Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
River Erosion

River erosion: ভাঙনের পথ ধরেই গ্রামে ঢুকছে নদীর জল

বহু বাড়িতেই ঘরের মধ্যে এক হাঁটু জল। বাড়ি ছেড়ে কেউ কেউ  আশপাশে উঁচু জায়গায় উঠে গেলেও বাড়ি ছেড়ে আসতে চাইছেন না অনেক গ্রামবাসীরা।

জলবন্দি গ্রাম। নিজস্ব চিত্র

জলবন্দি গ্রাম। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ফরাক্কা শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২১ ০৬:৩০
Share: Save:

ভাঙনের দোসর হল বন্যা। ভাসল ফরাক্কার তিন গ্রামের প্রায় দুশো বাড়ি। জলবন্দি অন্তত ৭০০ মানুষ। এ বার গঙ্গার পাড় ভেঙেই এই বন্যা। কুলিদিয়ার ও পার সুজাপুর ও হোসেনপুরের একটি পাড়া জলের তলায়। ফরাক্কা বাঁধ লাগোয়া এই তিন গ্রামে ভাঙন ছিলই। সেই নদী পাড়ের ভাঙনেই কাটান দিয়ে জল ঢুকতে শুরু করে গ্রামের মধ্যে রবিবার সন্ধ্যে থেকেই। ক্রমশ সে জল বাড়তে বাড়তে দুশো’রও বেশি বাড়ি জল বন্দি হয়ে পড়েছে বুধবার বিকেলে। গ্রামের রাস্তা প্রায় হাঁটু জলের নীচে।

ফরাক্কায় গঙ্গার জল বিপদসীমা ছাড়িয়ে যাওয়ায় রবিবার সন্ধ্যে থেকেই পাড়ের ভাঙনের ফাঁক ফোকড় দিয়ে জল ঢুকতে শুরু করে বিভিন্ন পাড়ার মধ্যে। বুধবার বিকেলে ফরাক্কার গঙ্গায় ১.৬৮ মিটার উপর দিয়ে বইছে জল। জল আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে ফরাক্কা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ।

স্বভাবতই বন্যার পাশাপাশি ভাঙনের আশঙ্কাও বাড়ছে ফরাক্কার ওই তিন গ্রামে। ফরাক্কার নয়নসুখ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সুলেখা মণ্ডল বলেন, “কুলিদিয়ারে ভাঙনের ফলেই কাটান দিয়ে জল ঢুকে প্রায় দুশো বাড়ি প্লাবিত হয়েছে। রাস্তাগুলি ডুবে যাওয়ায় গ্রামবাসীদের যাতায়াতের জন্য স্থানীয় বিধায়কের কাছ থেকে পাওয়া ৩ টি নৌকো দেওয়া হয়েছে।

বহু বাড়িতেই ঘরের মধ্যে এক হাঁটু জল। বাড়ি ছেড়ে কেউ কেউ আশপাশে উঁচু জায়গায় উঠে গেলেও বাড়ি ছেড়ে আসতে চাইছেন না অনেক গ্রামবাসীরা। ত্রাণের জন্য বিডিওকে জানানো হয়েছে। যদিও ত্রিপল ছাড়া এখনও কোনও ত্রাণ মেলেনি।”

এ পর্যন্ত কুলিদিয়ারের সূর্যপাড়া, ঠাকুরদাস পাড়া, মেঘনাথ মণ্ডল পাড়া, পার সুজাপুরের মাঠ পাড়া ও হোসেনপুরের কিছু অংশে জল ঢুকেছে। রাস্তাগুলি ডুবে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ।

বানভাসি কয়েকটি পরিবারকে হোসেনপুর প্রাথমিক স্কুলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কার্যত জলবন্দি গ্রামে অনেকেই ঘরের মধ্যেই চৌকি ও মাচার উপর দিন কাটাচ্ছেন।

তার মধ্যেই চলছে বিড়ি বাঁধার কাজ। তপন মণ্ডল, সুভাষ মণ্ডল, মঞ্জু মণ্ডল, দীনেশ মণ্ডল, নিবারণ মণ্ডল, পঙ্কজ চৌধুরী, সকলের বাড়িই জলে ভাসছে। রান্না করার অবস্থাতেও নেই অনেকেই।
তপন মণ্ডল বলছেন, “কোথায় যাব? দু’দিন জলের মধ্যেই থাকলাম। কিন্তু জল যে ভাবে বাড়ছে তাতে পরিবার নিয়ে আর থাকা যাবে না। অনেকেই উঁচু জমিতে উঠে চলে গিয়েছেন।”

হোসেনপুরের পঙ্কজ চৌধুরীর বলছেন, “ভাঙনে কাটানটা কেটে যাওয়াতেই গ্রামে জল ঢুকতে শুরু করেছে বেশি। সমস্যা বাড়ছে রান্না করে খাওয়া দাওয়া নিয়ে।” মঞ্জু মণ্ডল বলছেন, “খাবার ও পানীয় জলের সমস্যাটাই বেশি। রান্না করার পরিস্থিতিই নেই। চিড়ে, মুড়ি যা পারছি কিনে আনছি।”

গ্রামে জল ঢুকতে শুরু করেছে তিন দিন থেকে। অথচ ত্রাণের খাবার বলতে কিছুই আসেনি গ্রামে। প্রধান বলছেন, “ত্রিপল এসেছিল, দিয়েছি। কিন্তু এখনও কোনও খাবার পাঠানো হয়নি। পঞ্চায়েতের পক্ষে অত মানুষকে খাবার দেওয়া তো সম্ভব নয়। আমি বিডিওকে জানিয়েছি শুকনো খাবার পাঠাতে। আজও লোক পাঠানো হয়েছিল ভরা গঙ্গা পেরিয়ে ফরাক্কার ব্লক অফিসে। ”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

River Erosion flood
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE