জাল পাশ বই তৈরি করে বৃদ্ধ দম্পতির জমানো টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সোমবার দুপুরে এক পোস্টমাস্টারকে গণধোলাই দিল জনতা।
মুর্শিদাবাদের সুতি থানার দফাহাটের ঘটনা। পরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় নুর সেলিম শেখ নামে ওই ডাককর্মীকে। তাঁর বাড়ি ভগবানগোলায়। নিমতিতা ডাকঘরের অধীনে দফাহাট শাখা ডাকঘরে দীর্ঘ দিন পোস্টমাস্টার পদে ছিলেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দফাহাট গ্রামেরই সুবলচন্দ্র দাস ও তাঁর স্ত্রী শেফালি দাস তিন শতক জমি বিক্রি করে ২০১২ সালের ১ জানুয়ারি দফাহাট ডাকঘরে মাসিক আয় প্রকল্পে ৬৯ হাজার টাকা জমা দেন। পোস্টমাস্টার নুর সেলিম ওই টাকা জমা নিয়ে তাঁদের ডাকঘরের সিলমোহর ও তাঁর নিজের স্বাক্ষর-সহ একটি পাশ বই দেন। সুবলবাবু বলেন, “এরপর থেকে প্রতি মাসে নিয়মিত সুদের টাকা নিয়ে এসেছি ওই পোস্টমাস্টারের কাছ থেকে। মাস দুই আগে তিনি বদলি হয়ে যাওয়ার পর ডাকঘর থেকে মাসিক সুদের টাকা আনতে গিয়ে জানতে পারি পাশ বইয়ের নম্বরটি ভুয়ো। আমাদের নামে কোনও টাকাই জমা নেই ডাকঘরে। পাশেই নিমতিতার বড় ডাকঘরে জানায় এ টাকা জমা করা হয়নি কোনও দিন। গ্রামের লোকজনকে প্রতারণার কথা জানিয়েছিলাম। তাঁরা বারবার নুর সেলিমকে ফোন করে ডাকলেও তিনি আসছিলেন না।”
সোমবার সকালে দফাহাটের কয়েকজন যুবক নিমতিতা স্টেশনে আড্ডা দিচ্ছিলেন। হঠাৎই তাদের নজরে পড়ে ফরাক্কাগামী প্যাসেঞ্জার ট্রেনে বসে রয়েছেন পোস্টমাস্টার নুর সেলিম। তিনি তখন যাচ্ছিলেন অর্জুনপুরে শ্বশুরবাড়িতে। তাঁকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে ট্রেন থেকে নামিয়ে নিয়ে আসা হয় দফাহাট গ্রামের ডাকঘরের সামনে। খবর পেয়ে গ্রামবাসীরা ভিড় করেন। এরপর ডাকঘরের জানলার সঙ্গে নুরকে বেঁধে শুরু হয় মারধর। পুলিশ গিয়ে নুরকে উদ্ধার করে আনে। থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, আরও একটি প্রতারণার অভিযোগ জমা পড়েছে ওই পোস্টমাস্টারের বিরুদ্ধে। পুলিশের দাবি, জেরায় প্রতারণার কথা স্বীকারও করেছেন অভিযুক্ত পোস্টমাস্টার। মুর্শিদাবাদ ডিভিশনের পোস্টাল সুপারিনটেন্ডেন্ট জগন্নাথ বিশ্বাস বলেন, “ওই পোস্টমাস্টারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy