ফেরদৌস মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র।
ছ’মাস ভিন্রাজ্যে কাজ। আর বাকি ছ’মাস স্কুল, পড়াশোনা। থানারপাড়ার গমাখালির ফেরদৌস মণ্ডলের সারাবছরের রুটিন এমনটাই। অথচ নতিডাঙ্গা অমিয় স্মৃতি বিদ্যালয়ের ছাত্র ফেরদৌস উচ্চমাধ্যমিকে কলাবিভাগে এবছর ৪০৩ নম্বর পেয়েছে।
পরিবারের কেউই লেখাপড়া জানেন না। অভাবের কারণে সেই অষ্টম শ্রেণি থেকেই নিজের পড়াশোনার খরচ চালাতে রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করতে হত মেধাবী ওই ছাত্রকে। মাধ্যমিকের মতো উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হয়ে যাওয়ার পরেই সে চলে গিয়েছিল কেরলে ওই একই কাজ করতে। সেখানে থাকাকালীন ফোনে তার নিজের রেজাল্টের কথা জানতে পারে সে। বাড়ি ফিরে গত ৫ জুন স্কুলে গিয়ে মার্কশিট সংগ্রহ করে ফেরদৌস বলে, “কৃষ্ণনগর সরকারি মহাবিদ্যালয় কিংবা লালবাগ কলেজে ভূগোল নিয়ে পড়ার ইচ্ছা রয়েছে। পরিবারের অভাবের কথা ভেবেই এতদিন নিজের পড়াশোনার খরচটা কাজ করেই জোগাড় করেছি। তবে কলেজের পড়াশোনার খরচ তো অনেক বেশি। সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতের কথা ভেবে বেশ দুশ্চিন্তা হচ্ছে।” ২০১২ সালে ৫৩৮ পেয়ে মাধ্যমিক পাশ করে বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার ইচ্ছে ছিল ফেরদৌসের। কিন্তু খরচের কথা ভেবে তাকে কলা বিভাগেই ভর্তি হতে হয়েছিল। ফেরদৌসের কথায়, “ভবিষ্যতে শিক্ষক হতে চাই। বাবা মায়ের পাশে দাঁড়ানোই আমার একমাত্র স্বপ্ন।’ বাবা আসাদ আলি মণ্ডল বলেন, “পড়াশোনার সমস্ত খরচ ও নিজেই পরিশ্রম করে রোজগার করেছে। স্কুলের শিক্ষকরাও ওকে খুব সাহায্য করেছে।” স্কুলের ইংরেজি শিক্ষক বিপ্লব ঘোষ বলেন, “ফেরদৌস আমাদের গর্ব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy