গানের মঞ্চে বাবুল। অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।
সুরেও বিঁধলেন বাবুল। এমনকী মঞ্চে উঠে গানের ফাঁকে ফাঁকেও সুযোগ পেলেই তির্যক মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। মঙ্গলবার রঘুনাথগঞ্জে ওই গায়ক সাংসদ এসেছিলেন একটি গানের অনুষ্ঠানে। একটি বেসরকারী সংস্থা ওই অনুষ্ঠানের অয়োজন করেছিল। শহরের রবীন্দ্রভবনে ভিড়ে ঠাসা ওই অনুষ্ঠানে ছিলেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, শ্রীলা মজুমদার-সহ অনেকেই। কিন্তু বাবুলের গানের অনুষ্ঠানকে ঘিরে ছিল দর্শকদের বিপুল উত্সাহ।
অনুষ্ঠান শুরু আগে বাবুল সাংবাদিকদের সঙ্গে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলেন। বাবুল জানান, বহরমপুর ঢোকার আগে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের বেহাল অবস্থা দেখে তিনি হতবাক। বেলডাঙা পার হওয়ার পরেই তিনি দুটো এসএমএস পাঠান ‘অধীরদা’কে (বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী)। বাবুল বলেন, “অধীরদাকে বললাম, রাস্তার ভয়াবহ দুরবস্থার কথা। এই রাস্তা নিয়ে আমি অধীরদার সঙ্গে কথাও বলতে চাই।” বাবুল জানান, তিনি শুনেছেন, ফোর লেন করা হবে সমস্ত রাস্তাটা। কিন্তু সে রাস্তা হচ্ছে না জমির সমস্যার জন্য। জমি পাইয়ে দেওয়ার দায়িত্ব তো রাজ্য সরকারের। তারা যদি সে কাজ না করে তবে তো রাস্তার বেহাল অবস্থা কাটবে না। রাজ্য সরকারকে জমি অধিগ্রহণ নীতি বদলাতে হবে বলেও মনে করেন বাবুল।
বাবুল বলেন, “রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সবকিছুতেই এতটাই অনড় যে তাতে রাজ্যের উন্নয়ন থমকে পড়েছে। বিহারেও এ রাজ্যের থেকে রাস্তার অবস্থা অনেক ভাল।” এ রাজ্যে শুধু দোষারোপের রাজনীতি চলছে বলে বাবুল জানান, সবকিছুতেই রাজনীতি করা অভ্যেসে পরিণত হয়েছে। এটা বন্ধ হওয়া দরকার। তিনি বিশ্বাস করেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিধায়ক, সাংসদ, মন্ত্রী, কাউন্সিলার, যে যেখান থেকেই নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁকে সঙ্গে নিয়েই উন্নয়নের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়া উচিত। বাবুলের কটাক্ষ, “রাস্তার উপর যে ভাবে গর্ত হয়ে রয়েছে তাতে মাছ চাষ করা যাবে। আমি রাস্তার ছবি তুলেছি। দিল্লিতে ফিরে জাতীয় সড়কের কর্তাদের তা দেখাব।” সড়কের এই রকম অবস্থায় কোনও বিনিয়োগকারী আসবে না বলেও মন্তব্য করেন বাবুল। তাঁর মত, কেন্দ্রীয় সরকার নতুন জমি অধিগ্রহণ বিল এনেছে। সংসদে সকলকে বুঝতে হবে জনস্বার্থে ভাল কাজ করতে গেলে জমি লাগবে। দুঃখ হচ্ছে রাজ্য সরকার সেটা বুঝছে না।
এরপরই মঞ্চে উঠে বাবুল ঘণ্টাখানেক মাতিয়ে রাখলেন মঞ্চ। তবে তার মধ্যেও তিনি তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান বুঝিয়ে দিয়েছেন। মঞ্চের সামনের সারিতে বসেছিলেন এক বৃদ্ধ। পরনে সাদা পাজামা, নীল শার্ট। তাই দেখে বাবুল তাঁকে ডাকলেন এবং বললেন, “আপনি তো মশাই ট্যাক্স ফ্রি লোক।” ইঙ্গিত বুঝতে পেরে ততক্ষণে হলভর্তি দর্শকের সঙ্গে সঙ্গে হেসে ফেলেছেন ওই বৃদ্ধও। এরপর কখনও মঞ্চে বসে পড়ে বাবুল ডেকে নিয়েছেন দর্শককে। রবীন্দ্রসঙ্গীত থেকে ‘কহো না প্যার হ্যায়’ বাদ যায়নি কিছুই। এরই মধ্যে কেউ একজন দূর থেকে বললেন, “স্যার, একটা কিশোরের গান হোক।” বাবুল বললেন, “স্যার নয়, দাদা।” সঙ্গে সঙ্গে গোটা হলে আওয়াজ উঠল— ‘বাবুলদা, বাবুলদা...।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy