Advertisement
E-Paper

মেয়েদের নিয়ে গঙ্গা-ঝাঁপ মায়ের

জঙ্গিপুর গাড়িঘাট এলাকায় শনিবার বেলা সওয়া দশটা নাগাদ এই ঘটনায় হতবাক গোটা শহর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:১৩
শোকার্ত পরিবার: জঙ্গিপুরে। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়

শোকার্ত পরিবার: জঙ্গিপুরে। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়

দুই শিশু কন্যাকে নিয়ে ভাগীরথীর জলে ঝাঁপ দিলেন মা। স্থানীয় এক যুবক তাদের ভেসে যেতে দেখে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে ছোট্ট শিশুটিকে উদ্ধার করতে পারলেও তার দিদিকে উদ্ধার করা যায় নি। তবে আধ ঘন্টার মধ্যে জল থেকে মিলেছে মা’য়ের নিথর দেহ।

জঙ্গিপুর গাড়িঘাট এলাকায় শনিবার বেলা সওয়া দশটা নাগাদ এই ঘটনায় হতবাক গোটা শহর। কেন ঝাঁপ দিলেন মহিলা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশের কাছেও এ নিয়ে কোনও অভিযোগ করেনি কেউ।

মৃত মহিলার নাম শিউলি দাস (৩৫)। পূজা দাস (৬) নামে শিশু কন্যার এখনও খোঁজ মেলেনি। উদ্ধার হওয়া শিশু কন্যা সৌমী দাসকে (৪) জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। মহিলার বাড়ি লালগোলার সাহাবাদ গ্রামে। একই গ্রামে তাঁর বাপের বাড়ি। গ্রামেরই অন্যপাড়ায় শ্বশুরবাড়ি তাঁর। বছর পনেরো আগে বিয়ে হয় চৈতন্য দাসের সঙ্গে। তাদের তিন মেয়ে। সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী বছর বারো বয়সের বড় মেয়ে চৈতালি দাস অবশ্য সাহাবাদে মামার বাড়িতেই রয়েছে।

গোটা ঘটনায় হতচকিত মৃত মহিলার বাবা,মা-ও। মা অঞ্জনা দাস বলেন, ‘‘জামাই ছাড়া শ্বশুরবাড়িতে কেউ থাকে না। দিন কুড়ি ধরে জামাই কলকাতায় রাজমিস্ত্রির কাজে রয়েছে। তাদের মধ্যেও কোনও সমস্যাও ছিল না। তা সত্বেও কেন এই ঘটনা কিছুই বুঝতে পারছি না।’’

বাড়িতে শিউলির বাবা অসুস্থ ও ছোট বোন রয়েছে। বোনের সদ্য সন্তান হয়েছে। সেই কারণেই তাদের দেখাশুনোর জন্য বাবার বাড়িতেই ক’দিন ধরে থাকছিল শিউলি।

মা বলছেন, “ হঠাৎই বেলা ১১টা নাগাদ ফোনে জানতে পারি দুর্ঘটনার কথা। কিন্তু কেন এই ঘটনা ঘটাল মেয়ে তার কিছুই বুঝতে পারছি না।”

মেজ বোন প্রিয়া কর্মকার দুর্ঘটনার কথা শুনেই ছুটে এসেছেন জঙ্গিপুর হাসপাতালে। প্রিয়া বলেন, “আমাদের এক আত্মীয়ের বিয়ে ছিল চুনাখালিতে। রবিবার থেকে আমি ও দিদি একসঙ্গেই ছিলাম সেখানে। বুধবার রাতে বাবার বাড়ি ফিরে আসে দিদি মেয়েদের নিয়ে। তখনও খুব হাসিখুশিই ছিল দিদি। দু’দিনে কি এমন ঘটল যে এ ভাবে মেয়েদের সঙ্গে নিয়ে জলে ঝাঁপাতে গেল কিছুই কেউ বুঝতে পারছি না।”

জঙ্গিপুর গাড়ি ঘাট এলাকার বাসিন্দারা জানান, ঘাট লাগোয়া পার্কের কাছে দুই শিশু কন্যাকে নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ ধরেই বসে থাকতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। গ্রাম থেকে আসা লোকজন এ ভাবে বসে থাকে ভেবে কারও মনেই তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দেয়নি।

চায়ের এক দোকানদার বলেন, ‘‘হটাৎ দেখি এক শিশুকে কোলে নিয়ে অন্য শিশুটির হাত ধরে সিঁড়ির উপর উঠে দাঁড়িয়ে ভাগীরথীর জলের মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়েন মহিলা। হাত ধরা শিশুটি জলের মধ্যে দূরে ছিটকে পড়ে। কোলের শিশু ও ওই মহিলা পাশাপাশি ভেসে যেতে থাকে নদীর পাড় থেকে দশ ফুট দূর দিয়ে।’’

শ্মশানের পাশে, ঘাটে তখন দাঁড়িয়েছিলেন মুকেশ হরিজন নামে পুরসভার এক সাফাই কর্মী। শিশুটি ভেসে যাওয়ার সময় জলের উপরে হাত ছুঁড়ছে দেখে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি। তিনিই উদ্ধার করেন শিশুটিকে।

Crime জঙ্গিপুর Jangipur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy