গাছ থেকে লিচু পেড়ে খাওয়ায় মানসিক ভারসাম্যহীন বাহাদুর শেখকে বাঁশ দিয়ে পেটানো হয়। রবিবার দুপুরের ওই ঘটনা জানিয়ে ভগবানগোলা থানায় অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ বাগান মালিক টুটুল শেখ-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করে। পরে আদালতের নির্দেশে তাদের জেল হেফাজত হয়।
এ দিকে গত দু’দিন লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পরে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই বালককে নিয়ে যাওয়া হয় বহরমপুর মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। বাহাদুরের দাদা হাজিকুল ইসলাম জানান, এক্সরে করে দেখা গিয়েছে বাহাদুরের বাঁ হাতের আঙুল ভেঙেছে। প্লাস্টার করার কথা বলেছেন চিকিৎসক।
ওই ঘটনার পরে বাহাদুরের পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। অভিযোগ, অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন করে খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। পেশায় ল-ক্লার্ক হাজিকুলের অভিযোগ, বাগান মালিক টুটুল শেখের এলাকায় প্রভাব রয়েছে। বাড়ির বাইরে বের হলেই তার অনুগামীরা সবসময় হুমকি দিচ্ছে। এমনকী জেল থেকে ছাড়া পেয়ে বাইরে এসে তাঁদের খুন করবে বলেও শাসাচ্ছে। ভয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতেও যেতে পারছেন না।
রবিবার দুপুরে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটি লিচু বাগানে ঢুকে বাহাদুর গাছ থেকে লিচু পেড়ে খায় বলে অভিযোগ। তার পরেই বাগান মালিক ওই বালককে ধরে চড়-কিল-ঘুষি মারে বলে অভিযোগ। ওই বালকের দাদা পেশায় ল-ক্লার্ক হজরত আলির দাবি, ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনি দেখেন বাহাদুর সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সেখান থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পরে পড়শি এক ব্যক্তির বাড়িতেও হামলা চালায় টুটুল শেখ ও তার দলবল। ভগবানগোলা থানায় মারধর ও বাড়ি ভাঙচুরের দু’টি পৃথক অভিযোগ জমা পড়ে। তার পরেই পুলিশ টুটুল শেখ ও তার এক সঙ্গী রাঙা শেখকে গ্রেফতার করে।
সোমবার আদালতে হাজির করানো হলে তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজত হয়। কিন্তু ‘জখম’ হয়েছে এমন কোনও কথা কেস ডায়েরিতে যাতে লেখা না থাকে, পুলিশের উপরে ‘প্রভাব’ খাটিয়ে ওই পরিবারের লোকজন সে ব্যাপারে নিশ্চিত করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। হাজিকুলের অভিযোগ, কেস ডায়েরিতে পুলিশ ওই মামলাটিকে লঘু করে দেখানোর চেষ্টা করছে বলেও তিনি জানতে পেরেছেন।
অভিযুক্ত টুটুল শেখের শ্যালক লালগোলা ব্লক তৃণমূল ছাত্রপরিষদ সভাপতি তথা আইনজীবী মইনুল ইসলামের দাবি, ঘটনাটি সত্য নয়। লিচু পাড়াকে কেন্দ্র করে একটা গণ্ডগোল হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু কোনও মারধরের ঘটনা ঘটেনি। টুটুলকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। যদি জখম হয়ে থাকে তাহলে কেস ডায়েরিতে তার কথা তো উল্লেখ করবে পুলিশ। আগামী দিন আদালতে মামলা উঠলেই দেখা যাবে আদৌ জখম হয়েছিল কি না!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy