মিষ্টির পসরা সাজিয়ে প্রস্তুত ব্যবসায়ীরা। বহরমপুরে তোলা নিজস্ব চিত্র।
রসগোল্লা, সন্দেশ, নিকুতির সঙ্গে অবশ্যই চাই পান্তুয়া।
রানাঘাটে ভাইফোঁটায় মিষ্টির তালিকায় এই পান্তুয়ার চাহিদা রয়েছে আজও। প্রয়াত মিষ্টি ব্যবসায়ী হরিদাস পালের শহরে এই মিষ্টির জুড়ি নেই। অনুষ্ঠান বাড়িতেও কদর রয়েছে। দুর্গাদাস পার্কের বাসিন্দা সঙ্গীত শিল্পী পূর্বাসা ভট্টাচার্যের মত, ‘‘মিষ্টির প্লেটে পান্তুয়া চাইই। নইলে মন ভরে না।’’ আশির্বাদ পর্ব মিটলে এই মিষ্টি ভাইদের প্লেটে তুলে দেন বোনেরা।
প্রায় নব্বই বছর আগে এই শহরে মিষ্টির দোকান করেছিলেন যোগেশ্বর প্রামাণিক ওরফে জগু ময়রা। মিষ্টি ব্যবসায়ী প্রভাত প্রামাণিক জানান, সেই সময় মিষ্টির এক অনির্বচনীয় স্বাদ ছিল। ছানার গুণগত মানের উপরে যে মিষ্টির ভালমন্দ নির্ভর করে, তা কে না জানে। প্রভাতবাবুর মত, এখন সেই ছানার মান আগের চেয়ে খারাপ হয়েছে। তার মধ্যেও পান্তুয়া মানের সঙ্গে আপোস করা হয়নি, জানাচ্ছেন অনেকেই। এক সময় রানাঘাট স্টেশনের আপ প্লাটফর্ম লাগোয়া জিএনপিসি রোডে হরিদাস পাল মিষ্টির দোকান করেছিলেন। তাঁর দোকানে কচুরি, সন্দেশ, দরবেশ, সিঙাড়া এবং পান্তুয়া বিক্রি হত। সবচেয়ে চাহিদা ছিল পান্তুয়ার। প্রায় ৩০ বছর হয়েছে ওই দোকান বন্ধ হয়ে গিয়েছে। শহরের পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ে এখনও বেশ কিছু মিষ্টির দোকান রয়েছে। কয়েক’টি বেশ পুরানো। সব দোকানেই মেলে পান্তুয়া।
মহাপ্রভুপাড়ার বাসিন্দা কেষ্ট অধিকারী জানান, তিনি দেখেছেন হরিদাস পালের দোকানের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে প্রয়াত চিত্রাভিনেতা ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়, রবি ঘোষ থেকে অভিনেত্রী-সাংসদ সন্ধ্যা রায় অনেকেই পান্তুয়া খাচ্ছেন। ‘‘পান্তুয়া যখন ঘি দিয়ে ভাজা হত, বহু দূর থেকে এর গন্ধ পাওয়া যেত’’— বলছেন কেষ্টবাবু। শহরের বাসিন্দা নৌসাদ আলি মনে করেন, হরিদাস পালের পান্তুয়ার জায়গা নিতে পারেনি কেউই। নৌসাদবাবু বলেন, ‘‘পান্তুয়ার দাম বাড়লেও, বাড়েনি গুণমান। আকারেও ছোট হয়ে গিয়েছে।’’
তবে অনেকেই মানছেন, কিছুটা শূন্যতা তৈরি হলেও থেকে গিয়েছে সেই ঐতিহ্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy