Advertisement
E-Paper

সেতু নেই, চূর্ণী পারে নৌকাই ভরসা মাজদিয়ায়

কংক্রিটের কোনও সেতু নেই। ফলে চূর্ণী পেরোতে রানাঘাটের মাজদিয়ার লোকজনের ভরসা খেয়া। সন্ধ্যা একটু গড়ালেই নৌকা মেলে না আর। তখন রানাঘাট শহরে যেতে মাজদিয়াবাসীকে অতিরিক্ত প্রায় নয় কিলোমিটার পথ উজিয়ে হবিবপুর ঘুরতে হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৪ ০০:৫৫
এ ভাবেই পারাপার।—নিজস্ব চিত্র।

এ ভাবেই পারাপার।—নিজস্ব চিত্র।

কংক্রিটের কোনও সেতু নেই। ফলে চূর্ণী পেরোতে রানাঘাটের মাজদিয়ার লোকজনের ভরসা খেয়া। সন্ধ্যা একটু গড়ালেই নৌকা মেলে না আর। তখন রানাঘাট শহরে যেতে মাজদিয়াবাসীকে অতিরিক্ত প্রায় নয় কিলোমিটার পথ উজিয়ে হবিবপুর ঘুরতে হয়। বর্ষায় জলকাদায় মাখামাখি খেয়াঘাটে যাতায়াত করাও বিরাট সমস্যা। রানাঘাট শহর থেকে এই বিচ্ছিন্নতার যন্ত্রণায় অনেকেই পাকাপাকি মাজদিয়া ছেড়েছেন। গড়েছেন অন্যত্র ঘরবাড়ি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভোটের মুখে ডান-বাম নির্বিশেষে সমস্ত নেতারা সেতু তৈরির গালভরা প্রতিশ্রুতি দেন। ভোট শেষে তা কার্যকর করার ইচ্ছা থাকে না কারও।

মাজদিয়া এলাকার হাজার খানেক বাসিন্দাকে স্কুল-কলেজ-হাসপাতালে আসার জন্য চূর্ণী পেরিয়ে আনুলিয়া হয়ে রানাঘাট শহরে আসতে হয়। সকাল-বিকেল প্রবল ভিড়ের ঠেলা সহ্য করে পড়ুয়ারা স্কুল-কলেজে যায়। নৌকায় মাত্রাতিরিক্ত ভিড়ের জন্য দুর্ঘটনাও ঘটে মাঝেমধ্যেই। আনুলিয়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রাজীব নিয়োগী বলেন, “আমাদের স্কুলে পড়ুয়া সংখ্যা প্রায় ১৭০০। এর মধ্যে কমপক্ষে পাঁচশো জন পড়ুয়া আসে নদীর ওপার থেকে। স্কুল থেকে ফেরার পথে নৌকোয় ভিড় এড়াতে অনেক সময়ই আমরা ক্লাসগুলোকে আগে-পিছু করে ছুটি দিই। অবশ্য সব সময় এটা সম্ভব হয়ে ওঠে না। সেতু হলে সব সমস্যার সমাধান হবে।” স্থানীয় বাসিন্দা সাবদার দফাদারের ক্ষোভ, “রাতবিরেতে কোনও রোগীকে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হলে সমস্যার অন্ত থাকে না। তখন খেয়া চলাচল করে না বলে ঘুরপথে নিয়ে যেতে হয়।”

স্থানীয় বাসিন্দা তপনকুমার রায় এক সময় থাকতেন মাজদিয়া এলাকায়। তিনি বললেন, “যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই খারাপ। রাতবিরেতে হাজার প্রয়োজনেও শহরে আসা যায় না। তাই এখন আনুলিয়াতে চলে এসেছি। আমি নিজের অভিজ্ঞতায় জানি ওপারের লোকজনের কষ্ট কতটা। চূর্ণীর উপর সেতুটা তৈরি হলে এলাকার মানুষগুলো একটু নিশ্চিন্তে দিন কাটাতে পারতেন।” এলাকাবাসীর এত সমস্যা সত্ত্বেও কেন হচ্ছে না সেতু? রানাঘাটের মহকুমাশাসক সুপর্ণকুমার রায়চৌধুরী বলেন, “ওই সেতু তৈরির কথা ছিল হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনারের। যতদূর জানি খানিকটা কাজও এগিয়েছিল। তারপর আচমকা থেমে যায়। বিষয়টি এখন কী অবস্থায় রয়েছে তা খোঁজ নিয়ে দেখব।”

বাম আমলে ওই সেতুর শিলান্যাস করেছিলেন প্রয়াত পরিবহন মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্র্তী। কিন্তু তারপর এখানকার মাটিতে কোদালের একটা কোপও পড়েনি। কেন? প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক অলোককুমার দাস বলেন, “আমরা প্রাথমিক পর্যায়ের বেশ খানিকটা কাজ করেছিলাম। কিন্তু, সরকার বদলের পর আর এগোয়নি কাজ।” সিপিএমের হবিবপুর লোকাল কমিটির সম্পাদক অসিত প্রামাণিকের দাবি, “সেতু তৈরির জন্য মাটি পরীক্ষা করা হয়েছিল। টেন্ডারও ডাকা হয়েছিল। কিন্তু, তারপর আর কোনও কাজ হয়নি। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর সেতু তৈরির ব্যাপারটা ধামাচাপা পড়ে যায়।”

এলাকার বর্তমান বিধায়ক তৃণমূলের আবীররঞ্জন বিশ্বাসের মাপা সাবধানি উত্তর, “সেতু নিয়ে আমরা ভাবনা চিন্তা করব।”

ভাবনা বাস্তবায়িত হওয়ার আশায় দিন কাটছে মাজদিয়াবাসীর।

majdia churni
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy