তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিলেন রানাঘাটের প্রাক্তন সাংসদ সুচারুরঞ্জন হালদার। রবিবার সন্ধ্যায় নদিয়ার কল্যাণীতে দলের এক সভায় তাঁর হাতে দলের পতাকা তুলে দেন বিজেপি-র জেলা সভাপতি কল্যাণ নন্দী। সুচারুবাবুর সঙ্গেই এ দিন ওই সভায় বিজেপিতে যোগ দিলেন প্রাক্তন আইপিএস অফিসার বাসব তালুকদার। সুচারুবাবুর ছেলে সুস্মিতরঞ্জনও বিজেপিতে যোগ দেন। সুচারুবাবু বলেন, “রাজ্য থেকে বামফ্রন্টকে হঠাতে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু পরে বুঝলাম তৃণমূল একটি অসভ্য দল। তাই বিজেপিতে যোগ দিয়েছি। এমনকী, আমি যদি এখন সাংসদও থাকতাম তা হলেও তৃণমূল ছেড়ে বেরিয়ে আসতাম।”
২০০৯ সালে রানাঘাট লোকসভা আসনে তৃণমূলের হয়ে জেতেন সুচারুবাবু। যদিও গত লোকসভা ভোটে আর টিকিট পাননি। তবে তার পরেও দলের দু’একটি সভায় তাঁকে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি দলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়েছিল বলে তৃণমূলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে। তার পরেই এ দিন তিনি বিজেপি-তে যোগ দিলেন।
এ দিন বিজেপি-র সভায় সুচারুবাবু মুখ্যমন্ত্রীর ছবি আঁকার প্রসঙ্গ তুলে সমালোচনা করেন। প্রাক্তন সাংসদের কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী মোটেও ভাল ছবি আঁকেন না। কোনও ভাবেই সেই ছবির দাম দেড় কোটি টাকার বেশি হতে পারে না।” তিনি আরও বলেন, “কন্যাশ্রী প্রকল্প নিয়ে এখন প্রচুর ঢাকঢোল পেটানো হচ্ছে। কিন্তু আমি জোর দিয়ে বলতে পারি, মধ্যপ্রদেশে মেয়েদের কথা অনেক বেশি ভাবা হয়। সেখানে মেয়েরা অনেক বেশি আর্থিক সুবিধা পায়।”
মাস দুয়েক আগে আইজি (টেলি কমিউনিকেশন) পদ থেকে অবসর নিয়েছেন প্রাক্তন আইপিএস বাসববাবু। তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন কাজ করার অভিজ্ঞতাকে মানুষের উপকারে লাগানোর জন্যই বিজেপিতে যোগ দিয়েছি।” পুলিশের কর্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “পুলিশের কাজ হল আইনকে কার্যকরী করা। বর্তমানে পুলিশ সেটা করতে পারছে না। বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ আক্রান্ত হচ্ছে। যা বেশ উদ্বেগের।”
সুচারুবাবুর বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তের প্রতিক্রিয়া, “দল অযোগ্য বলে মনে করেছিল বলে সুচারুবাবুকে প্রার্থী করেনি।” তাঁর কটাক্ষ, “যোগ্য দলে (বিজেপি) তিনি যোগ দিয়েছেন।” তাঁর দাবি, “সুচারুবাবু লোকসভা তো দূর, পুরসভা ভোটে দাঁড়ালেও জিততে পারবেন না।”
এ দিনই গয়েশপুরে বিজেপি কর্মীদের প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয়। দলের রাজ্য কমিটির মুখপাত্র অশোক সরকার-সহ অন্য নেতা-কর্মীরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। অশোকবাবু বলেন, “রাজ্য সরকার যে ভাবে ঋণ নিচ্ছে তাতে তারা এ ব্যাপারে বামফ্রন্টকেও ছাড়িয়ে যাবে। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার কথাও বলার মতো নয়।” তিনি বলেন, “দলের পরিকাঠামো আরও মজবুত করতে প্রতি ব্লকে ফেসবুক চালু করা হবে। আজকের দিনে এর বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে। দিল্লিতে এই কাজ করেই ঝড় তুলেছিল আপ-এর সাংসদরা।”
দলের রাজ্য সম্পাদিকা দীপা বিশ্বাস বলেন, “শিবিরে যাতে কর্মীরা আসতে না পারেন, সে জন্য তৃণমূলের লোকজন ভয় দেখিয়েছেন।” তৃণমূল অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।