লরিটিকে তোলা হচ্ছে। ছবি: সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়।
নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সারবোঝাই একটি লরি উল্টে গেলে তার তলায় চাপা পড়ে মারা গিয়েছেন দু’জন। লরির চালক-সহ জখম ১৩ জনকে বেলডাঙা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। তাঁদের মধ্যে ১১ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের নাম খাজারুদ্দিন শেখ (৪৫) ও বাসারুল শেখ (২৬)। তাঁদের দু’জনেরই বাড়ি বেলডাঙার সরুলিয়া গ্রামে। সোমবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর বেলডাঙা ১ ব্লক অফিসের সামনে। ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ জনতা বিডিওর আবাসনে ভাঙচুর চালায়। প্রায় দু’ঘণ্টা জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ থাকে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করলেও যান চলালচল স্বাভাবিক হতে অনেক সময় লেগে যায়। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত থেকে বিডিও অফিসের সামনে জাতীয় সড়কের উপরেই পণ্যবোঝাই একটি লরি দাঁড়িয়েছিল। ব্যাটারির সমস্যা ও লরির টায়ার চুরি হয়ে যাওয়ায় সেখান থেকে লরিটিকে সরানো যায়নি। জাতীয় সড়কের পাশেই রয়েছে লটারি, পান ও চায়ের দোকান। রোজদিন সন্ধ্যায় সেখানে লোকজনের ভিড়ও হয়। সোমবার সন্ধ্যায় বহরমপুরগামী ওই লরিটি দাঁড়িয়ে থাকা লরিটির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আচমকা চায়ের দোকানের উপর উল্টে যায়। সেখানেই ১৫ জন চাপা পড়ে ওই লরির তলায়। এরপরেই আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশ ও দমকলকে। প্রত্যক্ষদর্শী সানারুল শেখ, তরুণ ঘোষ, মহাদেব মণ্ডলরা বলছেন, “হঠাৎ একটা বিকট শব্দ হয়। দেখি একটা লরি চায়ের দোকানের উপর উল্টে গেল। এরপরেই আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে যাই ও পুলিশকে খবর দিই।” অভিযোগ, পুলিশ আসতে অনেক দেরি করায় ক্ষুব্ধ কিছু লোকজন বিডিও অফিসের প্রাচীর টপকে ভিতরে ঢুকে বিডিওর আবাসনে ভাঙচুর চালায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিডিও শুভ্রাংশু মণ্ডল কিছু লোকজনকে নিয়ে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, “ওই অবস্থায় মাথা ঠিক রাখাও কঠিন। আমরা বাইরে থেকে বুঝতে পারছিলাম না কতজন লোক লরির তলায় পড়ে রয়েছে। তাদেরকে বের করারও কোনও উপায় আমাদের ছিল না।” এরপরেই বহরমপুর থেকে একটি ক্রেন নিয়ে এসে লরিটিকে তুলে ওই ১৫ জনকে বের করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় দু’জনের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy