Advertisement
E-Paper

ফেরার পথে মিষ্টি-মুখ, পাঁচ বছর পরে কথা রাখলেন রাহুল

গত লোকসভা নির্বাচনের আগে দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে ভোট প্রচারে এসে বহরমপুর টেক্সটাইল মোড়ের মিষ্টির দোকানে গাড়ি থেকে নেমে ছানাবড়া খেয়েছিলেন কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী। সেই সময়েই ‘বহরমপুরে এলে আবার মিষ্টি খেতে আসব’ বলে দোকানের মালিক অরুণ দাসকে কথাও দিয়ে গিয়েছিলেন। পাঁচ বছরের মাথায় শনিবার ফের লোকসভা ভোটের প্রচারে এসে বহরমপুরের ওই দোকানে রাহুল ঢুকে পড়েন মিষ্টির টানে।

শুভাশিস সৈয়দ

শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৪ ০২:০৬
বাঁ দিকে, জনসভায় রাহুল গাঁধী। ডান দিকে, সভার শেষে রাজীব গাঁধীর কাটআউট নিয়ে চলল কিশোর। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।

বাঁ দিকে, জনসভায় রাহুল গাঁধী। ডান দিকে, সভার শেষে রাজীব গাঁধীর কাটআউট নিয়ে চলল কিশোর। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।

গত লোকসভা নির্বাচনের আগে দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে ভোট প্রচারে এসে বহরমপুর টেক্সটাইল মোড়ের মিষ্টির দোকানে গাড়ি থেকে নেমে ছানাবড়া খেয়েছিলেন কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী। সেই সময়েই ‘বহরমপুরে এলে আবার মিষ্টি খেতে আসব’ বলে দোকানের মালিক অরুণ দাসকে কথাও দিয়ে গিয়েছিলেন। পাঁচ বছরের মাথায় শনিবার ফের লোকসভা ভোটের প্রচারে এসে বহরমপুরের ওই দোকানে রাহুল ঢুকে পড়েন মিষ্টির টানে।

কিন্তু গত বারের তুলনায় এ বারের পরিস্থিতি ছিল সম্পূর্ণ অন্য রকম। গত বার দোকান মালিক অরুণ দাসের কোনও প্রস্তুতি ছিল না। রাহুল গাঁধী যে তাঁর দোকানে নেমে ছানাবড়া খাবেন, তা তাঁর কল্পনার অতীত ছিল। গত বার দোকানের চেয়ার-টেবিলে বসে প্লেটে সাজিয়ে দেওয়া চারটে ছানাবড়া থেকে তিনটে ছানাবড়া খেয়েছিলেন। এ বার অরুণবাবু তাই আগাম প্রস্তুতি নিয়েই রেখেছিলেন। রজনীগন্ধা-গাঁদা ফুল দিয়ে দোকান সাজানো হয়েছিল।

অরুণবাবুর কথায়, “হেলিপ্যাড থেকে সভাস্থল যাওয়ার পথেই আমার দোকান। ভেবেছিলাম, গত বারের দেওয়া প্রতিশ্রুতি মতো তিনি যদি মিষ্টি খেতে গাড়ি থেকে নেমে পড়েন! তাই আগে থেকেই চাঁদির প্লেট-চামচ কিনে এনে রেখেছিলাম। ছিল জলের গ্লাসও।” তাঁর আক্ষেপ, “কিন্তু দোকানে বসিয়ে তাঁকে মিষ্টি খাওয়াতে পারলাম কই? মানুষের ভিড়ে তিনি তো বসতেই পারলেন না। ফলে চাঁদির প্লেট ও চামচে ছানাবড়া খাওয়ানোর ইচ্ছে আমার অপূর্ণ রয়ে গেল। আবার কবে যে আসবেন!”

পাশাপাশি রাহুল গাঁধী ও অধীর চৌধুরী। শনিবার মালদহের সামসিতে বাপি মজুমদারের তোলা ছবি।

বহরমপুরের জনবহুল ও ব্যস্ততম মোড় টেক্সটাইল মোড়। বহরমপুর ব্যারাক স্কোয়ার ময়দানের হেলিপ্যাড থেকে ফ্রেন্ডস ইউনিয়ন ময়দানের সভাস্থল যাওয়ার বাঁকে পড়ে ওই দোকান। অরুণবাবু বলেন, “থিকথিকে মানুষের ভিড়ে এবার শান্তিতে বসে খেতে পারলেন না। কোনও রকমে ১টা লর্ড চমচম ও ১টি ছানাবড়া খেতে পেরেছেন। আমি তাঁকে জলের বোতল এগিয়ে দিই। এক হাতে জলের বোতল ধরে আর অন্য হাতে ১টি ছানাবড়া নিয়ে কোনও রকমে গাড়িতে উঠে চলে যান।”

তবে অরুণবাবুর প্রাপ্তি বলতে, তাঁর জন্য আগাম বানিয়ে রাখা সাড়ে পাঁচ কিলোগ্রাম ওজনের ‘স্পেশাল’ ছানাবড়া এদিন রাহুল গাঁধীর হাতে তুলে দিতে পেরেছেন।

এর গত লোকসভা নির্বাচনে ২০০৯ সালের ২রা মে দলীয় প্রার্থীদের ভোট প্রচারে বহরমপুরে এসেছিলেন রাহুল গাঁধী। যাতায়াতের পথে ওই দোকানের ছানাবড়া খাওয়ানোর ইচ্ছে প্রকাশ করেন তৎকালীন জেলা কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। অরুণবাবু বলেন, “সেই সময়ে ছানাবড়া খেয়ে তাঁর ভাল লেগেছে বলে জানিয়েছিলেন রাহুলবাবু স্বয়ং। ফের বহরমপুরে এলে দোকানে আসারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।”

গত বার রাহুল গাঁধীকে যে প্লেট-চামচ-গ্লাস দেওয়া হয়েছিল। তিনি চলে যাওয়ার পরে দোকানের শো-কেসে ‘স্মৃতি’ হিসেবে তা সাজিয়ে রেখেছেন দোকান মালিক। মিষ্টি খাওয়ার ছবিও বড় করে বাঁধিয়ে রাখা আছে দোকানে। এমনকী অরুণবাবুর পরনে যে জামা ছিল, সেই জামাটিও ধুয়ে-কেচে আলমারিতে রেখে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “রাহুল গাঁধীর মতো ব্যক্তিত্ব আমার পিঠ চাপড়ে ছিলেন। তাই তার পর থেকে ওই জামাটি আর কোনও দিন পরিনি। স্মৃতি হিসেবে রেখে দিয়েছি। জামাতে তাঁর হাতের স্পর্শ লেগে রয়েছে যে।”

এদিনও বহরমপুরের সভা শেষে হেলিপ্যাডে যাওয়ার পথে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধীর গাড়ি টেক্সটাইল মোড়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। গাড়ি থেকে নেমে মিষ্টির দোকানে ঢুকে পড়েন রাহুল গাঁধী। অরুণবাবু বলেন, “তিনি সভাস্থলে যখন গাড়িতে যাচ্ছিলেন, তখনই তাঁর উদ্দেশ্যে গোলাপ ফুলের পাপড়ি ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। আমার দিকে তাকিয়ে হাত নাড়েন। দোকানে এলে তাঁকে ফুলের তোড়া তুলে দেব ভেবেছিলাম, ভিড়ের কারণে তা-ও পারলাম না।”

subhasish saiyad rahul gandhi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy