Advertisement
E-Paper

অস্ত্র কারবারের নালিশ, বেলডাঙায় ধৃত ইমাম

বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য কেনাবেচার অভিযোগে মুর্শিদাবাদের এক ইমামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম মৌলনা আনোয়ার খান ওরফে আফসার। মঙ্গলবার রাতে তাঁকে বেলডাঙার হরেকনগর দক্ষিণপাড়া থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে। ধৃত ওই ইমামের সঙ্গে বর্ধমানের খাগড়াগড় কাণ্ডের যোগ রয়েছে কি না সে ব্যাপারে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৪ ০১:১২
ধৃতদের কাছে মিলেছে এই আগ্নেয়াস্ত্র। —নিজস্ব চিত্র।

ধৃতদের কাছে মিলেছে এই আগ্নেয়াস্ত্র। —নিজস্ব চিত্র।

বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য কেনাবেচার অভিযোগে মুর্শিদাবাদের এক ইমামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম মৌলনা আনোয়ার খান ওরফে আফসার। মঙ্গলবার রাতে তাঁকে বেলডাঙার হরেকনগর দক্ষিণপাড়া থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে। ধৃত ওই ইমামের সঙ্গে বর্ধমানের খাগড়াগড় কাণ্ডের যোগ রয়েছে কি না সে ব্যাপারে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক কেনাবেচার ব্যবসায় যুক্ত থাকার ঘটনায় মৌলনা আনোয়ার খান- সহ মোট ৭ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। জেলার পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “ধৃতদের কাছ থেকে ৬টি পাইপগান, ৭.৬২ বোরের ২টি পিস্তল, ২টি মাসকেট, ৪টি ম্যাগাজিন, ১৭ রাউন্ড গুলি এবং ১৪ হাজার জাল টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।” পুলিশ সুপার বলেন, “বর্ধমানের খাগড়াগড়-কাণ্ডের সঙ্গে অস্ত্র কারবারি মৌলনা আনোয়ার খানের যোগাযোগ থাকার সম্ভবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।” পুলিশ সূত্রের খবর, দ্রুত তদন্তের স্বার্থে ধৃত মৌলনার ছবি বুধবার দুপুরেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে রাজ্য পুলিশ ও রাজ্য গোয়েন্দা কর্তাদের কাছে। ধৃত সাত জনকে এ দিন বহরমপুর সিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের চার দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।

৫২ বছর বয়সী মৌলনা আনোয়ার খানের আদি বাড়ি নদিয়ার কোতোয়ালি থানার ছিটকাপোতা গ্রামে। কিন্তু ১৯৯৮ সাল থেকে তিনি থাকেন মুর্শিদাবাদ জেলার রেজিনগর থানার দাদপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার অমরপুর গ্রামে। মৌলনা বলেন, “উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুর মোজাহেদুল মাদ্রাসা থেকে হাফিজ ও মৌলনা ডিগ্রি লাভ করেছি। তারপর ১৯৯৮ সালে জেলার একটি অননুমোদিত মাদ্রাসায় শিক্ষকতার কাজ শুরু করি। ২০১২ সালে ওই মাদ্রাসার শিক্ষকতার কাজ ছেড়ে দিই।” কিন্তু কেন তিনি ওই শিক্ষকতা থেকে অবসর নিলেন সে বিষয়ে খোলসা করে কিছু বলতে চাননি মৌলনা। শিক্ষকতার কাজ ছেড়ে দিলেও একটি মসজিদের ইমাম হিসাবে কাজ চালিয়ে গিয়েছেন বলে তিনি জানান। পুলিশ সুপার বলেন, “মসজিদের ইমাম ও শিক্ষকতার পাশাপাশি ২০০৩ সাল থেকে ধৃত ওই ব্যক্তি আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্যের বেআইনি কারবার চালিয়ে গিয়েছেন।”

প্রসঙ্গত খাগড়াগড় কাণ্ডে মৃত শাকিল আহমেদের ‘বোরখা ঘর’ রয়েছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া বেলডাঙার বড়ুয়া মোড়ে। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, মাস তিনেক আগে খাগড়াগড়ে ডেরা বাঁধার আগে বড়ুয়া মোড়ের ‘বোরখা ঘর’ই ছিল শাকিল আহমেদ, তার স্ত্রী রাজিয়া বিবি, আব্দুল হাকিম ও তার স্ত্রী আমিনা বিবির ডেরা। ওই ডেরা থেকে রেজিনগরের অমরপুর গ্রামের দূরত্ব প্রায় ৫ কিলোমিটার। এ কথা জানিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলা গোয়েন্দা দফতরের এক কর্তা বলেন, “৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উত্তরপ্রান্তে ‘বোরখা ঘর’ থেকে সস্ত্রীক শাকিল ও হাকিম জঙ্গি কার্যকলাপ চালিয়ে গিয়েছে। সেখান থেকে সামান্য দূরের অমরপুর গ্রামে মৌলনা আনোয়ার খান আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্যের বেআইনি কারবার চালিয়ে গিয়েছে। ফলে শাকিলদের সঙ্গে মৌলনা আনোয়ার খানের যোগাযোগ থাকতেও পারে। ওই ব্যক্তিকে জেরা করা হলেই অনেক তথ্য মিলবে।”

মৌলনা ও তাঁর অস্ত্র ব্যবসার হদিস পাওয়া গেল কীভাবে? পুলিশ জানায়, গত ৫ সেপ্টেম্বর রেজিনগর থানা এলাকায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে আসগর শেখ ও আনিসুর শেখ নামের দু’ জনকে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র- সহ পুলিশ গ্রেফতার করে। ধৃত আসগর শেখ এবং আনিসুর শেখের বাড়ি কালিগঞ্জের জুড়ানপুর গ্রামে। পুলিশ সুপার বলেন, “ধৃতরা রেজিনগরের অমরপুর গ্রামের মৌলনা আনোয়ার খানের কাছ থেকে ওই সব আগ্নেয়াস্ত্র কিনেছে বলে জানায়। কিন্তু আসগর ও আনিসুরের ধরা পড়ার খবর পেয়ে মৌলনা গা ঢাকা দেয়।”

মৌলনার বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ মঙ্গলবার রাতেই গ্রেফতার করেছে বাবলু শেখ, আকালি শেখ আতিকুল শেখ ও কাপাসডাঙার বসির আহমেদকে।

arm dealer imam berhampore beldanga
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy