Advertisement
E-Paper

ভেসেই দিনযাপন ধুলিয়ানের

বর্ষার শুরুতে ক’দিনের টানা বৃষ্টিতেই এই বিপত্তি। এ রকম চললে পরিস্থিতি যে আরও খারাপ হয়ে উঠবে শুক্রবার তা জানিয়ে দিয়েছেন ধুলিয়ানের পুরকর্তা। জমা জলের সঙ্গে যোগ হয়েছে ডেঙ্গির আতঙ্ক। পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের কপালে তাই লম্বা ভাঁজ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৮ ০১:৪৩
ডুবুডুবু নলকূপ। বেলডাঙায়।

ডুবুডুবু নলকূপ। বেলডাঙায়।

জলে ভাসছে অনুপনগর ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র। ভাসছে ধুলিয়ান শহরের ৭টি ওয়ার্ড। ঘোলা জলে বানভাসির চেহারা সর্বত্র। ধুলিয়ানের প্রায় হাজার ত্রিশেক মানুষ এখন জল-স্ফীতির ভয়ে কাঁপছেন।

বর্ষার শুরুতে ক’দিনের টানা বৃষ্টিতেই এই বিপত্তি। এ রকম চললে পরিস্থিতি যে আরও খারাপ হয়ে উঠবে শুক্রবার তা জানিয়ে দিয়েছেন ধুলিয়ানের পুরকর্তা। জমা জলের সঙ্গে যোগ হয়েছে ডেঙ্গির আতঙ্ক। পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের কপালে তাই লম্বা ভাঁজ।

গত বছর ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল সরকারি হিসেবে প্রায় ১২০০। এর মধ্যে শমসেরগঞ্জ ও ধুলিয়ানের আক্রান্তের সংখ্যা ছিল জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি, ২৪৩ জন। সরকারি হিসেবে অস্বীকার করা হলেও ধুলিয়ানের শহরেই ‘অজানা জ্বরে’ অন্তত ১০ জনের মৃত্যুর কথা মানছেন পুর কর্তারা।

বৃহস্পতিবার থেকে টানা বৃষ্টি চলছে ধুলিয়ানে। শহরের জলমগ্ন এলাকাগুলির মধ্যে রয়েছে ৩, ৫, ৬, ১১, ১২, ১৩ এবং ১৪ নম্বর ওয়ার্ড। বৃষ্টির এই জমা জল কবে সরিয়ে ফেলা যাবে তার নিশ্চিত নয়। তবে ধুলিয়ান পুরসভার অভিজ্ঞতা বলছে, সবে বর্ষা শুরু, দুর্ভোগ আরও বাড়বে।

ধুলিয়ানের পুরপ্রধান সুবল সাহাও বলেন, ‘‘জমা জলে ধুলিয়ান শহরের পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটবে, এমনই আশঙ্কে। কারণ ইতিমধ্যেই শহরে বড় নিকাশি নালার (হাই ড্রেন) নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। হিউম পাইপ দিয়ে সে কাজ গঙ্গার পাড় থেকে পুরসভা পর্যন্ত সম্পূর্ণ হয়েছে। ফলে জমা জল শহর থেকে গঙ্গা দিয়ে বেরোতে পারছে না।

তিনি স্বীকার করছেন, গত বছর ডেঙ্গির দাপট ছিল এই এলাকায়। অজানা জ্বরে মৃত্যুর সংখ্যাও প্রায় ১০ থেকে ১২ জন। জমা জলই আঁতুড় ঘর ডেঙ্গির। যদিও পুরসভা সতর্ক আছে। তবু আশঙ্কা কাটছে না।

জলে ডুবেছে শহরের অনুপনগর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বহির্বিভাগ। শুক্রবার অবশ্য ঘরে জমা জলের মধ্যেই রোগী দেখেছেন চিকিৎসকেরা। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নিচের তলায় সমস্ত ঘরই জলে ভাসছে। এমনকি ওষুধের স্টোর রুমও। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক গোলাব হোসেন বলেন, ‘‘খবর দেওয়া হয়েছে পূর্ত দফতরে, যাতে স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে জলটা সরানো যায় অন্তত। জমা জল বড় সমস্যা ধুলিয়ানের। তার ফলেই বেশি মাত্রায় ডেঙ্গি ছড়িয়েছিল গত বছর, সে আশঙ্কা ক্রমশ বাড়ছে।”

এদিকে জমা জলের সমস্যায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কামাথ পল্লি। তিন নম্বর ওয়ার্ডের দর্জি পাড়াতেও জমা জলের সঙ্গে আবর্জনা একাকার হয়ে দুর্বিসহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পুরপ্রধানের নিজের এলাকা ৬ নম্বর ওয়ার্ডের গুড়িপাড়াও থই থই জল।

ধুলিয়ানের চেহারার সঙ্গে মিল রয়েছে বেলডাঙার মকরামপুরেরও। নিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে যাওয়ায় সেখানেও প্রায় হাজার দুয়েক মানুষ কোমর জলের নীচে। সেই জল ভেঙেই দিনযাপন করছেন তাঁরা। একটি অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্র গত দু’দিন ধরে বন্ধ। বন্ধ প্রাথমিক স্কুল। ছাত্ররা না আসায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে দু-দু’টো হাইস্কুলও। জল জমেছে বেলডাঙা পুরএলাকার ১৪ নম্বর ও ১৩ ন‌ম্বর ওয়ার্ডেও। সেখানেও বাড়ির বাইরে পা দেওয়ার সুযোগ প্রায় নেই।

শুক্রবার সকালে মকরামপুর গ্রামে গিয়ে দেখা‌ গেল, রাস্তা-মাঠ মিশে গিয়েছে। সে পথে মোটরবাইক কিংবা টোটো চলাচল স্তব্ধ। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ভেঙে পড়েছে লরিও। মাড্ডা পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান মানসী মণ্ডল বলছেন, ‘‘এ সমস্যা আর মেটার নয়। ক্রমাগত আবেদন জানিয়ে চলেছি। প্রশাসনের ঘুম ভাঙলে তো!’’

Rain Underwater
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy