দাদার কীর্তি কি এবারেও? বুধবার তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হওয়ার পর থেকে এমন প্রশ্নই ভেসে বেড়াচ্ছে কৃষ্ণনগরে। কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী কে হবেন তা নিয়ে বেশ কিছুদিন থেকেই জল্পনা চলছিল। গতবারের সাংসদ তাপস পালকেই প্রার্থী করা হবে কি না সে বিষয়ে একশো শতাংশ নিশ্চিত ছিলেন না তাঁর অনুগামীরাও। কিন্তু সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে তাপসবাবুর নাম ঘোষণা হতেই লোকসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন এলাকায় তাঁর অনুগামীরা উল্লাসে ফেটে পড়েন। গত লোকসভা নির্বাচনে তৎকালীন সাংসদ সিপিএমের জ্যোতির্ময়ী সিকদারকে বড়সড় ব্যাবধানে হারিয়েছিলেন রুপোলি পর্দার এই নায়ক। তাঁর ফ্যানেরা বলছেন‘‘দেখবেন, দাদা এবারেও ভেল্কি দেখাবেন।’’
অন্য দিকে সিপিএমের প্রার্থী শান্তনু ঝা কল্যাণী পুরসভার তিন বারের পুরপ্রধান। বর্তমানে পুরসভার বিরোধী দলনেতা। বামফ্রন্টের কর্মী-সমর্থকরাও আত্মবিশ্বাসী--- ‘এবারে কিন্তু লড়াই হবে সেয়ানে সেয়ানে। বিনা যুদ্ধে এক ইঞ্চিও মাটি ছাড়া হবে না।” প্রসঙ্গত কৃষ্ণনগর লোকসভার তেহট্ট ও পলাশিপাড়া বিধানসভা সিপিএমের দখলে। আবার গত পঞ্চায়েত ভোটে ৭টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে ৫টিই সিপিএমের দখলে। সিপিএমের এই ফলাফলকে অবশ্য আমল দিতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব। জেলা তৃণমূলের সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বলছেন, “সিপিএম আবার কী বলবে! আমাদের দলের সর্বোচ্চ নেত্রীর পছন্দ-অপছন্দের উপরে মানুষ বরাবরই আস্থা রাখেন। এবারেও তার অন্যথা হবে না।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে বলছেন, “কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে গত লোকসভা ভোটের পর থেকে আমাদের ভোট ক্রমশ বাড়ছে। বেশিরভাগ পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের আসন আমাদের দখলে। ফলে কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে আমরা এগিয়ে থেকেই লড়াই করছি।”
অন্য দিকে, রানাঘাট কেন্দ্রের প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে যথেষ্ট চমক রেখেছে সিপিএম ও তৃণমূলদুই দলই। তৃণমূলের গতবারের প্রার্থী সাংসদ সুচারুরঞ্জন হালদার ছিলেন পেশায় চিকিৎসক। এবারেও যিনি তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন তিনিও চিকিৎসক। কল্যাণী জওহরলাল নেহেরু মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক সৌগত বর্মণ ভোটের আঙিনায় একেবারেই আনকোরা মুখ। কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা সৌগতবাবুর নাম ঘোষণার পর এই কেন্দ্রের তৃণমূল কর্মীরা খুশি তো বটেই। তবে অবাক হয়েছেন ঢের বেশি। এলাকার তৃণমূল কর্মীদের বক্তব্য, “প্রার্থী হিসাবে অনেক নামই ঘুরেফিরে শুনতে পাচ্ছিলাম। কিন্তু সৌগতবাবুর নাম ঘোষণা হওয়ার আগে পর্যন্ত তেমন ভাবে শোনা যায়নি।”
তৃণমূলের দুর্গ হিসাবে পরিচিত রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে একটি মাত্র পঞ্চায়েত সমিতি সিপিএমের দখলে। ফলে তৃণমূল এই কেন্দ্রে তাদের জয় নিশ্চিত বলে ধরে নিলেও সিপিএম কিন্তু যথেষ্ট লড়াই দেওয়ার কথাই বলছে। তৃণমূল প্রার্থী ভোটের ময়দানে একেবারে নতুন হলেও সিপিএম প্রার্থী অর্চনা বিশ্বাস তেমনটা নন। ভোটের ময়দানের ভালই অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। গত বিধানসভা ভোটে তিনি রানাঘাট উত্তর-পূর্ব কেন্দ্রে সিপিএমের প্রার্থী ছিলেন। এলাকায় লড়াকু নেত্রী বলে বেশ নামডাকও রয়েছে। তাই এবার ভোটের ময়দানেও যে তিনি লড়াই দেবেন সে কথা বলাই বাহুল্য। রানাঘাট কেন্দ্র নিয়ে সুমিতবাবুর বক্তব্য, “এখানে লড়াই হবে সমানে-সমানে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy