বিয়ের পর থেকে অশান্তি লেগেই ছিল। কাজ না করে মদ খেয়ে পড়ে থাকতো স্বামী। যা দু’এক পয়সা রোজগার, তা-ও জুয়া খেলেই উড়িয়ে দিত। এ সব মেনে নিতে পারতেন না চেমিলি বিবি। সংসারে ঝগড়াঝাটি ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা।
সোমবার সন্ধ্যায় বর মাতাল হয়ে বাড়িতে পা ফেলতেই রাগে ফেটে পড়েন বছর আঠাশের তরুণী। গভীর রাত পর্যন্ত অশান্তি গড়ায়। অভিযোগ, মেয়েমানুষের এত গোসা মেনে নিতে পারেনি শ্বশুরবাড়ির লোকজন। শুরু হয় অত্যাচার। হাত-মুখ বেঁধে সারা গা ব্লেড দিয়ে চিরে দেয় তারা। তাতেও আঁশ মেটেনি। শেষে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় ছেলের বৌয়ের।
সোমবার সালার থানার কুলুরি গ্রামের ঘটনা। পড়শিরাই ওই তরুণীকে গুরুতর জখম অবস্থায় গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে ওই মহিলাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় কান্দি মহকুমা হাসপাতালে। চিকিৎসা চলাকালীনই মৃত্যু হয় চেমিলির। তবে মারা যাওয়ার আগে তিনি পুলিশকে জানিয়ে গিয়েছেন ঠিক কী ঘটেছিল সোমবার রাতে। চেমিলি বলেন, “মদ খাওয়া, জুয়া খেলার প্রতিবার করতাম। ওর আয়ের টাকা সংসারে দিত না। তিন ছেলে নিয়ে কী ভাবে সংসার চালাব, তা নিয়ে বলতে গেলেই বেধড়ক মারধর করে। রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় আমার মুখে কাপড় বেঁধে ব্লেড দিয়ে সারা গা চিরে দেয়। তার পর তেল ঢেলে আগুন ধড়িয়ে দেয়। ছেলেদের চিৎকারে পড়শিরা এসে উদ্ধার করেছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর বছর দশেক আগে বড়ঞা থানার কার্টনা গ্রামের বাসিন্দা চেমিলির সাথে কুলুরি গ্রামের ছেলে ট্রাক্টরচালক মেগু শেখের বিয়ে হয়। বিয়ের বছর খানেক পর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি লেগেই থাকত। ওই যুবক যা রোজগার করতো, তার বেশিটাই মদ আর জুয়ার পিছনে উড়িয়ে দিত।
‘‘মেয়েটা যদি একবারও আমাকে জানাত...,’’ কান্নায় ভেঙে পড়েন চামেলির বাবা ইসরাইল চৌধুরী। মঙ্গলবার সালার থানায় তাঁর স্বামী মেগু শেখ ও শাশুড়ি জিরিয়া বিবির বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করেছেন প্রৌঢ়। পরে ইসরাইল চৌধুরী বলেন, “পরিকল্পিত ভাবে খুন করেছে ওঁরা। মেয়ে যদি আগে অত্যাচারের কথা জানাত, তা হলে এমন ঘটত না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy