এক ব্যবসায়ীকে মারধর ও ধারাল অস্ত্র নিয়ে আঘাত করার অভিযোগে তৃণমূলের এক গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের নাম রিপন দাস। তিনি রানাঘাট-১ ব্লকের বারাসাত গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য। বাড়ি ওই পঞ্চায়েতের ফুলিয়া মোড়ে। কয়েকদিন ফেরার থাকার পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরলে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগেও বীরনগর শহরের লাইব্রেরিপাড়ায় এক তৃণমূল-কর্মী ও তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে মারধর করার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার হয়েছিল। সেই ঘটনায় জামিনে রয়েছেন তিনি। বুধবার তাঁকে রানাঘাট মহকুমার আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে চার দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। জেলা পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, “আহত ব্যবসায়ীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৩০ সেপ্টেম্বর দুপুর ১টা নাগাদ রিপন দাস-সহ কয়েকজন যুবক তাহেরপুর বড়বাজারে বিভিন্ন দোকানে দুর্গাপুজার চাঁদা চাইতে যান। অভিযোগ, দাবি মতো চাঁদা না দেওয়ায় সেখানকার কয়েকজন ব্যবসায়ীকে ধরে তাঁরা মারধর করেন। তাঁদের প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়। প্রতিবাদে তাহেরপুর বাজারে রাস্তা অবরোধ করে প্রতিবাদ জানান ব্যবসায়ীরা। অবশেষে চারজনকে গ্রেফতার করা হলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু তাহেরপুর থানায় অভিযোগ জানাতে যাওয়ার সময় থানা সংলগ্ন ফুলিয়া মোড়ে মিঠুন দেবনাথ ওরফে মিটন নামে এক কাপড় ব্যবসায়ীকে বেধড়ক মারধর করেন ওই যুবকেরা। তাঁকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাতও করা হয়। আহত অবস্থায় তাঁকে প্রথমে রানাঘাট মহকুমার হাসপাতালে ও পরে দমদমের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ঘটনার পর থেকে রিপন পলাতক ছিলেন। এ দিন বাড়ি ফেরায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
তাহেরপুর বড়বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বিশ্বজিত দাস বলেন, “আমরাও শুনেছি সেদিনকার ঘটনার মূল অভিযুক্ত রিপন দাসকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।” তিনি আরও বলেন, “চাঁদা আদায়কে ঘিরে যাতে কোনও গণ্ডগোল না হয় তার জন্য পুজোর আগেই এলাকার বিভিন্ন ক্লাবকে নিয়ে আলোচনায় বসেছিলাম। সকলে কথাও দিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও এই ঘটনা ঘটে গেল।”
এ ব্যাপারে মুখে কুলুপ এঁটেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বারাসাত গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান শেফালি বিশ্বাস বলেন, “ঘটনাস্থলে আমি ছিলাম না। তাই এ বিষয়ে কিছু বলব না।” জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বলেন, “আইন আইনের পথে চলবে। দোষী প্রমানিত হলে ওই যুবকের বিরুদ্ধে শাস্তির কথা নিশ্চই ভাবা হবে।” অন্য দিকে, সিপিএমের তাহেরপুর লোকাল কমিটির সম্পাদক রতনরঞ্জন রায় বলেন, “তৃণমূলের নেতাদের প্রশ্রয় পেয়ে ওই সব যুবকের এত বাড়বাড়ন্ত। ওদের প্রশ্রয় পেয়েই নিন্দনীয় ঘটনা ঘটাচ্ছে ওই সব যুবকেরা।”