প্রতীকী ছবি।
দোলে মায়াপুরে আসা দুই বিদেশি পর্যটক নোভেল করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারেন সন্দেহে তাঁদের লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। শুক্রবার এক জনের রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ আসায় কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন মায়াপুর ইস্কন কর্তৃপক্ষ। অন্য জনের রিপোর্ট আজ, শনিবারের মধ্যে পাওয়া যাবে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
করোনা আতঙ্কের মধ্যেই এ বার দোল উৎসব পালন করেছে মায়াপুর-নবদ্বীপ। তবে প্রচুর বিদেশি থাকায় মায়াপুরে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে নজরদারি শিবির খোলা হয়েছিল। ইস্কন সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সেখানে জ্বর ও কাশি নিয়ে আসেন দুই বিদেশি ভক্ত। এক জন অস্ট্রেলিয়া, অন্য জন মালয়েশিয়ার বাসিন্দা। লক্ষণ দেখে সন্দেহ হওয়ায় তাঁদের লালারসের নমুনা পাঠানো হয়। এ দিন জানা গিয়েছে, অস্ট্রেলীয়ের লালারসে ভাইরাস মেলেনি।
ইস্কন সূত্রে জানানো হয়েছে, দোল উপলক্ষে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে হাজার-হাজার দেশি-বিদেশি ভক্তের সঙ্গে নবদ্বীপ মহামণ্ডল পরিক্রমা করেছিলেন ওই দু’জনও। ঠান্ডা-গরমে এবং আট দিন ধরে রাস্তার ধুলো খেয়ে তাঁদের সাধারণ সর্দি-গর্মি হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে। তবে সতর্কতার কারণেই তাঁদের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়। কিন্তু ওই দুই বিদেশি আদৌ করোনায় আক্রান্ত নাকি সাধারণ সর্দি-জ্বরে তা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়ার আগেই যে ভাবে সংক্রমণের কথা চাউর করা হয়েছে তাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে অহেতুক আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
শুক্রবার ইস্কন মায়াপুরের পিআরও ম্যানেজার অলয়গোবিন্দ দাস বলেন, “যে ভাবে বিষয়টি নিয়ে চর্চা হচ্ছে তাতে আমরা মর্মাহত।’’ পাশাপাশি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের ভূমিকাতেও তাঁরা সন্তুষ্ট নন। পিআরও ম্যানেজারের অভিযোগ, ‘‘যে দু’জনের লালারসের নমুনা নেওয়া হল তাঁদের এক জনকে মায়াপুর হাসপাতালে সাধারণ ওয়ার্ডে রাখা হল। আর এক জনকে এমনিই ছেড়ে দেওয়া হল। অথচ সংক্রমণ হয়েছে বলে সন্দেহ হলে বাধ্যতামূলক ভাবে চোদ্দ দিনের জন্য পৃথক ভাবে ‘আইসোলেশন ওয়ার্ড’-এ পর্যবেক্ষণে রাখাই নিয়ম। ওঁদের লালারসের নমুনা যেখানে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হল, এ সব ব্যবস্থাও করা উচিত ছিল। কিন্তু সে সব কিছুই করা হয়নি।”
ইস্কনের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে নদিয়া জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এত কথা বলতে পারব না, খুব ব্যস্ত আছি।” জেলায় করোনা সংক্রান্ত গোটা প্রস্তুতি যিনি দেখছেন, সেই উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-২ অসিত দেওয়ানকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি। আপাতত মায়াপুরে করোনা নিয়ে ইস্কনের তরফে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে? অলয়গোবিন্দ বলেন, “এই জাতীয় গুরুতর সংক্রমণের আশঙ্কার ক্ষেত্রে তো সরকারের উদ্যোগী হওয়ার কথা। আমাদের তাদের নির্দেশ মতো চলব। কিন্তু দু’জনকে নিয়ে সন্দেহের পরে বাকিদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার যে ব্যবস্থা সঙ্গে-সঙ্গে নেওয়া উচিত ছিল, তার কিছুই হয়নি।” স্বাস্থ্য দফতর মায়াপুরে কী বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে? মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “ওখানে নজরদারি চালানো হবে, এ ছাড়া আর কিছু নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy