বাড়ি থেকে সামান্য দূরের খেতে ছাগল চরাতে গিয়েছিলেন জলঙ্গির বছর চৌত্রিশের এক মহিলা। সেখানেই তাঁকে ধারাল হাঁসুয়া দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপাল দুষ্কৃতীরা। বৃহস্পতিবার বিকেলে জলঙ্গির ওই ঘটনার পরে ওই মহিলাকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানান, হাঁসুয়ার আঘাতে ওই মহিলার জিভ, মুখ, চিবুক ও মাথার পিছনে গভীর ক্ষত হয়েছে। শুক্রবার ওই বধূর এক আত্মীয় জলঙ্গি থানায় খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেছেন। ডোমকলের এসডিপিও অমরনাথ কে বলেন, ‘‘কেন ওই মহিলাকে এমন ভাবে জখম করা হল তা আমাদের কাছেও স্পষ্ট নয়। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জলঙ্গির হুকাহারা গ্রামের সরু পিচ রাস্তার পাশে পাটকাটির বেড়া দেওয়া এক কামরার ঘর। সেখানেই দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে থাকেন ওই মহিলা। স্বামী রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজে ভিন রাজ্যে থাকেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে বাড়ি থেকে সামান্য দূরে খেতে ছাগল চরাতে গিয়েছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিল তাঁর বছর দশেকের মেয়ে। কিছুক্ষণ পরে সে বাড়ি চলে আসে। তারপরই দুষ্কৃতীরা ওই মহিলার উপর চড়াও হয়। ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে খেতে কাজ করেছিলেন মহবুল ইসলাম। ওই মহিলার চিৎকারে তিনি ছুটে আসেন। মহবুলের কথায়, ‘‘গিয়ে দেখি মহিলা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। একজনকে দ্রুত পাট খেতেও ঢুকে যেতে দেখি। কিন্তু তাকে ধাওয়া করেও ধরতে পারিনি।’’ এরপরেই ওই মহিলাকে প্রথমে সাদিখাঁড়দেয়াড় গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলা এখন বিপন্মুক্ত। ঘটনার পর মাত্রাতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণ হওয়ায় তাঁকে দু’বোতল রক্ত দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু কেন ওই মহিলাকে এ ভাবে আক্রমণ করা হল?
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, সেই প্রশ্নের উত্তর তাঁরাও খুঁজছেন। বাড়ির লোকজনও এ ব্যাপারে কিছুই বলতে পারছেন না। জখম ওই মহিলার এক আত্মীয় জানান, ঘটনার পর থেকে মহিলা কথা বলতে পারছেন না। পরিজনদের আকারে ইঙ্গিতে তিনি বোঝাতে পেরেছেন যে, তাঁকে হাঁসুয়া দিয়ে কোপানো হয়েছে। কিন্তু কেন তা তাঁরাও কেউ জানেন না। ওই আত্মীয়ের কথায়, ‘‘লেখাপড়া জানলেও ও হয়তো লিখে কিছু বোঝাতে পারত!’’ তবে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান বেশ কয়েকটি কারণে এমনটা ঘটে থাকতে পারে। কী রকম? পুলিশের অনুমান, কারও কু-প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় কেউ হয়তো মহিলার উপর এ রকম অত্যাচার করেছে। তাছাড়া মহিলা হয়তো কোনও অপরাধের সাক্ষী হয়ে পড়েছিলেন। তাই দুষ্কৃতীরা তাঁকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন।
হাসপাতালে বসে মহিলার শাশুড়ি সানোয়ারা বিবি বলেন, ‘‘বৌমাকে কে এমন করল, আমরা বুঝতে পারছি না। কোনও কারণও খুঁজে পাচ্ছি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy