ভোটদান পর্ব মিটলেও অশান্তির বিরাম নেই। মঙ্গলবার দিনভর খুচরো গোলমাল লেগেই রইল নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলায়।
সোমবার রাতেই মুর্শিদাবাদের কান্দি পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রেসের লোকজনের উপর চড়াও হয়েছিল শাসকদল তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। ওই ঘটনায় দু’জন কংগ্রেস সমর্থক জখম হন। এদিন দুপুরে কংগ্রেসের তিন নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সম্পাদককে তৃণমূলের লোকেরা মারধর করে বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রাজকুমার দাস ঘটনাস্থলে গেলে উভয়পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়। উভয়পক্ষই পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে। কান্দি থানার আইসি কৌশিক ঘোষ বলেন, “ভোট পরবর্তীকালে শহরে বেশ কয়েকটা অশান্তি হয়েছে। আমরা অভিযোগ পেয়েছি। এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।”
মঙ্গলবার সকালে কান্দি থানারই চৈতন্যপুর দক্ষিণপাড়া এলাকায় তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্যের দাদার বাড়িতে বোমা ফাটার খবর পেয়ে পুলিশ তদন্ত করতে গেলে এলাকার তৃণমূল সমর্থকেরা পুলিশের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। প্রায় ঘণ্টা দেড়েক পরে কান্দি থানা থেকে পুলিশের বিশাল বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে।
গোলমাল হয়েছে নদিয়া জেলার বিভিন্ন এলাকাতেও। ভোট মিটতে না মিটতেই বোমা-গুলির শব্দে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে নাকাশিপাড়ার তেঘড়িয়া গ্রাম। সোমবার সন্ধ্যায় ভোটপর্ব সাঙ্গ হতে না হতেই শাসক-বিরোধীদল সংঘর্ষে নেমে পড়ে। এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। সিপিএমের নাকাশিপাড়া জোনাল কমিটির সম্পাদক শান্তি দাসের বক্তব্য, “তৃণমূলই পরাজয়ের আশঙ্কা থেকে আমাদের কর্মীদের উপর চড়াও হয়েছে। আমাদের কর্মী খলিল মণ্ডল গুলি খেয়ে কলকাতার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।’’ তৃণমূল পাল্টা সিপিএমের উপরে অভিযোগ চাপিয়ে দাবি করে, তাদের দুই কর্মী জখম হয়েছে।
এ দিকে, আনন্দবাস গ্রামে সিপিএম-এর এক পোলিং এজেন্টের বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ইনাত বিশ্বাস নামে সিপিএমের ওই পোলিং এজেন্ট তখন বাড়ি ছিলেন না। ইনাত বিশ্বাস বলেন, “ভোট চলাকালীন হুমকি দেওয়া হয়েছিল আমায়। রাতে বাড়ির সামনে বোমাবাজি করে তৃণমূলের লোকেরা। এ দিন আমার বাড়িতে চড়াও হয়ে আমাদের পরিবারের সদস্যদের উপরে হামলা চালিয়েছে ওরা। ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়েছে।” বিরোধী পক্ষের আহত সাহিদুল শেখ বলেন, ‘‘আমরা তৃণমূল করি এটা ঠিক। কিন্তু এদিনের ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। ইনাত বিশ্বাস একটা চিট ফান্ডের এজেন্ট ছিল। আমার দাদা সেখানে টাকা রেখেছিল। এ দিন সেই টাকা আনতে গেলে ওরা আমাদের উপরে চড়াও হয়ে কোপায়।” উভয় পক্ষের আট জন গুরুতর আহত অবস্থায় শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি। কোতোয়ালি থানার আইসি রাজকুমার মালাকার বলেন, ‘‘টাকা পয়সা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে এই গণ্ডগোল। আহতদের শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy