ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় কলেজের সামনে প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির পাশাপাশি বেধড়ক মারধর করা হল। সোমবার নদিয়ার মাজদিয়া সুধীরঞ্জন লাহিড়ী মহাবিদ্যালয়ের সামনে ঘটনাটি ঘটে। সুশান্ত ঘোষ নামে অভিযুক্ত যুবককে এদিনই গ্রেফতার করে পুলিশ। কৃষ্ণগঞ্জের নাঘাটা এলাকার ওই যুবক তৃণমূলকর্মী বলে পরিচিত। তৃণমূলের কৃষ্ণগঞ্জ ব্লক সভাপতি লক্ষণ ঘোষ চৌধুরী বলেন, ‘‘ওই যুবক আমাদের দলের সমর্থক হলেও এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা চাই, আইন আইনের পথেই চলুক।”’
মাজদিয়া কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ছাত্রী গত বছর ছাত্রসংসদ নির্বাচনে টিএমসিপি-র হয়েই দাঁড়িয়েছিলেন। এদিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ কলেজ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। কলেজের গেটের সামনে বেশ কয়েকজনের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছিল সুশান্ত। ছাত্রীর উদ্দেশে সে কটূক্তি করে। তখন ওই ছাত্রী তার প্রতিবাদ করেন। তারপরেই ওই যুবক সকলের সামনে ছাত্রীর চুলের মুঠি ধরে চড় মারতে থাকে বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলেই সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন ওই ছাত্রী। কলেজের অন্য ছাত্র-ছাত্রীরা তাঁকে কৃষ্ণগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে অবশ্য তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে ছুটে যান তাঁর পরিবারের লোকজন। কৃষ্ণগঞ্জ থানায় ওই যুবকের বিরুদ্ধে মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করা হলে পুলিশ ওই যুবককে গ্রেফতার করে। ওই ছাত্রীর বাবা বলেন, “গোটা ঘটনায় আমরা খুব আতঙ্কিত। যেভাবে আমার মেয়েকে সকলের সামনে মারা হল তা কোনও ভাবে ক্ষমা করা যায় না। আমরা চাই ওই যুবকের চরম শাস্তি হোক। এর পরে আমরা আবার মেয়েকে কোন সাহসে কলেজে পাঠাব তা বুঝতে পারছি না।”
ইভটিজিং-এর প্রতিবাদ করায় কলেজের সামনে ওই ছাত্রীকে যে ভাবে হেনস্থা করা হল তাতে ক্ষুব্ধ তাঁর সহপাঠীরাও। প্রশ্ন উঠছে কলেজে নিরাপত্তা নিয়েও। এক ছাত্রী বলেন, “এভাবে প্রতিদিনই কলেজের বাইরে ও ভিতরে ভিড় জমায় বহিরাগতরা। কটূক্তি করা হয় আমাদের। কিন্তু ভয়ে কোনও ছাত্রীই বিশেষ প্রতিবাদ করতে পারে না। এদিন ওই ছাত্রী প্রতিবাদ করায় তাঁকে নির্মম ভাবে মারধরের পাশাপাশি শ্লীলতাহানি করা হল। এরপরে আর কোনও ছাত্রী প্রতিবাদ করার সাহসটুকুও তো পাবে না।” কলেজের অধ্যক্ষ সরোজেন্দ্রনাথ কর বলেন, ‘‘আজকের ঘটনার পরে আমরা রীতিমতো চিন্তিত হয়ে পড়েছি। ছাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয় নিয়েও আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা চাই প্রশাসন কড়া হাতে এটা দমন করুক।” জেলা পুলিশের ডিএসপি (সদর) অভিষেক মজুমদার বলেন, “ইভটিজিং-এর প্রতিবাদ করাতেই ওই ছাত্রীকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। আমরা ওই যুবককে গ্রেফতার করেছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy