E-Paper

প্রয়াত তেহট্টের বিধায়ক, বিকল্প ভাবনায় সিবিআই

রাজনীতিতে তাপসের উত্থান আশির দশকে। একদা বেতাই কলেজে ছাত্র পরিষদের হয়ে সাধারণ সম্পাদক, পরে কংগ্রেসের নানা সাংগঠনিক দায়িত্বে ছিলেন।

সাগর হালদার  

শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২৫ ০৮:২৭
তাপস সাহা।

তাপস সাহা।

মারা গেলেন নদিয়ার তেহট্টের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক তাপস সাহা (৬৫)। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ১৫-য় কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের জেরে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সকালে অসুস্থ তাপসকে প্রথমে তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে, অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় পরে কলকাতায় আনা হয়েছিল। তাপসকে শ্রদ্ধা ও তাঁর পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্যেরা।

হাসপাতাল থেকে তাপসের দেহ বিধানসভায় আনা হলে সেখানে তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন স্পিকার বিমান, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, বিজেপির কয়েক জন বিধায়ক। পরিবারকে সমবেদনা জানিয়ে মমতা সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘তাঁর (তাপস) মৃত্যুতে রাজনৈতিক জগতে শূন্যতার সৃষ্টি হল।’ তাপসের ছেলেকে ফোন করে সমবেদনা জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। পরে তেহট্টের কড়ুইগাছির বাড়িতে বিধায়কের দেহ আনা হলে সেখানে তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা।

রাজনীতিতে তাপসের উত্থান আশির দশকে। একদা বেতাই কলেজে ছাত্র পরিষদের হয়ে সাধারণ সম্পাদক, পরে কংগ্রেসের নানা সাংগঠনিক দায়িত্বে ছিলেন। তৃণমূল তৈরির পরে সেখানে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। ২০১১-র বিধানসভার ভোটে তেহট্ট থেকে নির্দল প্রার্থী হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন তাপস। প্রায় ৫৮ হাজার ভোট পেয়ে তৃণমূলকে তৃতীয় স্থানে ঠেলে দেন। দল তাঁকে বহিষ্কার করে। ২০১৬-র ভোটে তৃণমূল তাঁকে পলাশিপাড়া থেকে টিকিট দেয়। ২০২১-এর বিধানসভায় তৃণমূলের টিকিটে তেহট্ট থেকে প্রায় সাত হাজার ভোটে জিতেছিলেন তাপস।

তবে তাপসের বিরুদ্ধে নিয়োগ-দুর্নীতিতে নাম জড়ানোয় তদন্তে শুরু করেছিল রাজ্য দুর্নীতি দমন‌ শাখা। পরে তদন্তভার পেয়ে ২০২৩-এ তাপসের কড়ুইগাছির বাড়িতে অভিযান চালায় এবং প্রায় ১৫ ঘণ্টা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই। সূত্রের খবর, নিয়োগ-মামলায় তাপসকে অভিযুক্ত হিসেবে চার্জশিট তৈরি করে তা আলিপুর সিবিআই বিশেষ আদালতে পেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল সিবিআই। তাপসের মৃত্যুর ফলে মামলার চার্জশিটে আমূল পরিবর্তন করতে হবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। তবে তাঁর বিরুদ্ধে থাকা বিভিন্ন সাক্ষী ও অভিযোগ চার্জশিটে উল্লেখ থাকতে পারে। সূত্রের দাবি, তাপস-ঘনিষ্ঠ এবং ‘মিড্লম্যানদের’ জিজ্ঞাসাবাদ এবং তাঁদের বয়ান লিপিবদ্ধ করেছিল সিবিআই।

তবে এই সবের পরেও পুরোদমে রাজনীতিতে ছিলেন তাপস। ২০২৪-এ অসুস্থতার জেরে একাধিক বার বেঙ্গালুরুতে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন। তাপসের একমাত্র ছেলে সাগ্নিক এ দিন কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না। বিধায়কের বড় বৌদি নীলিমা বলেছেন, “মঙ্গলবার রাত থেকেই অসুস্থ ছিল। এ দিন সকালে খবর পেলাম ও আর নেই!” তেহট্ট ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি সুকুমার মণ্ডল বলেছেন, “প্রিয় নেতাকে হারালাম।” সিপিএম নেতা সুবোধ বিশ্বাস বলেন, “এলাকার বিধায়ককে আমরা শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছি।” পলাশি শ্মশানে এ দিন বিধায়কের দেহ দাহ করা হয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Tehatta

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy