প্রতীকী ছবি।
নদিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু যুবক সেনাবাহিনীর চাকরিতে যোগ দেন। বিশেষ করে করিমপুর বা তেহট্ট এলাকায় অনেক প্রত্যন্ত গ্রামে এটা অনেকটা পরম্পরার মতো হয়ে গিয়েছে। সীমান্তে পাহারার দায়িত্বে থাকাকালীন এর আগে অনেকে দেশের জন্য শহীদও হয়েছেন। প্রতিবার নতুন করে কোনও জওয়ানের মৃত্যু হলে সেই পরিবারগুলির ক্ষত আবার যেন তাজা হয়ে যায়। বারামুলায় পাক সেনার গুলিতে তেহট্টের যুবক সুবোধ ঘোষের মৃত্যুর পরেও সেটাই হয়েছে।
২০১৭ সালের মার্চ মাসে ছত্তীশগঢ়ে মাওবাদীদের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন করিমপুরের সিআরপিএফ জওয়ান অরূপ কর্মকার। ২০১৮ সালের মার্চে মনিপুরে মাইন ফেটে মৃত্যু হয়েছিল পলাশিপাড়ার পাঁচদাড়া গ্রামের সেনা জওয়ান অভিজিৎ মণ্ডলের। ওই বছরের ডিসেম্বরেই মাসে জম্মু -কাশ্মীরে পাক সেনার গুলিতে মৃত্যু হয় হোগলবেড়িয়ার বালিয়াশিশার বিএসএফ জওয়ান প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি-হামলায় ৪৫ জন সিআরপিএফ জওয়ান মধ্যে শহীদ হন পলাশিপাড়ার হাঁসপুকুরিয়া গ্রামের ৯৮ নম্বর ব্যাটেলিয়নের জওয়ান সুদীপ বিশ্বাস। হোগলবেড়িয়ার মৃত জওয়ান প্রসেনজিতের মা নমিতা বিশ্বাস এ দিন কেঁদে ফেলে জানান, ‘‘যাঁর সন্তান অসময়ে চলে যায় একমাত্র তাঁরাই কষ্টটা অনুভব করতে পারেন। বুকের ভিতরটা সবসময় জ্বলে।’’ তবে এখনও ভেঙে পড়েননি প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে নিহত সিআরপিএফ জওয়ান অরূপ কর্মকারের বাবা অসিত কর্মকার। শনিবার তিনি বলেন, “হাজার ঝুঁকি থাকলেও দেশের জন্য যুবকেরা আরও বেশি সেনাবাহিনীতে যোগ দেবেন, এটাই স্বাভাবিক।” এবং সেটাই কিন্তু সত্যি এই সব এলাকায়। এখানে গ্রামগুলিতে মাঠে দিনভর শরীরচর্চা করেন বহু যুবক। লক্ষ্য, সেনাবাহিনীতে চাকরি পাওয়া। তাঁদের এক জন করিমপুরের তুহিন মণ্ডল জানান, সীমান্তের বেশিরভাগ মানুষ কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল। কষ্ট করে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শেখান অভিভাবকেরা। মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিকের পর অধিকাংশ ছেলেমেয়ে নিজে প্রতিষ্ঠিত হতে এবং বাবা-মায়ের পাশে দাঁড়াতে চাকরির খোঁজ করে। এখানে যুবকদের মধ্যে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার ঝোঁক বেশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy