Advertisement
E-Paper

তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল

একশো দিনের কাজের প্রকল্পকে ঘিরে প্রকাশ্যে চলে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। শুক্রবার দুপুরে হাঁসখালি থানার বেতনা-গোবিন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে সকলের সামনেই নিজেদের মধ্য হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন তৃণমূলের প্রধান ও উপপ্রধান। শেষ পর্যন্ত উপ-প্রধান অরবিন্দ বিশ্বাস পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। ঘটনার পরে বিকেলে তিনি ব্লক অফিয়ে গিয়ে তাঁর পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে আসেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৩২

একশো দিনের কাজের প্রকল্পকে ঘিরে প্রকাশ্যে চলে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। শুক্রবার দুপুরে হাঁসখালি থানার বেতনা-গোবিন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে সকলের সামনেই নিজেদের মধ্য হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন তৃণমূলের প্রধান ও উপপ্রধান। শেষ পর্যন্ত উপ-প্রধান অরবিন্দ বিশ্বাস পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

ঘটনার পরে বিকেলে তিনি ব্লক অফিয়ে গিয়ে তাঁর পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে আসেন। অরবিন্দবাবুর পদত্যাগের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন হাঁসখালির বিডিও প্রদ্যুৎ কুমার হালদার। তিনি বলেন, “আমি অফিসে ছিলাম না। তবে উপপ্রধান আমারই এক কর্মীর হাতে তাঁর পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে গিয়েছেন।’’

কিন্তু হঠাৎ কেন অরবিন্দবাবু পদত্যাগ করতে গেলেন তা নিয়ে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের দাবি, পঞ্চায়েত গঠনের সময় থেকেই প্রধান সত্যজিৎ সিকদার ও উপপ্রধান অরবিন্দ বিশ্বাসের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল না। তাঁদের মধ্যেকার এই সম্পর্কের টানাপোড়েন সামাল দিতে মাঝে মধ্যেই জেরবার হতে হয়েছে দলের ব্লক নেতৃত্বকে। প্রায়ই বিবাদ প্রকাশ্যে চলে এসেছে। লোকসভা ভোটের গণনার দিন বিকেলে অরবিন্দবাবুর গ্রাম ভৈরবচন্দ্রপুরে দলীয় কর্মীদের হাতেই খুন হতে হয়েছিল দু’ই তৃণমূল কর্মীকে। তাঁদের পরিবারের লোকের সামনেই পিটিয়ে খুন করা হয়েছিল। নিহত দু’জনেই অরবিন্দবাবুর অনুগামী বলে পরিচিত ছিলেন। এই ঘটনায় তাঁর অনুগামীরা প্রধান সত্যজিৎ সিকদারের দিকে আঙুল তুলেছিলেন। সেই ঘটনার পরে তৃণমূলের জেলা পরিষদের সভাধিপতি বানীকুমার রায় সহ অন্যান্য তৃণমূল নেতারা ঘটনাস্থলে গেলে তাদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। এই খুনের ঘটনার পরে দু’জনের মধ্য দূরত্ব আরও বেড়ে যায় বলে দলেই কর্মীরা জানিয়েছেন। পঞায়েতকর্মীরাই জানিয়েছেন যে ক্রমশ দু’জনের মধ্যে মুখ দেখাদেখিও বন্ধ হয়ে যায়। এরই মধ্য পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের ক্ষেত্রে নানা ভাবে দু’জনের মধ্য মতানৈক্য তৈরি হওয়ায় উন্নয়নে বাধা পড়তে থাকে। অরবিন্দবাবুর বুথে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে শ্রমিকদের টাকা দেওয়ার বিষয়ে সেই দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করে। এদিন অরবিন্দবাবু গ্রামের কয়েকজন মহিলা শ্রমিককে নিয়ে পঞ্চায়েতে আসেন। তাঁরা প্রধানের সঙ্গে টাকা নিয়ে কথা বলতে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে গণ্ডগোল শুরু হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত সেটা দু’জনের মধ্য হাতাহাতিতে পৌঁছে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। অরবিন্দবাবু বলেন, ‘‘আমি পঞ্চায়েতের নানা দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছিলাম। সেই কারণে আমার বুথে প্রায় ন’মাস আগে একশো দিনের কাজ হলেও এখনও পর্যন্ত তার টাকা দেওয়া হয়নি। বরং শ্রমিকরা যাতে টাকা না পায় সব রকম ভাবে তারই চেষ্টা করে এসেছে প্রধান। অথচ গ্রামের মানুষ আমাকেই ভুল বুঝছেন। তাই আমি ওদেরকে সঙ্গে করে পঞ্চায়েতে নিয়ে এসেছিলাম প্রকৃত সত্যটা জানাতে।’’ তাঁর অভিযোগ প্রধান ও তাঁর অনুগামীরা চড়াও হয়ে বাধ্য করেন পদত্যাগ করতে। অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান সতাজিৎ সিকদার বলেন, “যাঁরা কাজ করেছে তাদের আঙুলের ছাপ যদি না মেলে আর তার জন্য যদি তাঁরা টাকা না পান তাহলে কি তার দায় আমার? অথচ উপপ্রধান লোকজন নিয়ে এসে আমার উপরে চড়াও হয়েছেন। সে সময় পঞ্চায়েতে উপস্থিত অনেকেই তাঁকে মারতে গিয়েছিল। বরং আমিই তাঁকে বাঁচিয়েছি।”

ঘটনার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন তৃণমূলের হাঁসখালি ব্লক সভাপতি মন্টু ঘোষ। তিনি বলেন, “ওই বুথে প্রায় ন’মাস আগে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে কাজ হয়েছে। কেউ টাকা পান নি। সবাই উপপ্রধানকে ভুল বুঝছে।”

party clash tmc krishnanagar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy