সোমবার বিধানসভায় পরিষদীয় দলের বৈঠক করেন তৃণমূল দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি বিধায়কদের একাধিক বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন। একটি ক্ষেত্রে তিনি বলেছেন, ‘‘বারবার ক্ষমা নয়।’’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘কত বার ক্ষমা করা যায়! বার বার ক্ষমা করা যায় না।’’ এ কথা জেলায় আসার পরপরই তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে, মুর্শিদাবাদের একাধিক নেতা অনেক সময় দলবিরোধীর কথা বলেছেন। দলবিরোধী কাজেরও অভিযোগ উঠেছে বার বার। কিন্তু এখনও পর্যন্ত জেলায় দলের জেলা কমিটিই তৈরি হয়নি। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বক্তব্য, জেলা কমিটি তৈরি হলে দলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব অনেক কমবে।
বছর দু’য়েক আগে দলের জেলা কমিটি গঠনের চেষ্টা করেছিলেন তৎকালীন জেলা তৃণমূল সভানেত্রী শাওনি সিংহরায়। কিন্তু তৎকালীন জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান তথা মুর্শিদাবাদের সাংসদ আবু তাহের খানের সঙ্গে বিরোধের জেরে তা ভেস্তে যায়। তারপর থেকে আর মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের কমিটি গঠন হয়নি। জেলা কমিটি ছাড়াই দল চলছে মুর্শিদাবাদে। দলের জেলা সভাপতি এবং জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান এবং ব্লক, অঞ্চল সভাপতিদের পাশাপাশি শাখা সংগঠনের সভাপতিরা রয়েছেন। কিন্তু কোনও কমিটি নেই।
দলের অনেকেই বলছেন, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের জন্য আর বেশি সময় নেই। তোড়জোড় শুরু করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। এই পরিস্থিতিতে দলের জেলা কমিটি যদি না থাকে তা হলে সাংগঠনিক কাজকর্মে ব্যাঘাত হওয়াটাই স্বাভাবিক। জেলার অনেক নেতা রয়েছেন যাঁরা কমিটি গঠন না হওয়ায় কোনও পদ পাননি। ফলে দলের কাজকর্ম তাঁরা নিজেদের সে ভাবে নিয়োজিত করতে পারছেন না।
তবে বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, ‘‘রাজ্য থেকে যে দিন যেমন নির্দেশ আসবে সেই অনুযায়ী আমরা পদক্ষেপ করব।’’ সামনেই ২০২৬ সালের গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা নির্বাচন। এখনও জেলা কমিটি না থাকায় দলের কাজকর্মে কোনও অসুবিধা হচ্ছে না? অপূর্ব বলেন, ‘‘গত মাসেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলায় সরকারি কর্মসূচিতে এসেছিলেন। সেই কর্মসূচিতে পর্যাপ্ত লোকজন উপস্থিত করে প্রমাণ করে দিয়েছি আমাদের সংগঠন যথেষ্টই শক্তিশালী।’’ তাঁর দাবি, ‘‘অঞ্চল, ব্লক সভাপতি, বিভিন্ন শাখা সংগঠনের সভাপতিরা রয়েছেন। তাঁদের সকলকে নিয়ে সংগঠন শক্তিশালী ভাবে চলছে।’’
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে তৎকালীন জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী দলের ২১১ জনের জেলা কমিটি ঘোষণা করেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গে আলোচনা না করে তালিকা ঘোষণার অভিযোগ তুলে বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যান জেলা তৃণমূলের তৎকালীন চেয়ারম্যান আবু তাহের খান। পরে তাহের দাবি, করেছিলেন, রাজ্য থেকে ওই কমিটিকে স্থগিত রাখা হয়েছে। তার পরে জেলা সভাপতি, চেয়ারম্যান বদল হলেও কমিটি গঠন হয়নি
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)