Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
WAter log

Water log: জল জমলেও নেমে গিয়েছে বহু জায়গাতেই

বেশি বৃষ্টির কারণে পুর এলাকাগুলিতে নিকাশির সমস্যা মাথাব্যথার কারণ হয় পুরকর্তাদের। তা মাথায় রেখেই প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল।

 জলমগ্ন বীজতলা।

জলমগ্ন বীজতলা। ছবি: প্রণব দেবনাথ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২২ ০৫:৪৯
Share: Save:

সকাল থেকেই মেঘলা আকাশ। জেলার নানা প্রান্তে দফায়-দফায় বৃষ্টির জেরে কোনও কোনও নিচু এলাকা জলমগ্ন। চাষের জমিতেও জমেছে জল। দুর্যোগের সম্ভাবনায় আগে থেকেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। আপাতত পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন প্রশাসনিক কর্তারাও।

মঙ্গলবারের পর বুধবারের বৃষ্টিতে জেলার গ্রাম ও শহরের কিছু নিচু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। আগে থেকে নানা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা ছিল। বেশি বৃষ্টির কারণে পুর এলাকাগুলিতে নিকাশির সমস্যা মাথাব্যথার কারণ হয় পুরকর্তাদের। তা মাথায় রেখেই প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। বিভিন্ন পুরসভায় কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছে।

শান্তিপুর পুরসভার নিকাশি সচল রাখতে আগে থেকেই বিভিন্ন নালা পরিষ্কার করা এবং জল জমলে তা বার করার পরিকল্পনা হয়েছিল। এ দিনের বৃষ্টিতে শহরের কিছু নিচু এলাকায় জল জমলেও তা পরে নেমে যেতে থাকে। রানাঘাট শহরেও পুর কর্তৃপক্ষ আগে থেকেই পাম্প, জেনারেটর, আলো ইত্যাদির ব্যবস্থা রেখেছিলেন। সেখানেও সে ভাবে জল জমার খবর নেই। শহরের কিছু নিচু এলাকায় জল জমেছিল ঠিকই, কিন্তু কিছু সময় পরে তা নেমে যায়। জেলাসদর কৃষ্ণনগরে আজাদ হিন্দ সড়ক বৃষ্টির জেরে জলমগ্ন হয়ে পড়ে। বারবার একই সমস্যা দেখা দেওয়ায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা এ দিন রাস্তার জমা জলে জাল ফেলে মাছ ধরে প্রতীকী প্রতিবাদ জানান। এ ছাড়াও পোস্ট অফিস মোড়, কাঁঠালপোতার মতো কিছু নিচু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। করিমপুরে অবশ্য তেমন জল জমেনি। কিন্তু তাহেরপুর শহরের বড় বাজার এলাকা এ দিন বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়ে। দীর্ঘক্ষণ পরেও সেই জল নামেনি। ফলে সমস্যায় পড়েন ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষ সকলেই। বেশ কিছু গ্রামীণ এলাকাতেও জল জমেছে। দিগনগর স্টেশন রোড এলাকায় রাস্তা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। পরে স্থানীয় বাজার কমিটির উদ্যোগে পাম্প বসিয়ে জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়।

কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় গড় বৃষ্টি হয়েছে প্রায় ৮ মিলিমিটার। বৃষ্টির জেরে একাধিক জায়গায় কৃষিজমি জলমগ্ন হয়ে পড়ে। শান্তিপুরের বাবলা এলাকার বোরো ধানের জমিতে জল জমে থাকতে দেখা যায়। চাষিরা কেউ ধান কেটে মাঠে রেখেছিলেন, কেউ বা ধান কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এর মধ্যেই মাঠে জল জমে যাওয়ায় ধান জলে পড়ে রয়েছে। বেশি মজুর নিয়োগ করে তা মাঠ থেকে তোলার চেষ্টা করছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে ক্ষতির আশঙ্কাও করছেন।

কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় প্রায় ৬৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়। মে মাসের শেষের দিকে ধান কেটে ফেলা হয়। তবে দুর্যোগের আশঙ্কার আগে থেকেই অন্তত ৭০-৭৫ শতাংশ পেকেছে এ রকম ধান কেটে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কৃষি আধিকারিকেরও দিন কয়েক মাঠে-মাঠে ঘুরে সেই কাজের তদারকিও করেছেন। প্রায় ৭০ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়ে গিয়েছে বলে দাবি কৃষিকর্তাদের।

নদিয়ার উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) রঞ্জন রায়চৌধুরী বলেন, “আগে থেকেই চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, বোরো ধান ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ পাকলে তা কেটে খামারজাত করা এবং মাঠের জল নালা কেটে বের করার জন্য। অধিকাংশ জমির ফসলই কাটা হয়ে গিয়েছে। এই বৃষ্টিতে খুব বেশি ক্ষতির আশঙ্কা এখনও নেই।” জেলার বন্যা এবং ভাঙনপ্রবণ এলাকাগুলির উপরেও নজর রাখছে প্রশাসন। তবে রাত পর্যন্ত কোথাও কোনও উদ্বেগের পরিস্থিতি নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

WAter log Nadia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE