশ্য কোথাও অতি সক্রিয়তা দেখায়নি। তৃণমূলের মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি শেখ ফুরকানের অবশ্য দাবি, “কিছু কিছু শিক্ষক কাজ করেছেন। রাজ্য সরকার বিষয়টি দেখছেন। শ্রীকান্তবাটী স্কুলে তালা মারা বা তালা ভাঙা ঠিক হয়নি। যাঁরা এটা করেছেন সেটা তাদের কাজ নয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jangipur School Open
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE