Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

গুলিতে ঝাঁঝরা তৃণমূলের নেতা

এলাকায় সমাজবিরোধী কাজের সঙ্গে বার বারই নাম জড়িয়েছে তাঁর। হালে, তৃণমূলের স্থানীয় নেতা হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করছিলেন তিনি। শুক্রবার রাতে, গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে মারা গেলেন শাসক দলের সেই উঠতি নেতা দেবদাস সরকার (৩৬)।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কল্যাণী শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৭ ০১:১৮
Share: Save:

এলাকায় সমাজবিরোধী কাজের সঙ্গে বার বারই নাম জড়িয়েছে তাঁর। হালে, তৃণমূলের স্থানীয় নেতা হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করছিলেন তিনি।

শুক্রবার রাতে, গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে মারা গেলেন শাসক দলের সেই উঠতি নেতা দেবদাস সরকার (৩৬)। তবে, তাহেরপুর ওই নেতা খুনের সঙ্গে জড়িয়ে গেল আরও এক তৃণমূল নেতার নাম, চন্দন ন দাস।

যার সূত্রে ধরে, ফের প্রকাশ্যে চলে এল দলের গোষ্ঠী বিবাদ। নদিয়া জুড়ে শাসক দলের কোন্দল নতুন ঘটনা নয়। বিভিন্ন এলাকায় নিত্য নতুন ‘দাদা’ এবং তাদের প্রভাব প্রতিপত্তি নির্দিষ্ট রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের তা গা সওয়াও হয়ে গিয়েছে একরকম।

তবে, শুক্রবার রাতের ঘটনায় সেই কোন্দল ফের রক্তাক্ত চেহারা নেওয়ায় তাহেরপুর-রানাঘাট এলাকা জুড়ে ফের খুনের রাজনীতি ফিরে এল কিনা তা নিয়ে দলের অন্দরেই কানাঘুষো শুরু হয়েছে।

দেবদাস এবং চন্দন— দু’জনে এক এলাকার বাসিন্দা। ঘটনার পরে ভাঙচুর চালানো হয় চন্দনের দোকান এবং বাড়িতে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় তার গাড়ি।

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দেবদাস এবং চন্দন তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর দুই নেতার ঘনিষ্ট। ঘটনার পরে তাই দু’পক্ষের চাপান উতোরও শুরু হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’'জনের বিরুদ্ধেই সাট্টা-জুয়ার ঠেক চালানোর পুরনো অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দেবদাস আগে সিপিএমের যুব সংগঠনের নেতা ছিলেন। পালাবদলের পরে, তৃণমূলে ভিড়তে সময় নেননি তিনি। তবে, রানাঘাট-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তাপস ঘোষের দাবি, দেবদাস তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই ছিলেন।

দেবদাসের ভাই বিপ্রদাস সরকার বলেন, ‘‘শুক্রবার রাত সাড়ে ন'টা নাগাদ চন্দন স্থানীয় এক যুবককে দিয়ে পাড়ার লাইব্রেরিতে দাদাকে ডেকে পাঠায়। সেখানে কয়েকজনকে নিয়ে খানাপিনার আসর বসিয়েছিল চন্দন। কিছুক্ষণের মধ্য়েই গুলির শব্দ। গিয়ে দেখি দাদা পড়ে রয়েছে।’’ দেবদাসকে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যান তিনি।

এর পরেই দেবদাসের অনুগামীরা চড়াও হয় চন্দনের বাড়িতে। বাড়ির বাইরে দু'টি মোটরবাইক, একটি গাড়িতেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। আসে দমকল, পুলিশও।

জেলা পুলিশ সুপার পুলিশ সুপার শিষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে। ভাস্কর দত্ত নামে এক জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।’’

তবে, দলের অন্দরের খবর, চন্দন বীরনগরের পুরপ্রধান পার্থ চট্টোপাধ্যারে ঘনিষ্ট বলেই এলাকায় পরিচিত ছিল। তবে পার্থ তাঁর সঙ্গে চন্দনের ঘনিষ্টতা মানতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘চন্দন তৃণমূল কর্মী। পার্টি অফিসে আসত। সেই সূত্রেই ওকে চিনি। তবে যে খুন হয়েছে, তার কার্যকলাপ নিয়েও তো প্রশ্ন ছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE