Advertisement
E-Paper

নদিয়া জেলায় বিজেপি-র কলহ প্রকাশ্যে

লোকসভা ভোটের পর থেকে জেলা বিজেপি’র অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব থামার কোনও ইঙ্গিতই মিলছে না। ভোট পর্ব সাঙ্গ হতেই পরাজিত দলীয় প্রার্থী সত্যব্রত মুখোপাধ্যয় ওরফে জুলুূ জেলা সভাপতি কল্যাণ নন্দীর বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছিলেন। ভোটের পর তাঁর ডাকা বিজয়া সম্মেলনীতে রাজ্য নেতৃত্ব হাজির ছিলেন।

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৫ ০১:০৭

লোকসভা ভোটের পর থেকে জেলা বিজেপি’র অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব থামার কোনও ইঙ্গিতই মিলছে না। ভোট পর্ব সাঙ্গ হতেই পরাজিত দলীয় প্রার্থী সত্যব্রত মুখোপাধ্যয় ওরফে জুলুূ জেলা সভাপতি কল্যাণ নন্দীর বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছিলেন। ভোটের পর তাঁর ডাকা বিজয়া সম্মেলনীতে রাজ্য নেতৃত্ব হাজির ছিলেন। কিন্তু সেই সম্মেলনীর পথে পা মাড়াননি কল্যাণবাবু। রবিবার জেলা বিজেপি’র সেই অন্তর্কলহ বেআব্রুভাবে ধরা পড়ল। এ দিন কৃষ্ণগঞ্জের একটি লজে কল্যাণ নন্দীর বিরোধীরা একটি সভা করেন। সভায় হাজির সকলেই জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে কোনও রাখঢাক না রেখেই ক্ষোভ উগরে দেন।

এ দিনের সভায় কল্যাণ নন্দীর বিরোধী গোষ্ঠীর লোক বলে পরিচিত জেলা কমিটির একাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সভায় এসেছিলেন কল্যাণ নন্দীর সরিয়ে দেওয়া একাধিক ব্লক বিজেপির পূর্বতন সভাপতিরা। উপস্থিত নেতাদের সিংহভাগই সদ্য সমাপ্ত কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা ভোটে দলের পরাজয়ের পিছনে কল্যাণ নন্দীকে দায়ী করেন। এছাড়াও তাঁরা রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক করে কল্যাণ নন্দীর বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ারও অভিযোগ করেন।

সভা শেষে সাংবাদিক সম্মেলন করে নিজেকে বিজেপির কৃষাণ মোর্চার রাজ্য কমিটির সহ সভাপতি বলে পরিচয় দিয়ে সুভাষ সরকার বলেন, ‘‘কল্যানবাবুর বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির একাধিক প্রমাণ আমাদের হাতে রয়েছে। উপনির্বাচনে প্রার্থী করার তোপ দিয়ে তিনি অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। গত বিধানসভা ভোটে তিনি দলীয় প্রার্থীদের দু’লক্ষ টাকা দিয়ে আড়াই লক্ষ টাকার ভাউচারে সই করিয়ে নিয়েছেন।’’ যদিও সুভাষবাবু গেল লোকসভা ভোটে রানাঘাট কেন্দ্রে দলীয় প্রার্থী সুপ্রভাত বিশ্বাসের বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়েছিলেন। বিজেপি’র জেলা নেতাদের দাবি, তারপর তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

সুভাষবাবু ছাড়াও এ দিনের সভায় ছিলেন জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মহাদেব সরকার, সম্পাদক মনোজ বিশ্বাস ও সদস্য জগন্নাথ সরকার সহ একাধিক নেতা। মনোজ বিশ্বাসের কাছ থেকে টাকা নিয়েও উপ নির্বাচনে তাঁকে কল্যাণ নন্দী টিকিট দেননি বলে হাজির থাকা নেতাদের একাংশ অভিযোগ করেন। যদিও এ ব্যাপারে মনোজ বিশ্বাস বলেন, “এ ব্যাপারে কিছু বলব না। যা বলার রাজ্য নেতৃত্বকে বলব।” পাশেই হাজির সুভাষবাবু রাজ্য সভাপতিকে এই মর্মে দেওয়া মনোজ বিশ্বাসের চিঠির একটি প্রতিলিপি সাংবাদিকদের হাতে তুলে দেন। কেবল জেলা নেতারাই নন, এ দিন সভায় হাজির একাধিক প্রাক্তন ব্লক সভাপতিও কল্যাণ নন্দীকে নিশানা করেন। তাঁদের দাবি, প্রার্থী নির্বাচনে গলদের জন্যই উপ নির্বাচনে হেরেছে দল। কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকের বিজেপি’র প্রাক্তন সভাপতি রামকুমার রায় বলেন, ‘‘প্রার্থীকে আমাদের দলের লোকই চিনতেন না। সাধারণ মানুষ তাঁকে কী করে চিনবেন? তাছাড়া পুরনো কর্মীদের দূরে সরিয়ে ভোট করা হয়েছিল। তাই সাধারণ মানুষ আমাদের ভোট দেয়নি। ফলে দলের এই ভরাডুবি।” এ দিনের বিক্ষুব্ধ জেলা বিজেপির অচলাবস্থার জন্য রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহকেও দায়ী করে তাঁর পদত্যাগ দাবি করেছেন। উপস্থিত নেতারা দাবি করেন, তাঁদের সঙ্গে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় ওরফে জুলুবাবুর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। জুলুবাবুকে ফোন করা হলে এ ব্যাপারে তিনি বলেন, “আজকের সভার কথা আমি জানি না। তবে জেলা বিজেপি’র অন্দরে যে একটা বিদ্রোহের পরিবেশ তৈরি হচ্ছে, সেটা জানি। ওঁদেরও দাবিকেও সমর্থন করি।’’ কল্যানবাবু বলেন, ‘‘যাঁরা এই সব কথা বলছেন, তাঁরা দলের কেউ নন। দল থেকে তাঁরা বহিষ্কৃত। তাই ওঁদের কথার উত্তর দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই।”

sushmit haldar nadia bjp
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy