Advertisement
E-Paper

উন্নয়নের পথ চেয়ে থাকে চরমেঘনা

বাংলাদেশ সীমান্তের কাঁটাতারের ১২০ নম্বর গেট থেকে কিলোমিটার দেড়েক গেলে গাঁ। তার পশ্চিমে কাঁটাতারের বেড়া, পুব দিকে সীমান্ত বরাবর মাথাভাঙা নদী।

কল্লোল প্রামাণিক

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৪০

গাঁয়ে বিদ্যুৎ এসেছে সাত বছর আগে। তাও বহু দিনের চেষ্টার পরে। বছরখানেক আগে মেঠো পথে পিচ পড়েছে। অর্ধেকটা রাস্তার কাজ চলছে। আর, সেই পথেই ভোট আসছে কাঁটাতার পেরনো চরমেঘনায়।

বাংলাদেশ সীমান্তের কাঁটাতারের ১২০ নম্বর গেট থেকে কিলোমিটার দেড়েক গেলে গাঁ। তার পশ্চিমে কাঁটাতারের বেড়া, পুব দিকে সীমান্ত বরাবর মাথাভাঙা নদী। পরিচয়পত্র জমা দিয়ে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর অনুমতি নিয়ে তবে যাওয়া।

চরের বাসিন্দা অন্তত বারোশো। বেশির ভাগ দিনমজুর। তাঁরা জানান, ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্যন্ত তাঁদের ভোট দিতে তারকাঁটা পেরিয়ে প্রায় দুই কিলোমিটার উজিয়ে মেঘনা প্রাথমিক স্কুলে যেতে হত। বছর সাতেক আগে থেকে গ্রামের প্রাথমিক স্কুলেই নতুন বুথ খোলা হয়। এ বার ভোটার মোট ৫৪৫ জন। সেই ভোট যোগ হবে মূল ভূখণ্ডের মেঘনা গ্রামের ভোটের সঙ্গে। ২০২ নম্বর চরমেঘনা বুথ ও ২০৩ নম্বর মেঘনা বুথ মিলিয়ে ১০৫৪ জন নির্ধারণ করবেন এক পঞ্চায়েত প্রার্থীর ভাগ্য।

প্রবীণ সুনীল মণ্ডলের আক্ষেপ, “সত্তর বছর আগে দেশ স্বাধীন হলেও আমরা এখনও পরবাসী। সন্ধ্যার পরে কাঁটাতারের গেট বন্ধ হয়ে গেলে বিচ্ছিন্ন। ক’বছর আগেও বিদ্যুৎ, রাস্তা, জলের চরম সমস্যা ছিল। এক হাঁটু কাদা পেরিয়ে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে হাইস্কুলে যেতে হত ছেলেমেয়েদের। রাতে লম্ফের আলো ছিল ভরসা। ভোটের আগে নেতার আনাগোনা হলেও পরে তাঁদের পাত্তা মেলে না।”

গ্রামের সাবিত্রী মণ্ডল, বন্দনা বিশ্বাস, শ্যামল মণ্ডল জানান, রাত নামলে তখন আর কোনও নেতা নয়, সীমান্তরক্ষী বাহিনীই তাঁদের সহায়। অসুখ থেকে প্রসব যন্ত্রণা—তারাই নিজেদের গাড়িতে করে হাসপাতালে পৌঁছে দেয়। সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক সমরেন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য দাবি করেছেন, “ভোটের আগেও যেমন ওই গ্রামে গিয়েছি, ভোটের পরেও খোঁজখবর রাখি।”

এ বার ওই গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে তৃণমূল, বিজেপি ও সিপিএম— তিন দলই প্রার্থী দিয়েছে। তৃণমূলের প্রার্থী বুলুরানি মণ্ডলের দাবি, “বিধানসভা নির্বাচনের আগে যেমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তেমনই কাজ করেছেন আমাদের দলের বিধায়ক মহুয়া মৈত্র। দেড় বছর আগে গ্রামের পাকা রাস্তা হয়েছে, পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে তৈরি হয়েছে সজলধারা। এই ভোটে জিতলে উন্নয়নের বাকি কাজগুলোও সম্পন্ন করা হবে।” পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপি প্রার্থী, গ্রামেরই বাসিন্দা অরুণ সর্দারও মেনে নেন, গত দু’এক বছরে রাস্তাঘাটের উন্নতি হয়েছে। তবে চরের মানুষের প্রধান দাবি, কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে গ্রাম ঘিরে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হোক। তবেই মিলবে নিরাপত্তা। মহুয়া বলেন, ‘‘বিধানসভা ভোটের আগে চরের ওই গ্রামে গিয়ে কথা দিয়েছিলাম, রাস্তা ও জলের ব্যবস্থা করব। গত দেড় বছরে সেই মতো কাজ এগিয়েছে। আগামী দিনে আরও উন্নয়ন করা হবে।’’ ভোট আসে ভোট যায়, উন্নয়নের পথ চেয়েই তো থাকেন চরবাসী।

development Char Meghna
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy