Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সঞ্চয়ে জোর, চাষিদের লক্ষ্মীর ভাঁড়

মাটির তৈরি সোনালি রঙের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। তার গায়ে লেখা ‘লক্ষ্মী এল ঘরে’। নদিয়ার ধানতলা থানার দত্তফুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের দলুয়াবাড়ি গ্রামে তিন দিনের কৃষি মেলায় সেই লক্ষ্মী ভাণ্ডার দেওয়া হল কৃষকদের। উদ্দেশ্য, কৃষকদের মধ্যে সঞ্চয় বোধ গড়ে তোলা, যাতে তাঁরা ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করতে পারেন সময়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানাঘাট শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৪ ০০:১০
Share: Save:

মাটির তৈরি সোনালি রঙের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। তার গায়ে লেখা ‘লক্ষ্মী এল ঘরে’। নদিয়ার ধানতলা থানার দত্তফুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের দলুয়াবাড়ি গ্রামে তিন দিনের কৃষি মেলায় সেই লক্ষ্মী ভাণ্ডার দেওয়া হল কৃষকদের। উদ্দেশ্য, কৃষকদের মধ্যে সঞ্চয় বোধ গড়ে তোলা, যাতে তাঁরা ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করতে পারেন সময়ে।

নাবার্ডের তৈরি এলাকার ৩১টি ফার্মাস ক্লাবকে নিয়ে গঠিত বিবেকানন্দ ফার্মাস ক্লাব ফেডারেশনের উদ্যোগে এবং দলুয়াবাড়ি বিবেকানন্দ সার্বিক পল্লি উন্নয়ন সমিতির সহযোগিতায় এই কৃষি মেলা শুরু হয় শুক্রবার। একশো জন কৃষকের হাতে কিষান ক্রেডিট কার্ড তুলে দেওয়ার সময় সঙ্গে একটা করে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দেন আয়োজকরা। উদ্যোক্তা পরান সরকার বলেন, “কৃষকদের সঞ্চয়ের মানসিকতা তৈরি করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। বীরনগরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে ঋণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সঞ্চয়ের মাধ্যমে সেই ঋণ যাতে তাঁরা সময় মতো পরিশোধ করতে পারেন, তার জন্যই প্রতীকী হিসাবে ওই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দেওয়া হয়েছে।”

ভাণ্ডার হাতে ধানতলার ভাতভাঙা গ্রামের বাসিন্দা পূর্ণলতা সরকার বলেন, “ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে চাষাবাদ করি। অনেক ক্ষেত্রেই বিভিন্ন কারণে সংসার চালাতে গিয়ে সব টাকা খরচ হয়ে যায়। তখন ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। ঠিক করেছি এই ভাণ্ডারে নিয়মিত টাকা জমিয়ে সময়ে ঋণটা শোধ করে দেব।” আন্দিপুর গ্রামের বাসিন্দা পরেশ সরকার বলেন, “আমি মনে করি ব্যাঙ্কের ঋণ সময় মতো পরিশোধ করা উচিত। তা হলে আগামী দিনে ব্যাঙ্ক থেকে আরও বেশি ঋণ নিতে পারব। এই ভাণ্ডারটা আমাদের সঞ্চয়ের মানসিকতা তৈরি করে দেবে।”

এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে রানাঘাট মহকুমার কৃষি আধিকারিক রঞ্জন রায় চৌধুরী বলেন, “গ্রামীণ ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের ভাবনায় উৎসাহ দেবে এই উদ্যোগ। একবারে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে অনেকেরই সমস্যা হয়। প্রতিদিন সামান্য কিছু করে জমাতে পারলে আর সেই কষ্টটা হবে না।” নার্বাডের জেলা আধিকারিক চঞ্চল মিত্র বলেন, “সঞ্চয় প্রবণতা সামাজিক মর্যাদা বাড়ায়। অর্থনৈতিক পরিবর্তন আনে জীবনে। লক্ষ্মীর ভাঁড় যদি এক জন চাষিরও সঞ্চয় প্রবণতা তৈরি করতে পারে, সেটাই অনেক।”

এ ছাড়াও কৃষকদের সচেতন করার জন্য কৃষ্ণনগরের মাটির পুতুলের মডেল দিয়ে চাষের বিভিন্ন পদ্ধতি বোঝানো হয় কৃষিমেলায়। বিশেষ করে জৈব সার, কেঁচো সার তৈরি, চাষে প্রযুক্তির ব্যাবহার দেখানো হয় মডেলের সাহায্যে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

savings farmer ranaghat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE