Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

করোনা বিধি মেনে হবে রঘু ডাকাতের কালীপুজো

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বহু বছর আগে কালী মন্দিরের পেছনে থাকা পুকুর সংস্কারের সময় একাধিক নরকঙ্কাল মিলেছিল তা থেকে অনুমান করা হয় যে রঘু ডাকাতের সময় নরবলি দেওয়া হত এখানে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

মৃন্ময় সরকার
জিয়াগঞ্জ শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২০ ০১:৫৮
Share: Save:

আজও পুরনো প্রথা মেনেই হয়ে আসছে জিয়াগঞ্জের আমাইপাড়া বুড়িকালী মাতা ঠাকুরাণীর পুজো। আমাইপাড়া বুড়ি কালী মাতা ঠাকুরাণীর কাছে পুজো সব ধর্মের মানুষ।

তবে আমাইপাড়া বুড়ি কালীর পুজো ঠিক কত সাল থেকে শুরু হয় তা নিয়ে স্পস্ট কোনও সাল জানা যায় না।

মন্দিরের বর্তমান সেবাইত সুব্রত ভট্টাচার্য জানান, একটা সময় এই আমাইপাড়া জঙ্গলে ভর্তি ছিল। ওই সময় এক পরিব্রাজক সাধনায় বসেন। পরে ধ্যান ভাঙার পর যখন ওই পরিব্রাজক সেই স্থান ত্যাগ করেন ওই সময় আশে পাশের ক'য়েকটি পরিবারকে বলে যান, এই স্থান কোনও সাধারণ স্থান নয় এই জায়গার লালনপালন করো। কথিত রয়েছে, তারপর ওই স্থানে এসে কালীপুজোর শুরু করে রঘু ডাকাত। তবে রঘু ডাকাতের নামে অনেক কালী পুজোই প্রচলিত। সত্যিই রঘু ডাকাত কোন কালী পুজো করতেন, তা নিয়ে নানা জনের নানা মত।ওই সময়ই কালো সাপ, ময়ূর, শেয়াল, হনুমান ও মানুষের মাথা দিয়ে পঞ্চমুণ্ডির আসন তৈরি করে সেখানে পুজো প্রতিষ্ঠা করা হয়ে বলেও জনশ্রুতি।

তারপর রঘু ডাকাত সেই স্থান ত্যাগ করে যাওয়ার পর আমাইপাড়া বুড়ি কালির পুজো ধরেন স্থানীয় এক ব্রাহ্মণ ও তাঁর মা। কিন্তু হঠাৎই মৃত্যু হয় ওই ব্রাহ্মণের। তারপর আমাইপাড়া বুড়ি কালীর পুজোর যারা এগিয়ে এসেছে তাদেরই কোনও না কোনও ক্ষতি হয়। এমনকি রঘু ডাকাত পর্যন্ত কালী পুজো ঠিক মতো করতে পারেননি বলে জনশ্রুতি। এলাকার মানুষের দাবি, কালী পুজো কেউ ঠিকঠাক ভাবে করতে পারছিল না। তারপর মৃত ব্রাহ্মণের মা আমাইপাড়া বুড়ি কালীর পুজোর জন্য অনুরোধ জানান ভট্টপাড়ার ব্রাহ্মণ কৈলাসচন্দ্র ভট্টাচার্যকে তিনিই স্বেচ্ছায় পুজো করতে রাজি হন। যদিও কৈলাসচন্দ্র ভট্টাচার্য জানতেন এর আগে যারা পুজো করেছে তাদের সকলের ক্ষতি হয়েছে। তিনি পুজো করার পর থেকে আর কোনও বিপদ ঘটেনি।

আমাইপাড়া বুড়ি কালী নিয়ে এলাকায় অনেক অলৌকিক কথা প্রচলিত আছে। শোনা যায়, অনেকেই নাকি আমাইপাড়া বুড়ি কালীকে দেখেছেন, কিন্তু যারা দেখেছেন তারা একথা বাইরে বলার পর কোনও না কোনও কারনে মৃত্যু হয়েছে, বলেই দাবি স্থানীয়দের।

সারা বছর মন্দিরে বুড়ি কালীর মৃন্ময়ী প্রতিমা থাকে। সারা বছর শনি ও মঙ্গলবার জেলা তো বটেই জেলার বাইরে থেকেও লোকজন আসে পুজো দিতে। আমাইপাড়া বুড়ি কালীর পুজোয় বলি প্রথা রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বহু বছর আগে কালী মন্দিরের পেছনে থাকা পুকুর সংস্কারের সময় একাধিক নরকঙ্কাল মিলেছিল তা থেকে অনুমান করা হয় যে রঘু ডাকাতের সময় নরবলি দেওয়া হত এখানে। এদিন সুব্রত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কৈলাস চন্দ্র ভট্টাচার্য আমার বাবার দাদু ছিলেন। উনি ওই সময় সবকিছু জেনেও পুজোয় রাজি হয়েছিলেন। সেই থেকে পুজোটা আমরা পাই।’’ তখন থেকে তিনিই নিজের মতো নিয়ম মেনে কালীপুজো করতেন। তবে এই বছর পুজো করোনার সব সরকারি সমস্ত নিয়ম মেনেই হবে বলে জানান সুব্রতবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kali Puja Jiaganj
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE