Advertisement
E-Paper

হাসপাতালের নথিতে কাটাকাটি, আদালতে মেনে নিলেন সাক্ষী

প্রায় দু’মাস বন্ধ থাকার পরে ফের শুরু হল সজল ঘোষ হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ। বুধবার নবদ্বীপের অতিরিক্ত জেলা এবং সেশন জজ সুধীর কুমারের আদালতে সাক্ষ্য দেন ঘটনার দিন নবদ্বীপ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক বিমল কুমার হোড়।

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৪ ০০:২৭

প্রায় দু’মাস বন্ধ থাকার পরে ফের শুরু হল সজল ঘোষ হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ। বুধবার নবদ্বীপের অতিরিক্ত জেলা এবং সেশন জজ সুধীর কুমারের আদালতে সাক্ষ্য দেন ঘটনার দিন নবদ্বীপ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক বিমল কুমার হোড়।

সাক্ষ্যগ্রহণের শুরুতেই নদিয়ার অতিরিক্ত সরকারি কৌসুঁলি বিকাশকুমার মুখোপাধ্যায় সাক্ষীর কাছে জানতে চান বর্তমানে তিনি কোথায় কাজ করেন। চিকিৎসক বিমলবাবু জানান, তিনি আই সার্জেন এবং নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে কাজ করছেন। পরের প্রশ্ন, সজল ঘোষ হত্যার দিন কোথায় ছিলেন? সাক্ষী বলেন, হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ব্যস্ত ছিলেন তিনি। এরপরে বিকাশবাবু সাক্ষীকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তির রেজিস্ট্রার দেখিয়ে বলেন, ঘটনার দিন হাসপাতালে সৌভিক আইচ, হালিম শেখ এবং সন্তু ভৌমিক ভর্তি হয়েছিলেন। আরও বলেন, ওই রেজিষ্ট্রারের সিরিয়াল অনুযায়ী ৫৫৭ নম্বরে ভর্তি হয়েছিলেন হালিম শেখ, সময় বেলা ১.২৫ মিনিট। ৫৫৮ নম্বরে ভর্তি হয়েছিলেন সৌভিক আইচ, সময় বেলা ১.৩২ মিনিট এবং ৫৫৯ নম্বরে ভর্তি হন সন্তু ভৌমিক, সময় ১.৪৫ মিনিট। তিনজনেই আঘাত নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। সাক্ষী বলেন, হ্যাঁ। পরে সরকারি কৌসুঁলি জানতে চান, রেজিস্ট্রারে ওই তিন রোগীর নাম, ঠিকানা, ভর্তির সময়, আঘাত ইত্যাদি বিষয়ে লেখাগুলি তাঁর কি না। সাক্ষী তাঁর লেখা সনাক্ত করেন। পরে জানান, সে দিন ওই তিনজনকে জরুরি বিভাগে পরীক্ষা করার পরে ভর্তির জন্য ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেন তিনি।

এরপরে জেরা করতে ওঠেন ওই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত প্রদীপ সাহার আইনজীবী প্রতিম সিংহ রায়। তাঁর প্রথম প্রশ্ন ছিল, বিমলবাবু কতদিন ধরে চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত। উত্তরে বিমলবাবু জানান, ১৯৮৫ সাল থেকে। এরপরে তিনি সাক্ষীর কাছে থেকে একে একে জানতে চান সে দিন সৌভিক আইচ ও অন্য আহতদের কে হাসপাতালে এনেছিলেন, তাদের কখন, কীভাবে আঘাত লেগেছিল, জরুরি বিভাগের রেজিস্ট্রারে সে সব লেখা হয়েছিল কি না ইত্যাদি। সাক্ষী জানান, না। পরে প্রতিমবাবু প্রশ্ন করেন, সৌভিক আইচের ‘হিস্ট্রি অফ অ্যাসল্টে’ লেখা হয়েছে তাঁকে তিনজন মিলে মারধর করেছে, অথচ তাঁর ইনজুরি রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে দেহের দু’জায়গায় আঘাতের কথা লেখা রয়েছে। কেন? একজন কে তিনজন মিলে মারলে কমপক্ষে তিনটি আঘাত দেহে থাকার কথা। বিমলবাবু বলেন, ওভাবে বলা সম্ভব নয়। এরপরে প্রতিমবাবু হেমাটোমা নিয়ে জানতে চান। কী কী ভাবে হেমাটোমা হতে পারে, কিংবা কেউ পড়ে গেলেও হেমাটোমা হতে পারে কি না সে প্রশ্ন করেন। সাক্ষী বলেন, হ্যাঁ। এরপর আইনজীবী জানতে চান, আহত সৌভিক আইচ এবং হালিম শেখ কিভাবে জরুরি বিভাগে এসেছিলেন। বিমলবাবু জানান, প্রথম জন হেঁটে এবং দ্বিতীয় জন ট্রলিতে করে এসেছিলেন। এরপর তিনি আহতদের আঘাতের ধরণ নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন করতে থাকেন। তখনই আপত্তি তোলেন সরকারি কৌঁসুলি বিকাশবাবু। তিনি বলেন, প্রশ্নগুলির মামলার সঙ্গে সম্পর্ক নেই। এতে আদালতের সময় নষ্ট হচ্ছে। এরপরেই জেরা শেষ করেন প্রতিমবাবু।

এরপর জেরা করেন সামসুল ইসলাম মোল্লা এবং বিষ্ণুচরণ শীল। বিষ্ণুবাবু জানতে চান, নবদ্বীপ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ডিউটির সময় কিরকম। বিমলকুমার হোড় বলেন, সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টো, ২টো থেকে রাত ৯টা ও ৯টা থেকে পরের দিন সকাল ৮টা। তবে প্রয়োজনে শিফটকে দু’ভাগে ভেঙেও নেওয়া হয়। এরপর বিষ্ণুবাবু সাক্ষীকে দেখান, হাসপাতালের রেজিস্ট্রারে সিরিয়াল ৫৫৯ নম্বরটি কাটাকাটি করা আছে। সাক্ষী বলেন, হ্যা।ঁ আইনজীবী বলেন, সিরিয়ালে ৫৬০ নম্বর রোগী ভর্তি হয়েছেন দুপুর ২.১৬ মিনিটে, অথচ হাতের লেখা সেই একই ব্যক্তির যিনি ২টো বাজার আগেও রেজিস্ট্রারে লিখেছেন। সাক্ষী বলেন, হ্যাঁ। এরপরেই সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়ে যায়।

পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ হওয়ার কথা ৫ জুন।

debashis bandyopadhyay sajal ghosh murder case
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy