Advertisement
E-Paper

বছর পার, হল না জলপ্রকল্প

লাল ফিতের ফাঁসে আটকে রয়েছে জল প্রকল্প। সরকারের যে আঠারো মাসে বছর, তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন নবগ্রাম এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। ২০১৫ সালের ৯ মার্চ ‘ডিষ্ট্রিক্ট ওয়াটার অ্যান্ড স্যানিটেশন’ মিশনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, নবগ্রামের ১০৮টি মৌজায় ভাগীরথীর পরিশ্রুত জল সরবরাহ করা হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৬ ০২:৪৯

লাল ফিতের ফাঁসে আটকে রয়েছে জল প্রকল্প। সরকারের যে আঠারো মাসে বছর, তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন নবগ্রাম এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। ২০১৫ সালের ৯ মার্চ ‘ডিষ্ট্রিক্ট ওয়াটার অ্যান্ড স্যানিটেশন’ মিশনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, নবগ্রামের ১০৮টি মৌজায় ভাগীরথীর পরিশ্রুত জল সরবরাহ করা হবে। তার জন্য খরচ হবে প্রায় ১৬০ কোটি টাকা। কিন্তু সেই প্রকল্পের প্রাথমিক কাজটুকুই শুরু করতে পারল না জেলা প্রশাসন। নবগ্রাম বিধনাসভা সিপিএমের দখলে। সিপিএম বিধায়ক কানাই মণ্ডলের অভিযোগ, জেলা প্রশাসন তৃণমূল নেতাদের কথা শুনে ওই প্রকল্প বাস্তবায়ন করার ব্যাপারে অহেতুক শৈথিল্য দেখাচ্ছে। ফলে ভরা গরমে জলকষ্টে দিন কাটাতে হচ্ছে ওই ব্লকের হাজার-হাজার মানুষকে।

ব্লকের কোনও কোনও মৌজার বাসিন্দাদের প্রায় এক কিলোমিটার মেঠো পথ উজিয়ে পানীয় জল সংগ্রহ করতে হচ্ছে। কারণ, গ্রামের নলকূপগুলি যে খারাপ হয়ে ঠাঁই দাঁড়িয়ে রয়েছে। নতুনপাড়ার নবকুমার মহলদার পেশায় দিনমজুর। কাকভোরে বাড়ি থেকে কিলোমিটার খানেক হেঁটে বহরমপুর-পাঁচগ্রাম রাজ্য সড়কের ধারে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের নলকূপ তাঁকে জল আনতে হয়। পাশের মহলদারপাড়ারও অনেকেই রাজ্য সড়কের ধারের ওই নলকূপ থেকে সকাল-বিকেলে জল আনছেন। একটু বেলা হলেই কলতলায় শ’খানেক লোকের ভিড় জমে যায়। জল আনতে গিয়ে কেটে যায় ঘণ্টাখানেক।

গরম সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নবগ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকায় দ্রুত জলস্তর নামছে। ১০০ ফুট মাটি খুঁড়লে তবেই মিলছে জল। ফলে নলকূপ বসানোর খরচ গ্রামের ছাপোষা মানুষের পক্ষে অত খরচ করে বাড়িতে নলকূপ বসানো সম্ভব নয়।

কানাই মণ্ডল জানান, তিনি জেলা প্রশাসনকে জলপ্রকল্প তৈরির প্রস্তাব দিতেই তা অনুমোদন লাভ করে। স্থির হয় অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ওই প্রকল্প বাস্তবায়িত করা হবে। কিন্তু সে সব ফাইলেই থেকে গেল। তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমি বিরোধী দলের বিধায়ক বলে প্রশাসন ওই প্রকল্প শুরুর ব্যাপারে কোনও গা করল না। তৃণমূল নেতাদের সম্মতি ছাড়া প্রশাসনিক কর্তারা কোনও কাজ করছে না।’’

মুর্শিদাবাদ-জিয়াগঞ্জ ব্লকের ডাহাপাড়া পঞ্চায়েত এলাকার কিরীটেশ্বরী গ্রামে ভাগীরথীর জল শোধন প্রকল্প তৈরি করা হবে। সেখান থেকেই পাইপ লাইনে জল পৌঁছে যাবে নবগ্রামের প্রত্যন্ত গ্রামে। সিপিএমের স্থানীয় নেতা মহম্মদ সিরাজুল ইসলাম জানান, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মুখ্য বাস্তুকার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিককে প্রকল্পের রিপোর্ট তৈরির নির্দেশ দেন। প্রকল্পের কাজ শুরু করার জন্য তিনি কলকাতা ও বহরমপুরে অবস্থিত জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কর্তাদের তাগাদা দিয়েছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কাজ শুরু হল না।

দফতরের সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার অজয় কুণ্ডু বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে জেনেছি, এখনও ওই প্রকল্পের ‘ডিপিআর’ তৈরি হয়নি।’’ মুর্শিদাবাদ-জিয়াগঞ্জ এলাকার মধ্যে রয়েছে ডাহাপাড়া পঞ্চায়েত। এ দিকে জলপ্রকল্প তৈরি করে মুর্শিদাবাদ-জিয়াগঞ্জ এলাকার বিস্তীর্ণ এলাকায় পানীয় জল সরবরাহ করে থাকে পিএইচই দফতর। সেক্ষেত্রে নতুন করে ডাহাপাড়ায় জলপ্রকল্প তৈরি করা নিয়েই আধিকারিকদের মধ্যে বিভ্রান্তি রয়েছে। ‘ডিষ্ট্রিক্ট ওয়াটার অ্যান্ড স্যানিটেশন’ মিশনের সভাপতি কংগ্রেসের শিলাদিত্য হালদার বলেন, ‘‘৯ মার্চ ওই কমিটির শেষ বৈঠক হয়। ফলে ওই প্রকল্প কোন পর্যায়ে রয়েছে তা বলা যাবে না। প্রশাসনিক গাফিলতির জেরে অনেক প্রকল্পের কাজ থমকে রয়েছে।’’

Water project red trap water problem
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy