Advertisement
E-Paper

কোপে জখম তৃণমূল নেতা

কল্যাণীর পরের দিনই ফের চাপড়ার বেতবেড়িয়ায় আক্রান্ত হলেন তৃণমূলের এক স্থানীয় নেতা। মেহবুব বিশ্বাস নামে ওই যুবক চাপড়া পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য কোহিনুর বিবির স্বামী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৭ ০১:৪১
আহত: শক্তিনগর হাসপাতালে মেহবুব বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র

আহত: শক্তিনগর হাসপাতালে মেহবুব বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র

কল্যাণীর পরের দিনই ফের চাপড়ার বেতবেড়িয়ায় আক্রান্ত হলেন তৃণমূলের এক স্থানীয় নেতা। মেহবুব বিশ্বাস নামে ওই যুবক চাপড়া পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য কোহিনুর বিবির স্বামী।

তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, মেহবুব হামলার আসল লক্ষ্য ছিলেন না। যে দুই নেতা নিশানা ছিলেন বলে দাবি, দু’জনেই এলাকায় ‘দাপুটে’ বলে পরিচিত। দু’জনই ২০১৩ সালে স্কুল নির্বাচনে নিয়ে গণ্ডগোলে সিপিএম কর্মী খুনে অভিযুক্ত। তবে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরেই এই হামলা বলে স্থানীয় সূত্রের খবর।

সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ ওই হামলার পরে মেহেবুবকে প্রথমে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় পরে কলকাতায় এনআরএস-এ পাঠানো হয় তাঁকে। দুষ্কৃতীদের ছোড়া বোমায় মুনমুন বিবি নামে এক মহিলাও জখম হয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকালে হৃদয়পুর পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী আশরফ শেখ ও ব্লকের কার্যকরী সভাপতি শুকদেব ব্রহ্ম মেহবুবদের কয়েক জনকে সঙ্গে নিয়ে আশরফের বাড়ির সামনে মাচায় বসে কথাবার্তা বলছিলেন। শুকদেবের বাড়ি পাশের সুঁটিয়া গ্রামে। কথার শেষে তিনি মোটরবাইকে চেপে চলে যান। আশরফ ফেরেন নিজের বাড়ির গেটের দিকে। সেই সময়েই আচমকা পাঁচটি মোটরবাইককে এসে দুষ্কৃতীরা মাচায় বসা তৃণমূল কর্মীদের লক্ষ করে বোমা ছোড়ে। প্রাণভয়ে যে দিকে যে পারে, পালানোর চেষ্টা করে। আশরফ বাড়িতে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। মেহেবুব গ্রামের ভিতরের দিকে ছুটতে শুরু করেন।

হাসপাতালে শুয়ে মেহবুব বলেন, “ওরা আমার পিছু ধাওয়া করে। আমায় লক্ষ করে গুলি চালায়। গুলি আমার গায়ে লাগেনি। আমি মশিউর রহমানের বাড়িতে ঢুকে পড়ি। সেখান থেকে টেনে বের করে ওরা আমাকে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে।” এর পরেও তিনি ছুটে পালানোর চেষ্টা করলে বোমা ছোড়া হয়। বোমায় জখম হয় মুনমুন বিবির ডান হাত।

তৃণমূলের একটি সূত্রে অবশ্য দাবি করছে, আশরফ আর শুকদেবকে মারার জন্যই হামলা করা হয়েছিল। বছরখানেক আগেই এক রাতে গ্রামের ভিতরে আশরফের উপরে হামলা হয়। সে বারও তিনি কোনও মতে বেঁচে গিয়েছিলেন। ২০১৩ সালে স্কুল নির্বাচন নিয়ে গণ্ডগোলের সিপিএম কর্মী আরশাদুল শেখ খুনে অভিযুক্ত শুকদেব ও আশরফ দু’জনেই। যদিও তাঁদের কয়েক জনকে ওই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য আইন বিভাগের নির্দেশে আদালতে আর্জি জানিয়েছেন সরকারি আইনজীবী।

ওই গোলমালের পর থেকে এখন পর্যন্ত গ্রামছাড়া সিপিএমের বেশ কিছু পরিবার। তারা আশরফের ভয়ে গ্রামে ঢুকতে পারছে না। তৃণমূলেরই একটা অংশের দাবি, ঘরছাড়াদের একাংশ গ্রামে ফেরার জন্য তৃণমূলে যোগ দিতে শুরু করেছেন। তাঁদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে দলের আশরফ ও শুকদেব বিরোধী একটা অংশ।

হামলার পর থেকে মোবাইল বন্ধ করে বসে আছেন শুকদেব। আশরফ দাবি করেন, “আমাদের দু’জনকেই খুন করতে এসেছিল ওরা। ভুল করে মেহেবুবকে কুপিয়ে গিয়েছে।” কারা করল এই হামলা? আশরফের দাবি, “নতুন যারা সিপিএম থেকে তৃণমূলে এসেছে, তারাই হামলা চালিয়েছে।”

তবে চাপড়ার তৃণমূল বিধায়ক রুকবানুর রহমান বলেন, “আমরা কিন্তু এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় দলের লোকের যুক্ত থাকার খবর পাইনি। পুলিশ তদন্ত করছে।” জেলার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, “এক জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে হচ্ছে। তবে হামলার কারণ এখনও পরিষ্কার নয়।”

TMC leader stabbed
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy