রত্না ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।
এক ভোটের তলায় আর এক ভোট মোটেই চাপা পড়েনি। দেওয়াল ভাগাভাগি করে প্রচার চলছে রানঘাট লোকসভা আর চাকদহ বিধানসভা উপনির্বাচনের। জোরকদমে ভোটের প্রচারে নেমে পড়েছেন নদিয়ার চাকদহের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী রত্না ঘোষ। কর্মিসভা, বাড়ি-বাড়ি প্রচারের পাশাপাশিই জোর দিচ্ছেন গোষ্ঠীকোন্দল মেটাতে।
গত ২৪ ফেব্রয়ারি সোমবার বিকালে কলকাতার একটি নার্সিংহোমে চাকদহ কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক নরেশচন্দ্র চাকীর মৃত্যু হয়। ঠিক হয়, ওই আসনে উপনির্বাচন হবে আগামী ১২ মে, রাজ্যে পঞ্চম দফা লোকসভা নির্বাচনের দিনে। নরেশবাবুর জায়গায় এ বার তৃণমূলের হয়ে লড়বেন রত্না ঘোষ। পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ রত্না ঘোষ সুবক্তা এবং লড়াকু নেত্রী। এর আগে তিনি ১৯৯৬ সালে হরিণঘাটা বিধানসভায় কংগ্রেসের হয়ে লড়াই করে পরাজিত হয়েছিলেন। জন্মলগ্ন থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে রয়েছেন ওই নেত্রী। বর্তমানে তিনি জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি। এছাড়াও, হরিণঘাটা কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি।
একই দেওয়ালে তৃণমূলের দুই প্রার্থী। বৃহস্পতিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
এমনিতে চাকদহ পুরসভা ছাড়াও এই বিধানসভা এলাকায় রয়েছে আটটি গ্রাম পঞ্চায়েত। সর্বত্রই ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল। ফলে আপাতদৃষ্টিতে তৃণমূলের চিন্তার কোনও কারণ নেই। কিন্তু গত বিধানসভা ভোটের নিরিখে চাকদহে খুব পিছনে নেই সিপিএমও। গতবার হাজার পনেরো ভোটের ব্যবধান এগিয়েছিল তৃণমূল, তা-ও কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে। এ বার কংগ্রেস আলাদা প্রার্থী দেওয়ায় (সমরলাল সিংহ রায় ওরফে খোকন) সে ভোট ভাগ হবে। গত বারের মতো জোরালো পরিবর্তনের হাওয়াও নেই এ বার। প্রার্থী ঠিক করে উঠতে না পারলেও কিছুটা ভোট কাটবে বিজেপি। গত বারের সিপিএম প্রার্থী বিশ্বনাথ গুপ্ত এ বারও ভোটে লড়ছেন দলের হয়ে। তাঁর হয়ে জোরকদমে প্রচার শুরু করে দিয়েছে সিপিএম।
এঁদের টেক্কা দিতে রত্নাদেবী সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছেন নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিরসনে। গত তিন বছরে নরেশবাবু ও পাশের হরিণঘাটার তৃণমূল বিধায়ক নীলিমা নাগের অনুগামীদের মধ্যে গণ্ডগোল বারেবারে প্রকাশ্যে এসেছে। নিজেদের মধ্যে এই দূরত্বটা মেটানোই চ্যালেঞ্জ রত্নাদেবীর। এলাকায় নীলিমাদেবীর ‘কাছের লোক’ বলে পরিচিত তিনি। দলীয় এক কর্মীর কথায়, “রত্নাদি এই কেন্দ্রের প্রার্থী হওয়ার পর যেমন নীলিমা নাগের কাছে গিয়েছেন, তেমনই চাকদহ ব্লক সভাপতি প্রয়াত নরেশবাবুর কাছের লোক বলে পরিচিত নেতাদের কাছেও গিয়েছেন। দীর্ঘ দিনের কোন্দলের প্রভাব এই ভোটে অন্তত পড়বে না।” আর রত্নাদেবী নিজে বলছেন, “কখন কী হয়েছে, তা বলতে পারব না। তবে, আমি প্রার্থী হওয়ার পর সে রকম কিছু আঁচ করতে পারিনি। নীলিমা নাগ, হরপ্রসাদ হালদার, দীলিপ সরকার, দীপক চক্রবর্তী-সহ সকলেই যে কতটা দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছেন, ভাষায় বোঝানো যাবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy