Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

সেতুতে ফাটল, নজর নেই কারও

৪৭ বছরের ডোমকল সেতুর জীর্ণ দশায় আতঙ্কিত এলাকাবাসী। যে কোনও গাড়ি উঠলেই দুলে ওঠে সেতু। নীচে লোহার পাতে ক্ষয় ধরেছে, দিনে দিনে খসে যাচ্ছে ঢালাই। উপরকার নিকাশিনালা বুজে গিয়েছে, ফলে জল নামে সেতুর গা বেয়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেরা চাঁদা তুলে নালা পরিষ্কার করিয়েছেন। অথচ কিছুই জানে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। করিমপুর-বহরমপুর রাজ্য সড়কের উপর ডোমকল সেতুর ভগ্নদশা নিয়ে মহকুমা প্রশাসনের কাছে নাকি কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি।

বিপদের হাতছানি। ছবি: বিশ্বজিৎ রাউত।

বিপদের হাতছানি। ছবি: বিশ্বজিৎ রাউত।

সুজাউদ্দিন
ডোমকল শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৪ ০০:৩৬
Share: Save:

৪৭ বছরের ডোমকল সেতুর জীর্ণ দশায় আতঙ্কিত এলাকাবাসী। যে কোনও গাড়ি উঠলেই দুলে ওঠে সেতু। নীচে লোহার পাতে ক্ষয় ধরেছে, দিনে দিনে খসে যাচ্ছে ঢালাই। উপরকার নিকাশিনালা বুজে গিয়েছে, ফলে জল নামে সেতুর গা বেয়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেরা চাঁদা তুলে নালা পরিষ্কার করিয়েছেন। অথচ কিছুই জানে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। করিমপুর-বহরমপুর রাজ্য সড়কের উপর ডোমকল সেতুর ভগ্নদশা নিয়ে মহকুমা প্রশাসনের কাছে নাকি কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। এমনকী মহকুমা কর্তাদের দাবি তাঁরা ঘটনাটি সম্পর্কে অবগতই ছিলেন না। অভিযোগ বাৎসরিক পরিদর্শনে গিয়ে আধিকারিকরা উপর থেকেই দেখে আসেন। তাই রং করে দেওয়া হয়েছে সেতুর রেলিং। কিন্তু নীচে যে ফাটল ধরেছে, সে খবর কেউ রাখেন না।

১৯৬৭ সালে এই সেতুতে যান চলাচল শুরু হয়। সময়ের প্রয়োজনে বেড়েছে যান চলাচল। বেড়েছে পণ্য পরিবহনও। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ অতিরিক্ত পণ্য পরিবহনের ফলেই ক্রমশ খারাপ হচ্ছে সেতু হাল। এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা এক্রামূল হক বলেন, “২৪ ঘণ্টা ট্রাক উঠছে। ভারী ভারী সেই ট্রাকের দাপট সইতে পারে এমন ক্ষমতা নেই সেতুটির। যান চলাচল বাড়লেও কোনও রকম সংস্কার হয়নি। এক আধবার অবশ্য রং করা হয়েছে বাইরে থেকে। কিন্তু ভিতরে ভিতরে ক্ষয়ে যাচ্ছে লোহার পাত, খসে পড়ছে চাঙড়।”

সরকারী উদাসীনতায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। দিন কয়েক আগে নিজেই উদ্যোগী হয়ে নিকাশিনালা পরিষ্কার করেছেন এলাকার এক যুবক মনিরুজ্জামান মিন্টু বিশ্বাস। স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে চাঁদা তুলে কাজ করেছেন। তিনি বলেন, “বহুদিন ধরে সেতুর বেহাল দশা নিয়ে বিভিন্ন মহলে কথা বলেছি। এলাকার জনপ্রতিনিধিদেরও জানিয়েছিলাম। কিন্তু কেউ কর্ণপাতও করলেন না। তাই নিজেদেরই উদ্যোগী হতে হল। সেতুর নিকাশি নালাগুলো বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অন্য পথে ধীরে ধীরে জল নামে। ফলে ক্রমশ ক্ষয়ে যাচ্ছে সেতু।’’

কিন্তু কর্তাব্যক্তিরা সকলেই বলছেন, তাঁরা বিষয়টি জানতেন না। পিডব্লুডি-র এক সহকারী বাস্তুকারের কথায়, “সব সেতুতেই বাৎসরিক পরিদর্শন হয়। ওই সেতুর বেহাল অবস্থা নিয়ে আমাদের কাছে কোনও খবর নেই।” ডোমকলের মহকুমাশাসক পুষ্পেন্দু মিত্র বলেন “আমাদের কাছে এর আগে কোনও অভিযোগ হয়নি। তবে দ্রুত বিষয়টি নিয়ে পূর্ত দফতর ও পিডব্লিউডির সঙ্গে আলোচনা করা হবে।” জনপ্রতিনিধিরা অবশ্য বিষয়টি জানতেন। কিন্তু এলাকাবাসী লিখিত অভিযোগ না করায় তাঁরা কোনও ব্যবস্থা নিতে পারেননি বলে জানিয়েছেন ডোমকল পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ কংগ্রেসের মোর্জেম হোসেন। এলাকার বিধায়ক সিপিএমের আনিসুর রহমানও বিষয়টি লিখিত ভাবে দফতরের মন্ত্রীকে জানানোর আশ্বাস দেন।

আশ্বাসই সার। এতদিনে তা বুঝে গিয়েছেন এলাকাবাসী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

domkal sujauddin shuja uddin bridge crack
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE