Advertisement
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

গিজ়ার ফেটে মৃত্যু স্নানঘরে

মৃত মহিলার নাম অনিতা দাস (৪৬)। বাড়ির শৌচাগারে তাঁর দগ্ধ দেহ মিলেছে। পাশেই দেওয়ালে লাগানো গিজ়ারটি ফেটে অনেকটা নীচে ঝুলে পড়েছে। বিস্ফোরণের ধাক্কায় তার উপরের প্লাস্টিকের ঢাকনা ফেটে চৌচির। মাঝেমাঝেই সেখান থেকে আগুনের ফুলকি বের হচ্ছে।

সেই ফাটা গিজ়ার। নিজস্ব চিত্র

সেই ফাটা গিজ়ার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:৪৯
Share: Save:

মধ্যবিত্ত পরিবারেও গিজ়ার এখন আর বিলাসদ্রব্য নয়, তা হল দৈনন্দিন প্রয়োজন। দোকান থেকে শুরু করে শপিং সাইটে হরেক সংস্থার গিজ়ারে হরেক রকম ‘অফার’। সংসারে প্রয়োজনীয় উপকরণের তালিকায় রেফ্রিজারেটর, টেলিভিশনের পাশাপাশি নয়া জমানায় ঠিক যেমন ওয়াশিং মেশিন, এসি বা কিচেন চিমনি জায়গা করে নিয়েছে ঠিক তেমনই এসেছে গিজ়ার।

কিন্তু যে কোনও বৈদ্যুতিন সামগ্রীতে কলকব্জা বিকল হয়ে আচমকা দুর্ঘটনার একটা আশঙ্কা থেকেই যায়। তেমনই অঘটন ঘটে গেল গত রবিবার, কৃষ্ণগঞ্জে। সেখানে‌ দেওয়ানের বেড় এলাকার দাস পরিবারে গিজ়ার কেনার পর থেকে রক্ষণাবেক্ষণ ঠিকঠাক হয়নি বলে অভিযোগ। বছর তিনেক আগে স্থানীয় সংস্থার ওই গিজ়ারটি কেনা হয়। কিন্তু পরিবার সূত্রের খবর, মাঝে এক বারও গিজ়ারের ‘সার্ভিসিং’ হয়নি। অভিযোগ, রবিবার সেই গিজ়ার ফেটে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় পরিবারের কত্রীর। প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে, অটো-কাট বা সেন্সরের পাশাপাশি সেফটি ভালব খারাপ হয়েই এই বিপত্তি।

মৃত মহিলার নাম অনিতা দাস (৪৬)। বাড়ির শৌচাগারে তাঁর দগ্ধ দেহ মিলেছে। পাশেই দেওয়ালে লাগানো গিজ়ারটি ফেটে অনেকটা নীচে ঝুলে পড়েছে। বিস্ফোরণের ধাক্কায় তার উপরের প্লাস্টিকের ঢাকনা ফেটে চৌচির। মাঝেমাঝেই সেখান থেকে আগুনের ফুলকি বের হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, জল গরম করার সময় গিজ়ারটি ফেটে যায়। সেখান থেকে আগুন ধরে যায় মহিলার শাড়িতে। পরিবারের লোক যখন শৌচাগারের দরজা ভেঙে তাঁকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেন তখনও তাঁর কাপড়ের কিছুটা অংশ জ্বলছিল। গোটা শরীর পুড়ে কালো গয়ে গিয়েছিল। পুলিশ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।

পারিবারিক সূত্রে খবর, অনিতাদেবীর দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। স্বামী নিতাই দাসের মাজদিয়া বাজারে মনিহারির দোকান আছে। রবিবার সন্ধ্যায় সেখানেই ছিলেন নিতাইবাবু। বাড়িতে ছিলেন অনিতাদেবী ও তাঁর বৃদ্ধা শাশুড়ি ব্রজবালাদেবী। তিনি ঘরের দরজা- জানালা বন্ধ করে টিভি দেখছিলেন। বেশ কিছু ক্ষণ অনিতাদেবীর কোনও সাড়া শব্দ না পেয়ে খোঁজ করতে আসেন লাগোয়া বাড়ির বাসিন্দা তাঁর খুড়তুতো জা চামেলি দাস। খোঁজাখুঁজি করতে-করতে শৌচাগারের সামনে এসে দেখেন, ভিতর থেকে দরজা বন্ধ এবং ভিতর থেকে ধোঁয়া ও পোড়া গন্ধ বের হচ্ছে। খবর পেয়ে ছুটে আসেন আর এক জা রূপা দাস। শৌচাগারের প্লাস্টিকের দরজা সকলে মিলে ধাক্কা দিতে থাকেন। দরজা খুলে যায়। তাঁরা দেখতে পান, অনিতাদেবী মাটিতে পড়ে রয়েছেন। সমস্ত শরীর পুড়ে গিয়েছে। আর দেওয়াল থেকে খুলে পাইপের সঙ্গে ঝুলছে গিজ়ারটি।

আরও পড়ুন: দেখভাল না হলেই বিপদের আশঙ্কা গিজারে

পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, কেনার পর থেকে এক বারও গিজ়ারটির সার্ভিসিং করা হয়নি। খুব কম ব্যবহার হত। অনিতাদেবী একাই সেটি ব্যবহার করতেন। গোটা গরমকাল গিজ়ার এক বারের জন্যও ব্যবহার হয়নি। গত দু’-এক দিন হল অনিতাদেবী সেখানে জল গরম করা শুরু করেছিলেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Death Explosion Geyser Woman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy