Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
পণ্ডিতপুর-শ্রীকৃষ্ণপুর

রাস্তার মাঝে ফাটল, সমস্যায় বাসিন্দারা

দিন কুড়ি আগে লাগাতার বৃষ্টিতে ধস নেমে রাস্তার মাঝে বেশ কয়েকটি জায়গায় পেল্লাই সাইজের গর্ত তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ভাঙাচোরা সেই রাস্তা মেরামতির কোনও উদ্যোগই নেয়নি প্রশাসন। ফলে ধুবুলিয়ার পন্ডিতপুর ও শ্রীকৃষ্ণপুরের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

শ্রীকৃষ্ণপুরে রাস্তার মাঝে ফাটল। — নিজস্ব চিত্র।

শ্রীকৃষ্ণপুরে রাস্তার মাঝে ফাটল। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ধুবুলিয়া শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:৫৮
Share: Save:

দিন কুড়ি আগে লাগাতার বৃষ্টিতে ধস নেমে রাস্তার মাঝে বেশ কয়েকটি জায়গায় পেল্লাই সাইজের গর্ত তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ভাঙাচোরা সেই রাস্তা মেরামতির কোনও উদ্যোগই নেয়নি প্রশাসন। ফলে ধুবুলিয়ার পন্ডিতপুর ও শ্রীকৃষ্ণপুরের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ওই রাস্তা দিয়ে যান চলাচল তো দূর অস্ত, এমনকী হাঁটাচলা করাও দুষ্কর হয়ে পড়েছে।

ব্যাপক বৃষ্টির জেরে রাস্তায় পাশের মাঠে জল জমেছিল। অন্যদিকে জলঙ্গিতেও জল বাড়ছিল। মাঠের জল রাস্তার নীচের ছোট গর্ত দিয়ে নদীতে নামছিল। যার ফলে রাস্তা একাংশে ফাটল ধরেছিল। পরে একই ভাবে রাস্তার ভেতরে থাকা ছোট গর্ত দিয়ে নদীতে জল চুইয়ে নামছিল। দিন কুড়ি আগে ওই রাস্তা মাঝ খান দিয়ে দু’ভাগ হয়ে গিয়েছে। লম্বায় প্রায় ১০ ফুট রাস্তার কোনও অস্তিত্ব নেই। রাস্তার গর্তের গভীরতাও প্রায় ১০ ফুট। শ্রীকৃষ্ণপুরের সুজিত মণ্ডল, পদ্মলোচন কবিরাজ জানান, আগের বৃষ্টিতে রাস্তা অর্ধেক ভেঙেছিল। এবারে পুরোপুরি সংযোগ বিচ্ছিন্ন। এর ফলে উভয় গ্রামের লোকজন সমস্যায় পড়েছেন।

কৃষ্ণনগর-২ ব্লকের জলঙ্গির তীরে পন্ডিতপুর, শ্রীকৃষ্ণপুর, আনন্দনগর, দলিমৌলা প্রভৃতি বেশ কয়েকটি গ্রামের অবস্থান। ওই সব গ্রামের লোকজনকে রাত পোহালে বিভিন্ন দরকারে ধুবুলিয়ায় আসতে হয়। কারণ, ধুবুলিয়াতেই রয়েছে—ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের দফতর, ব্লকের কৃষি ও প্রাণী সম্পদ দফতরের অফিস। ওই সব নদী পাড়ের গ্রামের লোকজন নদীর ধার বরাবর ইট পাতা রাস্তা দিয়ে ধুবুলিয়ায় আসেন। কিন্তু দিন কুড়ি আগে মুষলধারে বৃষ্টিতে ওই রাস্তার অসংখ্য জায়গায় ভাঙন ধরেছে। ইট উঠে গিয়ে তৈরি হয়েছে বড় বড়
গর্ত। পন্ডিতপুরের বাসিন্দা সাহাবুদ্দিন শেখ জানান, নানা কারণে তাঁকে প্রায় দিনই ধুবুলিয়ায় যেতে হয়।
কিন্তু রাস্তায় ফাটল ধরায় আতান্তরে পড়তে হচ্ছে।

নদী পাড়ের ওই সব গ্রামের লোকজনকে ফলে বাধ্য হয়ে বাহাদুরপুর রেলগেট হয়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে ধুবুলিয়ায় আসতে হচ্ছে। ফলে অন্তত ১০ কিলোমিটার অতিরিক্ত ঘুরতে হচ্ছে। পেশায় প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক তথা কৃষ্ণনগর-২ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তৃণমূলের কিয়ামত আলি শেখ বলেন, ‘‘রাত পোহালেই ধুবুলিয়ায় আসতে হয়। কিন্তু ধুবুলিয়া যাওযার সোজাসাপ্টা রাস্তার করুণ দশা। ফলে লোকজনকে ভুগতে হচ্ছে।’’ এলাকার জনপ্রতিনিধি হিসেবে কিয়ামত আলি এই ভোগান্তির বিবরণ দিয়ে জেলার সেচ দফতর ও কৃষ্ণনগর-২ ব্লকের বিডিওকে একটি চিঠি দিয়েছেন। সেখানে এলাকার শ’খানেক মানুষ সই করেছেন।

কিন্তু এখনও রাস্তা সারানোর কোনও উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। কিয়ামত বলেন, ‘‘মানুষের ভোগান্তি দিন দিন বাড়ছে। তবে আশা করি প্রশাসন দ্রুত কোনও সদর্থক পদক্ষেপ করবে।’’ সেচ দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ওই রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব তাঁদের নয়। তবুও বিডিও বিষয়টি আমাদের জানালে খতিয়ে দেখা যেতে পারে। কৃষ্ণনগর-২ ব্লকের বিডিও সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, “ধুবুলিয়া ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ওই ভাঙা রাস্তার সংস্কার কাজ হবে। তার জন্য দরপত্র ডাকার কাজ শুরু হয়েছে। আশা করি দ্রুত সমস্যা মিটবে।’’ এই আশ্বাস কবে বাস্তবায়িত হয়, সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন নদী তীরবর্তী গ্রামগুলির কয়েক হাজার মানুষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Damaged Road Dhubulia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE