Advertisement
E-Paper

অভিযোগে বদল, খুনের মামলায় জামিন অধীরের

মোড় ঘুরল জলঙ্গির তৃণমূলকর্মী খুনের মামলায়। যে মামলায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর নাম জড়ানো নিয়ে সম্প্রতি উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি। বুধবার মুর্শিদাবাদ জেলা জজ আদালতে অধীর চৌধুরীর আগাম জামিনের আবেদন নিয়ে শুনানি ছিল। কিন্তু তার আগেই ওই মামলার অভিযোগকারী সাহাবুল শেখ ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে আদালতে লিখিত আবেদন জমা দিলেন, ‘জলঙ্গি থানার বড়বাবু আমাকে চাপ দিয়ে ওই বয়ান লিখিয়েছে।’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৪ ০২:২৭

মোড় ঘুরল জলঙ্গির তৃণমূলকর্মী খুনের মামলায়। যে মামলায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর নাম জড়ানো নিয়ে সম্প্রতি উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি।

বুধবার মুর্শিদাবাদ জেলা জজ আদালতে অধীর চৌধুরীর আগাম জামিনের আবেদন নিয়ে শুনানি ছিল। কিন্তু তার আগেই ওই মামলার অভিযোগকারী সাহাবুল শেখ ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে আদালতে লিখিত আবেদন জমা দিলেন, ‘জলঙ্গি থানার বড়বাবু আমাকে চাপ দিয়ে ওই বয়ান লিখিয়েছে।’ এ দিকে, তদন্ত করেও প্রাথমিক ভাবে অধীর-সহ কংগ্রেসের কয়েকজন নেতা-কর্মীর নাম বাদ দিয়েছে পুলিশ। এই নিয়ে বাদী ও বিবাদী পক্ষের তুমুল উত্তেজনার মধ্যেই এ দিন আগাম জামিন পেয়ে গেলেন অধীর।

ঘটনাপ্রবাহে খুশি অধীর বলেন, “আমার বিরুদ্ধে মামলা তৃণমূলের প্রতিহিংসার ফলসবাই যা জানত। তাই সত্যি হল।” তৃণমূলের অবশ্য দাবি, কংগ্রেস ‘প্রভাব খাটিয়ে’ অভিযোগ প্রত্যাহার করিয়েছে।

প্রথম থেকেই এই মামলায় অধীরের নাম জড়ানোতে আপত্তি জানিয়ে যিনি জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন, সেই তৃণমূল নেতা হুমায়ুন কবীরের সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, “আমি কোনও মন্তব্য করে নতুন ভাবে বিতর্কে জড়াতে চাই না।”

‘বড়বাবু’, জলঙ্গি থানার আইসি সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মোবাইল বন্ধ। ডোমকলের এসডিপিও অরিজিৎ সিংহ বলেন, “খুনের ওই ঘটনার

পরে যখন অভিযোগ নেওয়া হচ্ছিল থানায়, তখন আমি নিজে উপস্থিত ছিলাম। প্রভাব খাটানোর অভিযোগ ঠিক নয়।” পুলিশি তদন্তে কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের নাম বাদ দেওয়া নিয়ে অবশ্য মন্তব্য করতে চাননি অরিজিৎবাবু। মুখে কুলুপ এঁটেছেন তদন্তকারী অফিসার রবি মালাকারও। পুলিশ সুপার ওয়াকার রাজার সতর্ক মন্তব্য, “ভাল করে না জেনে কথা বলা ঠিক হবে না।” তবে, রাজ্য পুলিশের এক কর্তা মেনে নেন, “টাকার খেলাতে যে কেউ অভিযোগ করতে পারে, আবার তা তুলেও নিতে পারে।”

গত ৯ এপ্রিল মুর্শিদাবাদের সীমান্তে জলঙ্গির পরাশপুর চর-এলাকায় খুন হন বাদল শেখ। ওই ঘটনার পরেই তাঁকে দলের সক্রিয় কর্মী দাবি করে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করে তৃণমূল। ঘটনার রাতেই গুরুতর জখম ইন্তিয়াজ

শেখের ভাই সাহাবুল শেখ জলঙ্গি থানায় স্থানীয় কংগ্রেস নেতা-কর্মী-সহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৬টি ধারায় অভিযোগ দায়ের করেন। শেষ নামটি ছিল অধীর চৌধুরীর। এ দিন সেই সাহাবুল আদালতে ‘হলফনামা’ জমা দিয়ে জলঙ্গি থানার ওসি’র বিরুদ্ধে জোর করে এফআইআর-এর বয়ান লেখানোর অভিযোগ করেন।

তা দেখে আদালতে সরকারি আইনজীবী দেবাশিস রায় বলেন, “পুলিশ যদি জোর করে ওই বয়ান লিখিয়েও নেয়, তাহলে তা বলতে এত দিন সময় লাগল কেন? অভিযোগকারীর বক্তব্য বিশ্বাস করার কোনও কারণ নেই।”

পাল্টা অধীরবাবুর আইনজীবী কাঞ্চনলাল মুখোপাধ্যায় বলেন, “লিখিত অভিযোগপত্রটি খতিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে বাদীপক্ষ এখন ঠিক কথা বলছে। অভিযোগপত্রের একেবারে শেষে অধীর চৌধুরীর নাম ঢোকানো হয়েছে, সেখানে ছোট অক্ষরে সরু করে লেখা হয়েছে। টানা লেখার সঙ্গে ওই অংশের মিল নেই।”

দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে অধীরবাবুর আগাম জামিন মঞ্জুর করেন জেলা ও দায়রা বিচারক প্রসেনজিৎ বিশ্বাস। পাঁচ হাজার করে ১০ হাজার টাকা দু’জন জামিনদারের কাছ থেকে আদায় করার শর্তে জামিন হয়। আইনজীবী কাঞ্চনবাবু বলেন, “ভোট প্রচার থেকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে অধীরবাবুর আর কোনও বাধা রইল না।”

সরকারি আইনজীবী দেবাশিস রায় জানান, এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাবেন তাঁরা।

মামলার গতিপ্রকৃতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেন মুর্শিদাবাদ জেলার তৃণমূল নেতৃত্বও। জেলা তৃণমূলের সভাপতি মহম্মদ আলি বলেন, “অধীরবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে নেওয়া হল কেন, সেটা তদন্ত করে দেখা উচিত। অভিযোগকারী ও তাঁর পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল।”

সাহাবুলকে এ দিন বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মোবাইলও বন্ধ ছিল তাঁর। ডোমকলে ওই যুবক ‘আত্মগোপন’ করে রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে তাঁর পরিচিতদের সূত্রে।

adhir murder case
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy