E-Paper

আবার বারুদের গন্ধ কেন জেলায়

মে মাস জুড়ে উদ্ধার হয়েছে অনেকগুলি বোমা। আটক হয়েছে একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র। কংগ্রেসের দাবি, শুক্রবারও তাদের রানিনগরে দলীয় কার্যালয়ের বোমা ছুড়েছে শাসকদলের আশ্রয়ে থাকা দুষ্কৃতীরা।

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২৩ ০৮:২২
প্রতিদিনই আগ্নেয়াস্ত্র সহ গ্রেফতার হচ্ছে কেউ না কেউ। প্রতীকী ছবি।

প্রতিদিনই আগ্নেয়াস্ত্র সহ গ্রেফতার হচ্ছে কেউ না কেউ। প্রতীকী ছবি।

ভোটের গন্ধ ছড়াতেই কি আবারও বারুদের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে মুর্শিদাবাদ জুড়ে, সে প্রশ্ন উঠেছে সাধারণ মানুষের মনে। প্রায় রোজই আগ্নেয়াস্ত্র সহ গ্রেফতার এবং বোমা উদ্ধারের ঘটনা ঘটছে বিভিন্ন এলাকায়। ডোমকল থেকে রেজিনগর, হরিহরপাড়া থেকে ভরতপুর। জেলার নানা এলাকায় আগ্নেয়াস্ত সহ দুষ্কৃতী গ্রেফতার হয়েছে, উদ্ধার হচ্ছে বোমা। মে মাসেই ১১টি আগ্নেয়াস্ত্র সহ গ্রেফতার হয়েছে ৯ জন যুবক। আর উদ্ধার হয়েছে প্রায় ১৫৭ টি তাজা বোমা। আর এক মাসেরও কম সময়ের এই হিসেবকে ঘিরেই প্রশ্ন উঠছে নানা মহলে। তাহলে কি আবারও বারুদের স্তূপে পরিণত হতে চলেছে মুর্শিদাবাদ। সে ক্ষেত্রে গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে কি ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটতে চলেছে এই জেলায়, এমন নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক মহল থেকে সাধারণ মানুষের মনে। যদিও পুলিশের দাবি, তারা নজরদারি বাড়ানোর ফলে গ্রেফতার হচ্ছে আগ্নেয়াস্ত্র সহ দুষ্কৃতী, উদ্ধার হচ্ছে বোমা। জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, এটা নতুন কোনও ঘটনা নয়, মুর্শিদাবাদে এই সংস্কৃতি চেনা।

তবে কেবল পুলিশকর্তাদের গলাতেই নয়, শাসকদলের নেতার গলাতেও প্রায় একই সুর। জেলা তৃণমূলের প্রবীণ নেতা অশোক দাস বলছেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন কোনও আগ্নেয়াস্ত্র কারও বাড়িতেই রাখতে দেবে না। যা আছে সব নিকেশ হবে। সে যার ঘরেই থাকুক। আর সেই প্রক্রিয়ায় পুলিশ প্রশাসন শুরু করে দিয়েছে।"

যদিও রাজনৈতিক মহলের দাবি, এই আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার সমুদ্র থেকে কয়েক বালতি জল তোলার মতো। কতটা উদ্ধার হল আর কতটা থাকল সেটা বোঝা যাবে শাসকদলের টিকিট বিতরণের পরেই। তা ছাড়া বিরোধীদের মনোনয়ন থেকে ভোট পরবর্তী সময়েও চলবে আগ্নেয়াস্ত্র থেকে বোমার খেলা। জেলা সিপিএমের সম্পাদক জামির মোল্লা বলছেন, "অন্য কিছুই নয়, নির্বাচনকে ঘিরে শাসকের গুন্ডাবাহিনীর সাজসাজো রব। তবে এ বার এগুলি যেমন বিরোধীদের ক্ষেত্রেও ব্যবহার হবে, তেমনই ভাবে নিজের ঘরেও কাজে লাগবে। পঞ্চায়েতের টিকিট বিতরণের সময় বোঝা যাবে কত উদ্ধার হয়েছে আর কতটা বাকি।" তাঁর আরও দাবি, "পুলিশ যা আগ্নেয়াস্ত্র, বোমা উদ্ধার করেছে তার পুরোটা দেখানো হচ্ছে না, অনেকটাই গোপন থাকছে।"

জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, কোনও রকম খামতি রাখা হচ্ছে না। যথেষ্ট চেষ্টা চালানো হচ্ছে আগ্নেয়াস্ত্র থেকে বোমা উদ্ধারে এক এক জনকে ধরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে খোঁজা হচ্ছে সূত্র। আর তাতেই মে মাস জুড়ে উদ্ধার হয়েছে অনেকগুলি বোমা। আটক হয়েছে একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র। কংগ্রেসের দাবি, শুক্রবারও তাদের রানিনগরে দলীয় কার্যালয়ের বোমা ছুড়েছে শাসকদলের আশ্রয়ে থাকা দুষ্কৃতীরা। তৃণমূল তা অস্বীকার করেছে। কিন্তু সব মিলিয়ে জেলার কিছু জায়গা যে বারুদের স্তূপে পরিণত হয়ে রয়েছে তা নিয়ে সন্দেহ নেই। ডোমকলের বাসিন্দারা ঘর পোড়া গরুর মতো সিঁদুরে মেঘ দেখছেন। এখানে পঞ্চায়েত ভোটের দন ১৪ জনের প্রাণ যায়।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Domkal arrest Fire Arms

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy