বাড়ির পথে। —নিজস্ব চিত্র।
রবিবার রাত থেকে টানা বর্ষণ ও ঝাড়খণ্ডের ধেয়ে আসা জলে বন্দি সুতির ১২টি গ্রাম। কোমর জলে ঘেরা ওই সব গ্রামে যাতায়াতের সমস্ত রাস্তাই ডুবে গিয়েছে। সঙ্গে মেঘ ভাঙা বৃষ্টি। সোমবার পরীক্ষা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের কথা ভেবে তা বাতিল করে দেয় বহুতালি হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ। অবস্থা সবচেয়ে খারাপ পারাইপুর, শোভাপুর ও অমরপুরের। নৌকো ছাড়া যাতায়াত করা যাচ্ছে না ওই তিন গ্রামে। বহুতালি ও হারোয়া পঞ্চায়েতের অন্য জলবেষ্টিত গ্রামগুলির মধ্যে রয়েছে নাদাই, সিধোরি, গোপালনগর, হোসেনপুর, লালুপুর, গোকুলনগর, গাইঘাটা, কুসুমগাছি, পাঁচগাছি। জলবন্দি অন্তত ১১ হাজার মানুষ।
পঞ্চায়েত-প্রশাসন অবশ্য হাত গুটিয়েই বসে রয়েছে। দুপুরে সাংবাদিকরা এলাকার পরিস্থিতি দেখে এসে বিডিওকে জানালে প্রধানদের কাছে খবর নিতে শুরু করেন তিনি। পরে বিডিও দীপঙ্কর রায় বলেন, “রাত থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। ঝাড়খণ্ড থেকেও বাঁশলই নালা দিয়ে জল ঢুকছে। এর ফলেই দু’টি পঞ্চায়েতের গ্রামগুলি জলবন্দি হয়ে পড়েছে। পঞ্চায়েত প্রধানদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলা হচ্ছে। যে কোনও বিপর্যয় পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য যথেষ্ট প্রশাসনিক ব্যবস্থা মজুত রয়েছে।”
যেভাবে ধান আর সব্জির জমি জলের তলায়, তাতে চিন্তায় চাষিরা। জল না নামলে চাষে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তাঁরা। জলবেষ্টিত লালুপুরে বাড়ি সুতি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি দিগম্বর মণ্ডলের। তিনি বলেন, “বৃষ্টি এখনও হচ্ছে। জলও বাড়ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় এলাকায় কিছু নৌকো দরকার। কারণ সুযোগ বুঝে বেসরকারি নৌকোগুলো গ্রামবাসীদের পারাপারে চড়া মাশুল দাবি করছে।”
নদাই গ্রামের জয়কুমার মণ্ডল জানান, এই এলাকায় প্রতিবারই পুজোর আগে ঝাড়খণ্ডের ছাড়া জলে বন্যা হয়। আবার দু’দিনের মধ্যে সে জল নেমেও যায় ফিডার ক্যানেলের ভাগীরথী নদী বয়ে। বাঁশলই নদির যে শাখা সিধোরি গ্রামের পাশ দিয়ে গিয়েছে, সেখানে এখন বালি ও পলি জমে নালার জলধারণ ক্ষমতা কমে গিয়েছে। তার ফলে ঝাড়খণ্ডে একটু বৃষ্টিপাত হলেই বাঁশলই নালার উপচে পড়া জলে ভেসে যাচ্ছে সুতির গ্রামগুলি। সুতি ১ ব্লকের বহুতালি পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ কানুপুর-বহুতালি পিচ সড়কের পাশে চারিদিকে শুধু জল আর জল। লালুপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সন্তোষ দত্ত বলেন, “শনিবার পর্যন্ত জল ছিল না কোথাও। হঠাৎ সোমবার দেখি রাস্তা জলের তলায়। জলের মধ্যে দিয়ে বাইক চালাতে গিয়ে বার কয়েক আছাড় খেতে হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy