Advertisement
E-Paper

জলুবাবুর বিজয়া সম্মেলনে নেই কল্যাণ

নেহাতই বিজয়া সম্মেলন! কিন্তু সেই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ফের প্রকাশ্যে এল নদিয়ায় বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল। সোমবার কৃষ্ণনগরের এভি হাইস্কুলে দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে বিজয়া সম্মেলনের আয়োজন করেন কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়। সেই অনুষ্ঠানে অনুগামীদের ভিড় উপচে পড়লেও, দেখা মিলল না জেলা কমিটির সভাপতি কল্যাণ নন্দী ও তাঁর অনুগামীদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৪ ০০:৪৪

নেহাতই বিজয়া সম্মেলন! কিন্তু সেই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ফের প্রকাশ্যে এল নদিয়ায় বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল।

সোমবার কৃষ্ণনগরের এভি হাইস্কুলে দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে বিজয়া সম্মেলনের আয়োজন করেন কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়। সেই অনুষ্ঠানে অনুগামীদের ভিড় উপচে পড়লেও, দেখা মিলল না জেলা কমিটির সভাপতি কল্যাণ নন্দী ও তাঁর অনুগামীদের। শুধু তাই নয়, এই অনুষ্ঠানে কল্যাণবাবু ও তাঁর অনুগামীরা আদৌ নিমন্ত্রিত কি না, তা নিয়েও প্রকাশ্য শুরু হয়েছে চাপানউতোর।

নদিয়া জেলা বিজেপির এই গোষ্ঠীকোন্দল এর আগেও একাধিকবার সামনে এসেছে। লোকসভা ভোটে পরাজয়ের পরে সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় ওরফে জলুবাবু সাংবাদিক সম্মেলন করে তাঁর পরাজয়ের জন্য দলের জেলা নেতৃত্বের একাংশের অসহযোগিতার কথা বলে তোপ দেগেছিলেন। তাঁর অনুগামীরা কোনও রাখ-ঢাক না করেই আঙুল তুলেছিলেন জেলা সভাপতি কল্যাণ নন্দীর দিকে। কল্যাণবাবুরা আবার পাল্টা অভিযোগ তুলেছিলেন, জলুবাবু জেলা কমিটিকে অন্ধকারে রেখেই নির্বাচন পরিচালনা করেছেন। আর, সে জন্যই পরাজিত হয়েছেন!

এই দলীয় কোন্দল এখানেই থামেনি। নির্বাচনের পরে জলুবাবু তাঁর নির্বাচন কেন্দ্রের নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য একটি সভা ডাকেন। সেখানেও গড় হাজির ছিলেন কল্যাণবাবু ও তাঁর অনুগামীরা। দলেরই একাংশ বলছেন, এ ভাবেই জেলার ভিতরে নানা অনুষ্ঠানে পাছে তাঁরা মুখোমুখি হয়ে পড়েন, এই ‘ভয়ে’ পরস্পর পরস্পরকে এড়িয়ে গিয়েছেন। আর এটা যেন অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন দলের কর্মী-সমর্থকরাও। এর জেরে নীচু তলার কর্মী-সমর্থকদের মধ্যেও সরাসরি মেরুকরণ হয়ে গিয়েছে বলে তাঁদের দাবি। সম্প্রতি কল্যাণবাবুর পদত্যাগের ইচ্ছা ও পরবর্তী জেলা সভাপতি কে হবেন, তাই নিয়ে দলের অভ্যন্তরে শুরু হয়েছে বিস্তর টানাপড়েন। দু’পক্ষই নিজেদের অনুগামীকে সভাপতি পদে বসাতে উঠেপড়ে লেগেছেন বলে দলীয় কর্মীদের দাবি। সেই মত যুযুধান উভয়পক্ষই নিজেদের মত করে ঘঁুটি সাজাতে শুরু করেছেন।

এই পরিস্থিতিতে কৃষ্ণনগর শহরে জুলুবাবুর বিজয়া সম্মেলনীর আয়োজন, এবং সেই অনুষ্ঠানে কল্যাণবাবুদের উপস্থিত না থাকাটা তাত্‌পর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন দলের সাধারণ কর্মীরা। তাঁদের দাবি, এই সভা আসলে অনুগামীদের নিয়ে ক্ষমতা দেখানোর লড়াই। এ দিনের সম্মিলনীতে দলের কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতই। জলুবাবুর অনুগামীদের দাবি, এ দিন প্রায় দেড় হাজার লোকের ভিড় হয়েছিল। কল্যাণবাবুর অনুগামীদের পাল্টা দাবি, সাধারণ কর্মীরা এলেও জেলার বিভিন্ন স্তরের পদাধিকারীরা অনুপস্থিত ছিলেন সভায়। তাঁদেরই একজন বলেন, ‘‘জেলা কমিটির দু’একজন ওই অনুষ্ঠানে ছিলেন। ব্লক সভাপতিদের মধ্যে কেউ উপস্থিত ছিল কি না, সেটা জিজ্ঞাসা করে দেখুন।”

শহরের মধ্যে বিজয়া সম্মিলনী করলেন দলের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। আর সেই সভায় গেলেন না দলের জেলা সভাপতি। কর্মীদের কাছে ভুল বার্তা যাচ্ছে না কি?

কল্যাণবাবু মন্তব্য করতে রাজি না হলেও তাঁর ঘনিষ্ঠ জেলা বিজেপির মুখপাত্র সৈকত সরকার বলেন, ‘‘এটা জেলা কমিটির কোনও কর্মসূচি নয়। একজনের ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনুষ্ঠান। তা ছাড়া ওই অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য আমাদের কেউ বলেননি। বললে হয়ত যেতেও পারতাম।’’ জলুবাবু এই বিষয়ে বলছেন, ‘‘এখান থেকে জিতে মন্ত্রী হয়েছি। এ বারও এখান থেকে প্রার্থী হয়েছি। তাই দলীয় কর্মীদের বিজয়া ও ঈদের শুভেচ্ছা জানানোটা কর্তব্য বলেই মনে করি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘অনুষ্ঠানে আসার জন্য সবাইকেই আমন্ত্রণ করেছি। তাঁদের মধ্যে কেউ এসেছেন, আবার কেউ বাড়িতে বসে থেকেছেন।” এতে দলীয় কর্মীদের উপরে কোনও প্রভাব পড়বে না বলেই তাঁর অভিমত।

এ দিনের অনুষ্ঠানে মঞ্চের উপরে জলুবাবুর পাশে বসে ছিলেন জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মহাদেব সরকার। তিনি বলেন, ‘‘জলুবাবু সকলকেই আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। যাঁরা আসেননি, তাঁরই বলুক কেন এলেন না! কর্মীরা সব বুঝতে পারছেন।’’ মহাদেববাবুর কথা শুনে পাশ থেকে টিপ্পনি কেটে ওঠেন এক সাধারণ কর্মী। তিনি বলেন, ‘‘জেলায় যখন দলের একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, তখন নেতারা কেন এক ছাতার তলায় এসে লড়াই করছেন না!’’ তাঁদের দবি, এর মূল্য চোকাতে হচ্ছে দলকেই!

kalyan nandi bijoya sammelan conference meeting krishnanagar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy