সততার নজির। নিজস্ব চিত্র
দিন আনি দিন খাই অবস্থা পরিবারের। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে তিনি টোটো চালিয়ে সংসার চালান। এমনই এক পরিবারের যুবক তাঁর কর্তব্য ভোলেননি অনটনেও। এক যাত্রীর ফেলে যাওয়া টাকার ব্যাগ ফেরত দিলেন শমসেরগঞ্জের আলকেশ শেখ।
শুক্রবার দুপুরে জঙ্গিপুর থেকে আলকেশের টোটোয় বাড়ি ফিরছিলেন শমসেরগঞ্জের উত্তর চাচণ্ড গ্রামের মজিবুর রহমান। তাঁর কাছে একটি ব্যাগ ছিল। মজিবুরের দাবি, তাতে প্রায় ৬২ হাজার টাকা ছিল। মজিবুর জানান, টোটোয় ওঠার পর ক্লান্ত, অবসন্ন হয়ে তিনি আসনে গা এলিয়ে দেন। টাকার ব্যাগটি রেখেছিলেন পাশে সিটের ওপর। কিছুক্ষণ পর গন্তব্যে পৌঁছতেই তিনি টোটো থেকে নেমে যান। তবে ব্যাগটি নিতে ভুলে গিয়েছিলেন। বাড়ির দিকে কিছুটা পথ যাওয়ার পর তাঁর টাকার ব্যাগের কথা মনে পড়ে যায়। ব্যাগ হারিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে যান তিনি। কোথায় ব্যাগটি হারিয়েছেন সেটাও ভাল করে মনে করতে পারছিলেন না মজিবুর। এদিক-সেদিক খুঁজেও ব্যাগ না পেয়ে তিনি হতাশ হয়ে পড়েন।
এদিকে, টোটোটি চলতে শুরু করার পর ব্যাগটি যাত্রীদের পা রাখার জায়গায় পড়ে গিয়েছিল। কিছুটা দূরে যাওয়ার পর আলকেশ সিটের নীচে টাকার ব্যাগটি পড়ে থাকতে দেখেন। ব্যাগ খুলে তাতে টাকা দেখে ওই যুবক বুঝতে পারেন সেটি মজিবুরের।আলকেশ শনিবার জানান, মজিবুরকে তিনি অল্পবিস্তর চিনতেন। তারপর টোটো চালিয়ে তিনি তাঁর বাড়িতে সটান চলে যান। শমসেরগঞ্জের দুর্গাপুর গ্রামে থাকেন আলকেশ। সেখান থেকে বেশ কিছুটা দূরে মজিবুরের বাড়ি। ওইদিন সন্ধ্যা নাগাদ তিনি সেখানে যান। টাকা ফেরত পেয়ে খুশি মজিবুর। আলকেশকে তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন। ওই যুবকের প্রশংসায় পঞ্চমুখ তাঁর পড়শিরাও। আলকেশ যদিও বলছেন তিনি তাঁর কর্তব্য করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ব্যাগ খুলে যখন দেখি তার মধ্যে টাকা রয়েছে, তখনই ঠিক করে ফেলি হয় থানায় জমা দেব নয় তো যার টাকা তাকেই ফেরত দেব। যে টাকা আমার নয়, তা নিজের বলে কাছে রাখবই বা কেন!’’ টাকা ফেরত পেয়ে খুশি মজিবুর। তিনি বলেন, ‘‘রাস্তায় হঠাৎ খেয়াল হয় যে টাকার ব্যাগটা সঙ্গে নিতে ভুলে গিয়েছি। মাথায় বাজ পড়ে। ভেবেছিলাম ওই টাকা আর ফেরত পাব না। এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না যে হারিয়ে যাওয়া টাকা ফেরত পেয়েছি। আলকেশকে কী বলে যে ধন্যবাদ জানাব জানি না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy